ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর
আরাফাত: বিএনপি স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেনি, আওয়ামী লীগের আমলে সকল নির্বাচন ছিল অন্তর্ভুক্তিমূলক
অর্থনীতিতে বহুমাত্রিক চাপ: ভেঙে পড়ছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, চোখে অন্ধকার সাধারণ মানুষের
নাসিকের প্রশাসকের গুরুদায়িত্বে প্রেস সচিবের ছোট ভাই!
জুলাই-মামলার আসামি ইরেশ যাকের: বিদেশে পালানো এবং মামলা থেকে অব্যাহতি, নেপথ্যে প্রভাব ও অর্থের খেলা
আইডিএমসি ও আইওএম: আন্দোলনের নামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সহিংসতা, বাড়িছাড়া লাখো নেতাকর্মী
ডিপি ওয়ার্ল্ড দায়িত্ব নেয়ার আগেই বন্দরে কন্টেইনারের হ্যান্ডলিং চার্জ বাড়লো প্রায় ২৩ হাজার টাকা
আওয়ামী লীগ নেতা লিটনের ব্যবসা-টেন্ডারে ভাগ চান এনসিপি নেত্রী মিশমা, ফোনালাপ ফাঁস
চাহিদার ধারাবাহিক পতনে বন্ধপ্রায় উৎপাদন, সিমেন্ট কারখানায় ৭০% কর্মী ঘাটতি
বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্প অভূতপূর্ব সংকটে পড়েছে। অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা, চাহিদার ধারাবাহিক পতন ও আর্থিক ব্যয়ের চাপে খাতটির অধিকাংশ কারখানা এখন টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই ৩০ শতাংশেরও কম উৎপাদন সক্ষমতায় চলছে, অনেক কারখানায় কর্মী সংকট ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে অবিক্রিত সিমেন্টের স্তূপ জমে আছে। দাম কমছে, কিন্তু বিক্রি বাড়ছে না। ফলে একদিকে রাজস্ব কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংকঋণ ও কাঁচামালের বাড়তি ব্যয়ে উৎপাদকরা মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়েছেন।
গত এক দশকে মেগা প্রকল্প ও অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সম্ভাবনাকে ঘিরে এই খাতে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছিল। তাতে বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টন। কিন্তু বাস্তব
চাহিদা এখন তার অর্ধেকেরও কম। ২০২৪ সালে দেশে সিমেন্টের মোট চাহিদা ছিল মাত্র ৩.৮ কোটি টন, আর চলতি বছরে সেটিও আরও কমে গেছে। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) সভাপতি আমিরুল হক বলেন, “করোনার পর আমরা ভেবেছিলাম পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু ২০২৩ সালের পর থেকে নির্মাণকাজে স্থবিরতা এসেছে। সরকারি প্রকল্প বন্ধ থাকায় নগদ প্রবাহে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।” বছরে ৭৩ লাখ টন উৎপাদন সক্ষমতার বসুন্ধরা সিমেন্ট এখন মাত্র ২০ শতাংশ ক্ষমতায় চলছে। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম জাহিদ উদ্দিন বলেন, “বিক্রি কমে যাওয়ায় লোকসান থামাতে জনবল কমাতে হয়েছে। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না।” মীর সিমেন্টের অবস্থা আরও নাজুক। ২০২৩ সালে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ালেও এখন
প্রতিষ্ঠানটি মাত্র এক-চতুর্থাংশ সক্ষমতায় উৎপাদন করছে। এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। পরিস্থিতি না বদলালে উৎপাদন বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।” শিল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, বেঙ্গল সিমেন্ট, আরামিট সিমেন্ট ও মোস্তফা হাকিম সিমেন্ট ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। শীর্ষ উৎপাদক শাহ সিমেন্টও ৫০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ৪০ শতাংশে। ক্রাউন সিমেন্ট জানিয়েছে, তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ৬০ শতাংশ অব্যবহৃত। কেবল মেঘনা গ্রুপের এমজিআই সামান্য ভালো অবস্থায় আছে—৬৫ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে তারাও চাপমুক্ত নয়। বাজারে দামও নেমেছে। ৫০ কেজির এক বস্তা সিমেন্ট এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৭০–৫০০ টাকায়, যা এক বছর আগের চেয়ে ২৫–৩০ টাকা কম। অন্যদিকে ক্লিঙ্কার, জিপসামসহ আমদানিকৃত কাঁচামালের
দাম ও ব্যাংকঋণের সুদ একযোগে বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রয়মূল্য কমে যাওয়ায় ক্ষতির বোঝা দিন দিন ভারী হচ্ছে। বিসিএমএর নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শহীদুল্লাহ বলেন, “৪৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ এসেছে ব্যাংকঋণ থেকে। আয় কমছে, কিন্তু ঋণের কিস্তি ও সুদের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বেতন পরিশোধও নিয়মিত করতে পারছে না।” এই শিল্পে সরাসরি ৭–৮ লাখ এবং পরোক্ষভাবে আরও প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। উৎপাদন বন্ধ বা সীমিত হওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় সচল করা এবং কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি সংকটে
থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য স্বল্পসুদে আর্থিক সহায়তা না মিললে আরও কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বিসিএমএ সভাপতি আমিরুল হক বলেন, “প্রকল্পের অর্থায়ন ও ঋণপ্রাপ্তি সহজ না হলে সিমেন্ট শিল্পে খেলাপি ঋণ ও কারখানা বন্ধের ঢেউ শুরু হবে।” তিনি যোগ করেন, “বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে সিমেন্টের চাহিদা টেকসই, কিন্তু এখনকার সংকট না কাটলে অনেক প্রতিষ্ঠান সেই সময় পর্যন্ত টিকতে পারবে না।” বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্প এখন এমন এক দুঃসময়ে আছে, যেখানে উৎপাদনের চাকা ঘুরছে অল্পে, শ্রমিকরা অনিশ্চয়তায়, আর উদ্যোক্তারা দিন গুণছেন টিকে থাকার আশায়।
চাহিদা এখন তার অর্ধেকেরও কম। ২০২৪ সালে দেশে সিমেন্টের মোট চাহিদা ছিল মাত্র ৩.৮ কোটি টন, আর চলতি বছরে সেটিও আরও কমে গেছে। বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) সভাপতি আমিরুল হক বলেন, “করোনার পর আমরা ভেবেছিলাম পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু ২০২৩ সালের পর থেকে নির্মাণকাজে স্থবিরতা এসেছে। সরকারি প্রকল্প বন্ধ থাকায় নগদ প্রবাহে ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে।” বছরে ৭৩ লাখ টন উৎপাদন সক্ষমতার বসুন্ধরা সিমেন্ট এখন মাত্র ২০ শতাংশ ক্ষমতায় চলছে। প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম জাহিদ উদ্দিন বলেন, “বিক্রি কমে যাওয়ায় লোকসান থামাতে জনবল কমাতে হয়েছে। দাম কমিয়েও লাভ হচ্ছে না।” মীর সিমেন্টের অবস্থা আরও নাজুক। ২০২৩ সালে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ালেও এখন
প্রতিষ্ঠানটি মাত্র এক-চতুর্থাংশ সক্ষমতায় উৎপাদন করছে। এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। পরিস্থিতি না বদলালে উৎপাদন বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।” শিল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, বেঙ্গল সিমেন্ট, আরামিট সিমেন্ট ও মোস্তফা হাকিম সিমেন্ট ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। শীর্ষ উৎপাদক শাহ সিমেন্টও ৫০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছে, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ৪০ শতাংশে। ক্রাউন সিমেন্ট জানিয়েছে, তাদের উৎপাদন ক্ষমতার ৬০ শতাংশ অব্যবহৃত। কেবল মেঘনা গ্রুপের এমজিআই সামান্য ভালো অবস্থায় আছে—৬৫ শতাংশ সক্ষমতা ব্যবহৃত হচ্ছে, তবে তারাও চাপমুক্ত নয়। বাজারে দামও নেমেছে। ৫০ কেজির এক বস্তা সিমেন্ট এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৭০–৫০০ টাকায়, যা এক বছর আগের চেয়ে ২৫–৩০ টাকা কম। অন্যদিকে ক্লিঙ্কার, জিপসামসহ আমদানিকৃত কাঁচামালের
দাম ও ব্যাংকঋণের সুদ একযোগে বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রয়মূল্য কমে যাওয়ায় ক্ষতির বোঝা দিন দিন ভারী হচ্ছে। বিসিএমএর নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শহীদুল্লাহ বলেন, “৪৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ এসেছে ব্যাংকঋণ থেকে। আয় কমছে, কিন্তু ঋণের কিস্তি ও সুদের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বেতন পরিশোধও নিয়মিত করতে পারছে না।” এই শিল্পে সরাসরি ৭–৮ লাখ এবং পরোক্ষভাবে আরও প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। উৎপাদন বন্ধ বা সীমিত হওয়ায় হাজার হাজার শ্রমিক চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে আছেন। খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় সচল করা এবং কাঁচামাল আমদানির প্রক্রিয়া সহজ করার বিকল্প নেই। পাশাপাশি সংকটে
থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য স্বল্পসুদে আর্থিক সহায়তা না মিললে আরও কয়েকটি কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বিসিএমএ সভাপতি আমিরুল হক বলেন, “প্রকল্পের অর্থায়ন ও ঋণপ্রাপ্তি সহজ না হলে সিমেন্ট শিল্পে খেলাপি ঋণ ও কারখানা বন্ধের ঢেউ শুরু হবে।” তিনি যোগ করেন, “বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে সিমেন্টের চাহিদা টেকসই, কিন্তু এখনকার সংকট না কাটলে অনেক প্রতিষ্ঠান সেই সময় পর্যন্ত টিকতে পারবে না।” বাংলাদেশের সিমেন্ট শিল্প এখন এমন এক দুঃসময়ে আছে, যেখানে উৎপাদনের চাকা ঘুরছে অল্পে, শ্রমিকরা অনিশ্চয়তায়, আর উদ্যোক্তারা দিন গুণছেন টিকে থাকার আশায়।



