
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

সচিবালয়ের সামনে লাঠিপেটায় আহত ৪৩ শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেলে

আই ডোন্ট কেয়ার ইয়োর প্রোপাগান্ডা, আই ডোন্ট গিভ আ ফাক টু ইয়োর ফ্রেমড ন্যারেটিভ

মান বিধ্বস্ত: ছাত্রলীগের মানবিক ভূমিকায় প্রশংসা, চিকিৎসা বিঘ্নকারীদের বিরুদ্ধে জনরোষ

মাইলস্টোনে প্রেস সচিবসহ দুই উপদেষ্টা অবরুদ্ধ, “ভুয়া ভুয়া স্লোগান

‘মা হাসপাতাল এত দূরে কেন’

মাইলস্টোনে উৎসুক মানুষের ভিড়

রাষ্ট্রীয় শোক আজ, সারাদেশে বিশেষ প্রার্থনা
এ মুহূর্তে দগ্ধদের জন্য যা করণীয়

মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে এ মুহূর্তে আহত শিশুদের ভেতর মূলত চার ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
প্রথমত, দগ্ধ হওয়া- বলাই বাহুল্য। দগ্ধ হওয়ার তিনটি ডিগ্রি বা মাত্রা রয়েছে। তৃতীয় মাত্রায় দগ্ধ হলে তা চামড়া পেরিয়ে নিচের কোষস্তর পর্যন্ত পৌঁছায়। দগ্ধতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ শ্বাসনালির আশপাশের জায়গা যেমন মুখ, গলা, বুক, হাত ও পা।
দ্বিতীয়ত, ধোঁয়ার কারণে শ্বাসনালীর ক্ষতি। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এমন ক্ষতির মাত্রা নিরূপণ করা কঠিন, তবুও ক্ষতির কথা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
তৃতীয়ত, দুর্ঘটনাজনিত আঘাত। অগ্নিকাণ্ডই শুধু নয়, আরও বিভিন্ন ধাতব কিংবা নির্মাণকাঠামো ধসে পড়তে পারে, ওপর থেকে কেউ পড়ে যেতে পারে। এর ফলে এ ধরনের দুর্ঘটনায় হাড় ভাঙা, মাথায়
আঘাত, শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হওয়া প্রভৃতি হয়ে থাকতে পারে। চতুর্থত, মানসিক আঘাত। এটা উপেক্ষা করা হয়ে থাকে, কিন্তু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের ঘটনার পর শিশুরা তাৎক্ষণিকভাবে শকড হয়ে থাকতে পারে, এ সময় তাদের পাশে ভরসা হয়ে দাঁড়াতে হবে। যেন তারা অসহায় বোধ না করে, আত্মীয়স্বজনকে খুঁজে পেতে পারে। ঘটনার পর পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে ভুগবে অনেক শিশু। ঘুম হবে না, আতঙ্কিত দশা পার করবে, অনেকের কথা বলা বন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এ সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে এ মুহূর্তে যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন তা যথাসাধ্য উপস্থাপন করা হলো। কথাগুলো চিকিৎসক, রোগীর পরিচর্যাকারী ও সাধারণ মানুষের কাজে লাগতে পারে। ১. আইসিইউ
প্রয়োজন হবে অনেক রোগীর। অক্সিজেন দিতে হবে। আইভি ফ্লুইড দিয়ে তাদের শরীরে সৃষ্ট পানিশূন্যতা রোধ করতে হবে। প্রয়োজনে লাইফ সাপোর্ট দরকার হতে পারে। ২. দগ্ধ অংশে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্টেরাইল ড্রেসিং (ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসমুক্ত বিশেষ ধরনের ড্রেসিং) দিতে হবে। নয়ত ইনফেকশন ছড়িয়ে গিয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। অসহ্য ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে উচ্চ মাত্রা ব্যথানাশক প্রয়োগ করা দরকার হতে পারে। ৩. শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে নেবুলাইজেশন, ব্রঙ্কোডাইলেটরস বা ইনটিউবেশন প্রয়োজন হতে পারে। ৪. কিছু বিশেষ বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। বিষয়গুলো হলো- হৃদস্পন্দনের গতি, রক্তচাপ ও রক্তে অক্সিজেনের ঘনত্ব। রোগী আইসিইউ সেবা পেলে এগুলো মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা সম্ভব।
