ধান ও চাল সংগ্রহে চ্যালেঞ্জে সরকার
চলতি মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহে চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে সরকার। ২ মাসের বেশি সময় চলে গেলেও এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও সংগ্রহ হয়নি। বাজারে চালের দাম বেশি হওয়ায় মিলাররা (মিল মালিক) সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল দিচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য যাচাই না করে উপর থেকে জোর করে ধান ও চালের দর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে সংগ্রহ অভিযানে সফল হওয়া বেশ কঠিন হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চাল সংগ্রহ নিবিড়ভাবে তদারকি করা হচ্ছে। আর পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই সরকারিভাবে ৬ লাখ টন এবং বেসরকারিভাবে ১৬ লাখ টন অর্থাৎ মোট ২২ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ
নেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলবে। আশা করছি এ সময়ের মধ্যে টার্গেট মোতাবেক সংগ্রহ চূড়ান্ত হবে। সংগ্রহ অভিযান নিবিড়ভাবে তদারকি করা হচ্ছে, আশা করি মিলাররা চুক্তি মোতাবেক অথবা তার চেয়েও বেশি চাল দেবে। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রচুর পরিমাণে চাল আমদানি করছে। চলতি মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল পরিমাণে চাল এসে পৌঁছাবে। উপদেষ্টা আরও বলেন, গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা আগামী সপ্তাহ থেকে উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস কার্যক্রম শুরু করব। ফলে চালের দাম কিছুটা হলেও কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, আমন সংগ্রহে একটু সময় লাগে।
কারণ এ সময় ধান ও চাল মানুষ ধরে রাখার সুযোগ পায়। আশা করি সমস্যা হবে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে জি টু জি (সরকার-টু-সরকার) প্রক্রিয়ায় আমদানির বিষয়ে কথা হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে এক লাখ টন আনার চুক্তি হয়েছে। আর পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো হাস্কিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ বলেন, সংগঠনের তরফ থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করে ধান ও চালের দর নির্ধারণে সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাদের কথা ও প্রস্তাব আমলে না নিয়ে সিদ্ধ চালের দাম প্রতি কেজি ৪৭ টাকা, আতপ চালের দাম প্রতি কেজি ৪৬ টাকা
এবং ধানের দাম প্রতি কেজি ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। আতপ চালের দাম আরও বেশি। বেশি দামে কিনে লোকসান দিয়ে সরকারকে ধান ও চাল কে দেবে। ব্যবসায়ীরা তো ব্যাংক ঋণ নিয়ে লাভের আশায় বাণিজ্য করে। এখন খাদ্য বিভাগ থেকে অনেক মিলারের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। দাম সমন্বয় না করে এখন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনও সরকারের সঙ্গে ওয়াদা রক্ষা করছি। সব ব্যবসায়ী তো ওয়াদা রক্ষা করতে পারবেস না। কারণ তারা খুদে ব্যবসায়ী। সরকারকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাজারে চালের দাম
বেশি থাকায় মিলাররা সরকারকে চাল দিতে চাইছে না এখন করণীয় কি-এমন প্রশ্নে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক বলেন, চালের দাম আমি নির্ধারণ করিনি। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি (এফপিএমসি) এ পরিকল্পণা করে। কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকের উৎপাদন খরচ নির্ধারণ করে। আর খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য ক্রয় করে। সুতরাং এখন দাম বেশি বললে খাদ্য বিভাগের কিছুই করার নেই। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছর আমন মৌসুমে সরকার ১০ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ লাখ টন সিদ্ধ চাল, এক লাখ টন আতপ চাল এবং সাড়ে তিন লাখ টন ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে সিদ্ধ চাল
সংগ্রহ হয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার টন, আতপ চাল ৩৩ হাজার টন এবং ধান সংগ্রহ হয়েছে ৬ হাজার টন। সময় অর্ধেকের বেশি চলে গেছে এবং সংগ্রহ মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান-চাল আর পাওয়াও যায় না। ফলে সংগ্রহ অভিযান কোথায় গিয়ে ঠেকে তা এখনি বলা বেশ কঠিন বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তারা। সমস্যার মূলে সরকারিভাবে চালের দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন কেউ কেউ। কারণ সরকারি মূল্য বাজারদরের চেয়ে গড়ে প্রায় ৭-৮ টাকা কম। দামের এত বেশি পার্থক্যের কারণে অনেক মিল মালিক সরকারকে চাল দিতে চান না। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত আমন মৌসুমে দেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে।
কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রায় ৮ লাখ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করা অসম্ভব। ফলে নতুন করে সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ চাইছে সরকারকে ল্যাং মারতে। তারা চায় এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে যাতে সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে চাল না পেয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরে আসুক। সরকারকে তারা ব্যর্থ প্রমাণে মরিয়া। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। জানা গেছে, সরকারিভাবে ভারত থেকে ‘জি টু জি’ প্রক্রিয়ায় ২ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। ভারত থেকে এক লাখ টন চাল উন্মুক্ত দরপত্রে কেনা হচ্ছে। মিয়ানমার, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানির চেষ্টা চলছে। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, খাদ্য সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। সরকার দেশের হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করে। এছাড়া সরকার বিভিন্ন বাহিনীর রেশন, ওএমএস, ওএমএস ট্রাক সেল, বিডব্লিউবি, টিসিবি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, ফেয়ারপ্রাইস কর্মসূচির মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নামমাত্র মূল্যে খাদ্যশস্য বিক্রি করে সরকার।
