নতুন চাপে অর্থনীতি – ইউ এস বাংলা নিউজ




নতুন চাপে অর্থনীতি

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৬:৪৬ 47 ভিউ
অর্থ সংকটের কারণে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় করে চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা দিতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। বিদেশে চামড়া ও তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রণোদনাও আটকে গেছে তহবিল সংকটে। সরকার পরিচালনার জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তার পুরোটাই আসে রাজস্ব খাত থেকে। সেখানে আয় আশানুরূপ নয় উলটো আরও কমেছে। এই সংকটের সময় জুনের আগে মিলছে না আইএমএফের ঋণের কিস্তি। যদিও মার্চে পাওয়ার কথা ছিল। সরকারের আয় সীমিত থাকলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে নতুন করে বাড়তি ব্যয় গুনতে হচ্ছে বিদ্যুৎ, সার, খাদ্য ও এলএনজি খাতের ভর্তুকিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ ও সুদ পরিশোধ ব্যয়ও। সবমিলে অর্থনীতি নতুন করে চাপের মুখে পড়ছে। এ প্রক্রিয়ার

সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ৫ আগস্টের পর দীর্ঘ ১৫ বছর বঞ্চিতদের পদোন্নতি, নিয়োগ বঞ্চিতদের নতুনভাবে নিয়োগ এসব ঘটনায় অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনীতির ভেতরের অবস্থা এতটা ভয়াবহ যা বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। ব্যয় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি জানান, দেশের অর্থনীতি দুই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক সংকট ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক মেরুকরণ। দ্বিতীয় হচ্ছে অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জগুলো শুরু হয় আরও দুই থেকে তিন বছর আগে। এখন অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এটি না হলে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের জীবন

ধারণ কোনোটাই স্বাভাবিক থাকছে না। তিনি আরও বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ কমছে, মুদ্রা বিনিময় হার অনেক বেড়েছে, ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও চলতি হিসাব নেতিবাচক, উচ্চ মূল্যস্ফীতি আছেই। এর মধ্যে জ্বালানি সংকট নিয়েও বড় চ্যালেঞ্জে আছি। সামষ্টিক অর্থনীতিতে এই চাপগুলো আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে। এর বিপরীতে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো সরকারের ভর্তুকি বরাদ্দ কমানো। এ ব্যাপারে আইএমএফের চাপ অব্যাহত আছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর। তবে জনগণের স্বার্থে এ চাপ মানতে নারাজ বর্তমান সরকার। সংস্থাটির চাপ উপেক্ষা করে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ৩৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভর্তুকি

খাতে। অর্থবছরের শুরুতে ১ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে তা প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই। এর মধ্যে কৃষি খাতের ভর্তুকি ১৭ হাজার ১৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে ২৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুতের ভর্তুকি ৪০ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ হাজার কোটি টাকা, খাদ্য ভর্তুকি পাঁচ হাজার ২৬২ কোটি টাকা থেকে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং এলএনজি আমদানিতে ৫০০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাজেটের নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কৃষি ভর্তুকি ১০ হাজার ৭৩৯ কোটি টাকা, বিদ্যুতে ২২ হাজার কোটি টাকা, খাদ্যে ২

হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা এবং এলএনজিতে বরাদ্দ বেড়েছে ৫০০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের মতে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হচ্ছে ডলারে। এ খাতে ভর্তুকি দেওয়া না হলে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে লোকসান সমন্বয় করতে হবে। এতে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির সুযোগ তৈরির শঙ্কা থাকে। তবে সরকারের এই মুহূর্তে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই। একই ভাবে কৃষি খাতের ভর্তুকির বড় অংশ ব্যয় হয় সার আমদানিতে। এখানে ভর্তুকি না দিলে সারের মূল্য বেড়ে খাদ্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। এটি ঘটলে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে এ খাতেও ভর্তুকি বাড়িয়েছে সরকার। একইভাবে নিম্ন আয়ের মানুষের

জন্য ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচিতে স্বল্পমূল্যে পণ্যসামগ্রী বিতরণ করতে গিয়ে ভর্তুকি বাড়াতে হচ্ছে। এদিকে সুষ্ঠু ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে সংশোধিত বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ বাড়ানো হয়। ফলে এ খাতে মোট ভর্তুকি দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এলএনজি খাতে বরাদ্দ ভর্তুকি ছয় হাজার কোটি টাকার বাইরে অতিরিক্ত আরও ১০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের মতে, জনস্বার্থে ব্যাঘাত ঘটবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলোতে ভর্তুকি বাড়ানো হচ্ছে। এখানে আইএমএফের শর্ত প্রাধান্য পাচ্ছে না। ভর্তুকি ছাড়া বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে।

কারণ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থেকে প্রথম ৬ মাসে ৬৪ শতাংশ ব্যয় হয়ে গেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা হয় ১৯৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় ২৩ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে আসল ১৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা এবং সুদ আট হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। যদিও চলতি বাজেটে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রথম ৬ মাসে ১৮ হাজার ২৫০ কোটি টাকা এ খাতে ব্যয় হওয়ার কথা। প্রকৃত পক্ষে ওই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে। এদিকে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। ব্যবসা-বাণিজ্য পুরোদমে চালু হয়নি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায়ও কমছে। সাধারণত সরকার আয় করে ব্যয় করবে। কিন্তু দেশের বিদ্যমান অবস্থায় আয় কমার পাশাপাশি ভর্তুকি ও বৈদেশিক ঋণ, সুদ পরিশোধে বেশি ব্যয় হচ্ছে। যে কারণে অর্থনীতিতে বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এনবিআরের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৮ হাজার কোটি টাকা, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সিরিয়াকে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান ট্রাম্পের আইএমএফের ১০০ কোটি ডলার ঋণ পেল পাকিস্তান ঈদুল আজহায় বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি ১৬ মে শুরু কাকরাইল না ছাড়ার ঘোষণা জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভারতের হামলায় পাকিস্তানের ১৩ সেনা নিহত সহযোদ্ধার ওপর হামলা, ছেলেকে পুলিশে দিলেন বিএনপি নেতা ইমরান খানকে কারামুক্ত করতে ট্রাম্পের সাহায্য চান দুই পুত্র সিলেটে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা নবীগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যানের, অতঃপর… কর্নেল সোফিয়াকে কটাক্ষ করে বিপাকে বিজেপি মন্ত্রী ‘আপনি রাতে ঘুমান কিভাবে?’ সৌদি যুবরাজকে ট্রাম্পের প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্র চায় সরাসরি আলোচনা, ক্ষুব্ধ ভারত, রাজি পাকিস্তান জুনে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ নার্সিং কলেজ শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ যমুনা অভিমুখী লংমার্চে টিয়ারগ্যাস-লাঠিচার্জ, আহত অর্ধশতাধিক ছাত্রদলের উত্তেজিত নেতাকর্মীদের সামনে ঢাবি ভিসি, ‘মার বেটা আমাকে, মার’ ‘ছোট থেকেই আমি খুব খেলতে চাইতাম’ সাউণ্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাসে ছত্রভঙ্গ জবি শিক্ষার্থীদের লংমার্চ শেষবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্য চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, নিন্দা ও প্রতিবাদ মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথ দাবি, নগর ভবনে বিক্ষোভ