অন্যথায় প্রয়োজন হলে ম্যানুয়ালি দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রাথমিকভাবে এই সেবাগুলো প্রয়োজন। আজকের জন্য বিশেষ করে। আগামী ও পরবর্তী দিনগুলোর জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মনে রাখা যেতে পারে- ১. যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাত্রায় দগ্ধ হয় তাহলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে রোগীর ব্লিস্টিং হয়ে থাকে অর্থাৎ দগ্ধ চামড়ার নিচে তরল জমে ফোস্কা পড়ে যায়। এই ফোস্কায় আঘাত করা যাবে না। ফাটিয়ে দেওয়া যাবে না। সুতির স্টেরাইল গজ ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগানো যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল কাজ করতে পারে। ফোস্কা বড় হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন নিতে হবে। তৃতীয় মাত্রার দগ্ধতার ক্ষেত্রে স্কিন
গ্রাফটিং করতে হবে। এটি শরীরের ভালো অংশ থেকে চামড়া নিয়ে আর্ত অংশে প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া। শুধুমাত্র উপযুক্ত চিকিৎকরাই তা করতে পারবেন। ২. অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য পুনরূদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। মনোচিকিৎসকরা এগিয়ে আসতে পারেন। শিশুদের ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য এই সহায়তা জরুরি। নয়ত তা পরবর্তী জীবনে বড় জটিলতা তৈরি করতে পারে। ৩. সংক্রমণ রোধে টিটেনাস ও অন্যান্য টিকা ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। ৪. কিছু ল্যাব পরীক্ষা নিয়মিত বিরতিতে হালনাগাদ করতে হবে। যেমন, এবিজি। অর্থাৎ, আর্টারিয়াল ব্লাড গ্যাস। রক্তে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সোইডের মাত্রা কেমন তা দেখতে হবে। যাচাই করতে হবে কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা। কিছু সাবধানতা : চিকিৎসকদের জন্য— ১.
ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাল-ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ যথাসাধ্য বজায় রাখা। গ্লাভস, মাস্ক ও গাউন ব্যবহার করা। ২. পোড়া জায়গা স্পর্শ না করা। যত্ন ও সমানুভূতির সঙ্গে ব্যান্ডেজ পরিবর্তন। ৩. প্রতিটি আহতের অবস্থা নথিভুক্ত রাখা। তাদের পুড়ে যাওয়ার মাত্রা, শ্বসনযন্ত্রের অবস্থা প্রভৃতি। দর্শনার্থীদের জন্য— ১. গণজমায়েত এড়াতে হবে, যে কোনো মূল্যে। অতিরিক্ত ভিড় ও বিশৃঙ্খলায় ইনফেকশন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ২. হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হবে, যেন সার্বিক পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে। ৩. প্রশ্ন করে, জোরে কথা বলে শিশুদের বিপর্যন্ত করা চলবে না। লেখক: সহকারী অধ্যাপক, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
আঘাত, শরীরে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হওয়া প্রভৃতি হয়ে থাকতে পারে। চতুর্থত, মানসিক আঘাত। এটা উপেক্ষা করা হয়ে থাকে, কিন্তু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের ঘটনার পর শিশুরা তাৎক্ষণিকভাবে শকড হয়ে থাকতে পারে, এ সময় তাদের পাশে ভরসা হয়ে দাঁড়াতে হবে। যেন তারা অসহায় বোধ না করে, আত্মীয়স্বজনকে খুঁজে পেতে পারে। ঘটনার পর পোস্ট ট্রমাটিক ডিসঅর্ডারে ভুগবে অনেক শিশু। ঘুম হবে না, আতঙ্কিত দশা পার করবে, অনেকের কথা বলা বন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এ সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে এ মুহূর্তে যে ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন তা যথাসাধ্য উপস্থাপন করা হলো। কথাগুলো চিকিৎসক, রোগীর পরিচর্যাকারী ও সাধারণ মানুষের কাজে লাগতে পারে। ১. আইসিইউ