নেওয়া হয়েছে। জানতে চাইলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ পর্যন্ত সংগ্রহ অভিযান চলবে। আশা করছি এ সময়ের মধ্যে টার্গেট মোতাবেক সংগ্রহ চূড়ান্ত হবে। সংগ্রহ অভিযান নিবিড়ভাবে তদারকি করা হচ্ছে, আশা করি মিলাররা চুক্তি মোতাবেক অথবা তার চেয়েও বেশি চাল দেবে। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রচুর পরিমাণে চাল আমদানি করছে। চলতি মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিপুল পরিমাণে চাল এসে পৌঁছাবে। উপদেষ্টা আরও বলেন, গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে আমরা আগামী সপ্তাহ থেকে উপজেলা পর্যায়ে ওএমএস কার্যক্রম শুরু করব। ফলে চালের দাম কিছুটা হলেও কমে আসবে। তিনি আরও বলেন, আমন সংগ্রহে একটু সময় লাগে।
কারণ এ সময় ধান ও চাল মানুষ ধরে রাখার সুযোগ পায়। আশা করি সমস্যা হবে না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জানান, মিয়ানমার ও পাকিস্তান থেকে জি টু জি (সরকার-টু-সরকার) প্রক্রিয়ায় আমদানির বিষয়ে কথা হয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে এক লাখ টন আনার চুক্তি হয়েছে। আর পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা চলছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ অটো হাস্কিং মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুর রশিদ বলেন, সংগঠনের তরফ থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার যাচাই করে ধান ও চালের দর নির্ধারণে সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাদের কথা ও প্রস্তাব আমলে না নিয়ে সিদ্ধ চালের দাম প্রতি কেজি ৪৭ টাকা, আতপ চালের দাম প্রতি কেজি ৪৬ টাকা
এবং ধানের দাম প্রতি কেজি ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। আতপ চালের দাম আরও বেশি। বেশি দামে কিনে লোকসান দিয়ে সরকারকে ধান ও চাল কে দেবে। ব্যবসায়ীরা তো ব্যাংক ঋণ নিয়ে লাভের আশায় বাণিজ্য করে। এখন খাদ্য বিভাগ থেকে অনেক মিলারের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। দাম সমন্বয় না করে এখন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনও সরকারের সঙ্গে ওয়াদা রক্ষা করছি। সব ব্যবসায়ী তো ওয়াদা রক্ষা করতে পারবেস না। কারণ তারা খুদে ব্যবসায়ী। সরকারকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাজারে চালের দাম
বেশি থাকায় মিলাররা সরকারকে চাল দিতে চাইছে না এখন করণীয় কি-এমন প্রশ্নে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক বলেন, চালের দাম আমি নির্ধারণ করিনি। খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি (এফপিএমসি) এ পরিকল্পণা করে। কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকের উৎপাদন খরচ নির্ধারণ করে। আর খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্য ক্রয় করে। সুতরাং এখন দাম বেশি বললে খাদ্য বিভাগের কিছুই করার নেই। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছর আমন মৌসুমে সরকার ১০ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ লাখ টন সিদ্ধ চাল, এক লাখ টন আতপ চাল এবং সাড়ে তিন লাখ টন ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে। ইতোমধ্যে সিদ্ধ চাল
সংগ্রহ হয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার টন, আতপ চাল ৩৩ হাজার টন এবং ধান সংগ্রহ হয়েছে ৬ হাজার টন। সময় অর্ধেকের বেশি চলে গেছে এবং সংগ্রহ মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান-চাল আর পাওয়াও যায় না। ফলে সংগ্রহ অভিযান কোথায় গিয়ে ঠেকে তা এখনি বলা বেশ কঠিন বলে মন্তব্য করেন সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তারা। সমস্যার মূলে সরকারিভাবে চালের দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন কেউ কেউ। কারণ সরকারি মূল্য বাজারদরের চেয়ে গড়ে প্রায় ৭-৮ টাকা কম। দামের এত বেশি পার্থক্যের কারণে অনেক মিল মালিক সরকারকে চাল দিতে চান না। খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত আমন মৌসুমে দেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে।
কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রায় ৮ লাখ টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে। এই ঘাটতি পূরণ করা অসম্ভব। ফলে নতুন করে সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ চাইছে সরকারকে ল্যাং মারতে। তারা চায় এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে যাতে সাধারণ মানুষ বাজারে গিয়ে চাল না পেয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরে আসুক। সরকারকে তারা ব্যর্থ প্রমাণে মরিয়া। কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত বেসরকারি পর্যায়ে ১৬ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। জানা গেছে, সরকারিভাবে ভারত থেকে ‘জি টু জি’ প্রক্রিয়ায় ২ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হয়েছে। ভারত থেকে এক লাখ টন চাল উন্মুক্ত দরপত্রে কেনা হচ্ছে। মিয়ানমার, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানির চেষ্টা চলছে। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, খাদ্য সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। সরকার দেশের হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করে। এছাড়া সরকার বিভিন্ন বাহিনীর রেশন, ওএমএস, ওএমএস ট্রাক সেল, বিডব্লিউবি, টিসিবি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, ফেয়ারপ্রাইস কর্মসূচির মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নামমাত্র মূল্যে খাদ্যশস্য বিক্রি করে সরকার।