প্রয়োজন হবে অনেক রোগীর। অক্সিজেন দিতে হবে। আইভি ফ্লুইড দিয়ে তাদের শরীরে সৃষ্ট পানিশূন্যতা রোধ করতে হবে। প্রয়োজনে লাইফ সাপোর্ট দরকার হতে পারে। ২. দগ্ধ অংশে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। স্টেরাইল ড্রেসিং (ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাসমুক্ত বিশেষ ধরনের ড্রেসিং) দিতে হবে। নয়ত ইনফেকশন ছড়িয়ে গিয়ে রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। অসহ্য ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে উচ্চ মাত্রা ব্যথানাশক প্রয়োগ করা দরকার হতে পারে। ৩. শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে নেবুলাইজেশন, ব্রঙ্কোডাইলেটরস বা ইনটিউবেশন প্রয়োজন হতে পারে। ৪. কিছু বিশেষ বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। বিষয়গুলো হলো- হৃদস্পন্দনের গতি, রক্তচাপ ও রক্তে অক্সিজেনের ঘনত্ব। রোগী আইসিইউ সেবা পেলে এগুলো মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা সম্ভব।
অন্যথায় প্রয়োজন হলে ম্যানুয়ালি দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রাথমিকভাবে এই সেবাগুলো প্রয়োজন। আজকের জন্য বিশেষ করে। আগামী ও পরবর্তী দিনগুলোর জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো মনে রাখা যেতে পারে- ১. যদি দ্বিতীয় ও তৃতীয় মাত্রায় দগ্ধ হয় তাহলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে। দ্বিতীয় মাত্রার ক্ষেত্রে রোগীর ব্লিস্টিং হয়ে থাকে অর্থাৎ দগ্ধ চামড়ার নিচে তরল জমে ফোস্কা পড়ে যায়। এই ফোস্কায় আঘাত করা যাবে না। ফাটিয়ে দেওয়া যাবে না। সুতির স্টেরাইল গজ ব্যবহার করতে হবে। অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগানো যেতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল কাজ করতে পারে। ফোস্কা বড় হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন নিতে হবে। তৃতীয় মাত্রার দগ্ধতার ক্ষেত্রে স্কিন
গ্রাফটিং করতে হবে। এটি শরীরের ভালো অংশ থেকে চামড়া নিয়ে আর্ত অংশে প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া। শুধুমাত্র উপযুক্ত চিকিৎকরাই তা করতে পারবেন। ২. অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য পুনরূদ্ধারের ব্যবস্থা করতে হবে। মনোচিকিৎসকরা এগিয়ে আসতে পারেন। শিশুদের ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য এই সহায়তা জরুরি। নয়ত তা পরবর্তী জীবনে বড় জটিলতা তৈরি করতে পারে। ৩. সংক্রমণ রোধে টিটেনাস ও অন্যান্য টিকা ব্যবহার করা যেতে পারে। চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেবেন। ৪. কিছু ল্যাব পরীক্ষা নিয়মিত বিরতিতে হালনাগাদ করতে হবে। যেমন, এবিজি। অর্থাৎ, আর্টারিয়াল ব্লাড গ্যাস। রক্তে অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সোইডের মাত্রা কেমন তা দেখতে হবে। যাচাই করতে হবে কার্বন মনোক্সাইডের মাত্রা। কিছু সাবধানতা : চিকিৎসকদের জন্য— ১.
ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাল-ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ যথাসাধ্য বজায় রাখা। গ্লাভস, মাস্ক ও গাউন ব্যবহার করা। ২. পোড়া জায়গা স্পর্শ না করা। যত্ন ও সমানুভূতির সঙ্গে ব্যান্ডেজ পরিবর্তন। ৩. প্রতিটি আহতের অবস্থা নথিভুক্ত রাখা। তাদের পুড়ে যাওয়ার মাত্রা, শ্বসনযন্ত্রের অবস্থা প্রভৃতি। দর্শনার্থীদের জন্য— ১. গণজমায়েত এড়াতে হবে, যে কোনো মূল্যে। অতিরিক্ত ভিড় ও বিশৃঙ্খলায় ইনফেকশন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। ২. হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হবে, যেন সার্বিক পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে। ৩. প্রশ্ন করে, জোরে কথা বলে শিশুদের বিপর্যন্ত করা চলবে না। লেখক: সহকারী অধ্যাপক, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল