
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

ইরানের এক হামলায় ইসরাইলের ৩০ বৈমানিক নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পদত্যাগ করলেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিন তদন্ত কমিশনের তিন সদস্য

গাজায় ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে পদদলিত হয়ে নিহত ২১

ফিলিপাইনে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এআই ও ভুয়া তথ্য

সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের

সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ইরান-ইসরাইল সংঘাত কোনদিকে যাচ্ছে?

ছয় মাসের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো ইসরাইলের অভ্যন্তরে ইরানের হামলার পর একদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন ‘ইরানকে মূল্য দিতে হবে’। অন্যদিকে, ইসরাইল যদি জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে, আবারো পাল্টা হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
হামাস, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা ও ইরানের কমান্ডারদের হত্যার জবাব হিসেবেই মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড।
বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি বোয়েন তার বিশ্লেষণে বলছেন, ইরান ‘সিরিয়াস ড্যামেজ’ (গুরুতর ক্ষতি) ঘটানোর চেষ্টা করেছিল বলেই দেখা যাচ্ছে। ফলে ইসরাইলের জবাব কী হয় সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
বিবদমান দুই দেশ এবং তাদের মিত্রদের তৎপরতায় মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি কোনদিকে যেতে পারে?
গত এপ্রিলে ইরান যখন ইসরাইলে আক্রমণ করে, তখন দৃশ্যমান
কিছু একটা কিছু করে দেখানোর প্রচেষ্টাটা লক্ষণীয় ছিল। কিন্তু সেটা একটা প্রচেষ্টা হিসেবেই থেকে যায়, কারণ সেবার তাদের প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্রই ইসরায়েলি এবং আমেরিকান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে ভূপাতিত হয়। এবারের ব্যাপারটা ভিন্ন। ইরান গুরুতর ক্ষতি করার চেষ্টাতেই জোরদার আঘাত হেনেছে বলে মনে হচ্ছে। এবার অনেক বেশি আগ্রাসী তাদের প্রচেষ্টা। ইসরাইলিদের মনোভাব এপ্রিলে নেতানিয়াহুকে বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালাতে বারণ করেছিলেন জো বাইডেন। তাতে ইসরাইলেরই জয় হবে বলে অভিমত ছিল তার। ইসরাইলও সেবার জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে গতবার ইসরাইলের আন্তর্জাতিক সহযোগীরা দেশটিকে যেভাবে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছিলো এবার তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এখন ইসরাইলে ভিন্ন হাওয়া বইছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের করা টুইটের দিকে তাকালে
এর একটা আভাস পাওয়া যায়। বেশ কড়া ভাষা ব্যবহার করেছেন বেনেট। তিনি লিখেছেন, ৫০ বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সুযোগ মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা পাল্টে দেয়ার। ইরানের ‘সন্ত্রাসী সরকারকে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিতে’ তাদের পরমাণু অবকাঠামোর দিকে নজর দেয়া উচিত ইসরাইলের, এমনটা মনে করছেন বেনেট। তিনি যদিও এখন প্রধানমন্ত্রী নন। তবে, ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা করা হয়, নিজেকে কঠোর হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা হয়তো সেজন্যই। কিন্তু তার বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই দেশটির নাগরিকদের অন্তত একাংশের মনোভাবের প্রতিফলন। এই মুহূর্তে ইরানের অর্থনীতির ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন যেকোনো কিছুতে ইসরাইলের হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না বলে মনে করেন জেরেমি বোয়েন। হতে পারে সেটি পরমাণু প্রকল্প কিংবা পেট্রোকেমিক্যাল
স্থাপনা। তেহরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল যদি কোনও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়, তবে ইসরাইলের সমস্ত অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাবে ইরান। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর যুগ্ম প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন যে ইরানের বিশেষায়িত সামরিক শাখা রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করার জন্য প্রস্তুত। লেবাননের হিজবুল্লাহ ইরানের একটি প্রতিরক্ষা ঢাল হিসেবে কাজ করে আসছিল। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো আক্রান্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, হিজবুল্লাহর ভাণ্ডারে থাকা অত্যাধুনিক অস্ত্রগুলো প্রতিরোধের কাজে লাগানো যেতো। কিন্তু, মার্কিন এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে সশস্ত্র সংগঠনটির অর্ধেক অস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব শেখ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন, লেবাননে প্রবেশ
করেছে ইসরাইলি সেনারা। ফলে, হিজবুল্লাহর কারণে ইরানের যে প্রতিরোধটুকু ছিল, সেটি অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। জেরেমি বোয়েনের বিশ্লেষণ, এর ফলে ইসরাইল আরো অবাধে তৎপরতা চালাতে পারছে। আর ফ্র্যাংক গার্ডনার বলছেন, ইসরাইলের এখনকার কৌশল হিসেবে দেখা যাচ্ছে এক সাথে দু’ভাবে এগোনোর চেষ্টা। গুপ্ত হামলায় শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করা, বিমান হামলা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা- যার মাধ্যমে ইরান ও ছায়াশক্তিগুলোকে বুঝিয়ে দেয়া যে ইসরাইলে আঘাত করলে আরও বেশি শক্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে, লেবাননে সম্মুখ যুদ্ধে ইসরাইলি সেনাদের প্রতিহত করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। বুধবার দুইবার মুখোমুখি লড়াই হয়েছে বলে জানায় তারা। সংগঠনটির বক্তব্য, এগুলো যুদ্ধের প্রথম পর্যায়। ইরানে হামলার জন্য দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা ইসরাইলের হাতে থেকে থাকবে। অবশ্যম্ভাবী সামরিক
লক্ষ্যবস্তু হবে স্থলভাগে যেখান থেকে মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ফায়ারিং এর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র যেখানে রাখা হয়েছে সেই জায়গাই শুধু নয়, কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, এমনকি রিফুয়েলিং সেন্টারগুলোও এর আওতায় থাকার কথা। বুধবার গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ, গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের ইতি টানার মতো পরিস্থিতি হয়নি এখনো। অন্যদিকে, জো বাইডেন ভূমধ্যসাগরে আরো সৈন্য পাঠিয়ে ইরানকে ইঙ্গিত করছেন, যদি ইসরায়েলের ওপর আঘাত আসে, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আঘাত বলেই বিবেচিত হবে। এসব কারণে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা নিয়ে কথা উঠছে। চলমান ঘটনাপ্রবাহে তৈরি অস্থিতিশীলতা ও অশান্তির পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ একেবারেই ক্ষীণ
হয়ে এসেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা আগুন দ্রুতই নরকে রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। অবশ্য, গুতেরেসকে নিজেদের দেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ইসরাইল।
কিছু একটা কিছু করে দেখানোর প্রচেষ্টাটা লক্ষণীয় ছিল। কিন্তু সেটা একটা প্রচেষ্টা হিসেবেই থেকে যায়, কারণ সেবার তাদের প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্রই ইসরায়েলি এবং আমেরিকান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারণে ভূপাতিত হয়। এবারের ব্যাপারটা ভিন্ন। ইরান গুরুতর ক্ষতি করার চেষ্টাতেই জোরদার আঘাত হেনেছে বলে মনে হচ্ছে। এবার অনেক বেশি আগ্রাসী তাদের প্রচেষ্টা। ইসরাইলিদের মনোভাব এপ্রিলে নেতানিয়াহুকে বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালাতে বারণ করেছিলেন জো বাইডেন। তাতে ইসরাইলেরই জয় হবে বলে অভিমত ছিল তার। ইসরাইলও সেবার জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে গতবার ইসরাইলের আন্তর্জাতিক সহযোগীরা দেশটিকে যেভাবে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছিলো এবার তেমনটি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এখন ইসরাইলে ভিন্ন হাওয়া বইছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটের করা টুইটের দিকে তাকালে
এর একটা আভাস পাওয়া যায়। বেশ কড়া ভাষা ব্যবহার করেছেন বেনেট। তিনি লিখেছেন, ৫০ বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সুযোগ মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা পাল্টে দেয়ার। ইরানের ‘সন্ত্রাসী সরকারকে মারাত্মকভাবে পঙ্গু করে দিতে’ তাদের পরমাণু অবকাঠামোর দিকে নজর দেয়া উচিত ইসরাইলের, এমনটা মনে করছেন বেনেট। তিনি যদিও এখন প্রধানমন্ত্রী নন। তবে, ভবিষ্যতে হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে ধারণা করা হয়, নিজেকে কঠোর হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা হয়তো সেজন্যই। কিন্তু তার বক্তব্য নিশ্চিতভাবেই দেশটির নাগরিকদের অন্তত একাংশের মনোভাবের প্রতিফলন। এই মুহূর্তে ইরানের অর্থনীতির ক্ষতির কারণ হতে পারে এমন যেকোনো কিছুতে ইসরাইলের হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না বলে মনে করেন জেরেমি বোয়েন। হতে পারে সেটি পরমাণু প্রকল্প কিংবা পেট্রোকেমিক্যাল
স্থাপনা। তেহরানের বিরুদ্ধে ইসরাইল যদি কোনও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়, তবে ইসরাইলের সমস্ত অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাবে ইরান। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর যুগ্ম প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন যে ইরানের বিশেষায়িত সামরিক শাখা রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করার জন্য প্রস্তুত। লেবাননের হিজবুল্লাহ ইরানের একটি প্রতিরক্ষা ঢাল হিসেবে কাজ করে আসছিল। ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো আক্রান্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে, হিজবুল্লাহর ভাণ্ডারে থাকা অত্যাধুনিক অস্ত্রগুলো প্রতিরোধের কাজে লাগানো যেতো। কিন্তু, মার্কিন এবং ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে সশস্ত্র সংগঠনটির অর্ধেক অস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব শেখ হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন, লেবাননে প্রবেশ
করেছে ইসরাইলি সেনারা। ফলে, হিজবুল্লাহর কারণে ইরানের যে প্রতিরোধটুকু ছিল, সেটি অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। জেরেমি বোয়েনের বিশ্লেষণ, এর ফলে ইসরাইল আরো অবাধে তৎপরতা চালাতে পারছে। আর ফ্র্যাংক গার্ডনার বলছেন, ইসরাইলের এখনকার কৌশল হিসেবে দেখা যাচ্ছে এক সাথে দু’ভাবে এগোনোর চেষ্টা। গুপ্ত হামলায় শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করা, বিমান হামলা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা- যার মাধ্যমে ইরান ও ছায়াশক্তিগুলোকে বুঝিয়ে দেয়া যে ইসরাইলে আঘাত করলে আরও বেশি শক্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে, লেবাননে সম্মুখ যুদ্ধে ইসরাইলি সেনাদের প্রতিহত করার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। বুধবার দুইবার মুখোমুখি লড়াই হয়েছে বলে জানায় তারা। সংগঠনটির বক্তব্য, এগুলো যুদ্ধের প্রথম পর্যায়। ইরানে হামলার জন্য দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা ইসরাইলের হাতে থেকে থাকবে। অবশ্যম্ভাবী সামরিক
লক্ষ্যবস্তু হবে স্থলভাগে যেখান থেকে মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ফায়ারিং এর জন্য ক্ষেপণাস্ত্র যেখানে রাখা হয়েছে সেই জায়গাই শুধু নয়, কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার, এমনকি রিফুয়েলিং সেন্টারগুলোও এর আওতায় থাকার কথা। বুধবার গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ, গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের ইতি টানার মতো পরিস্থিতি হয়নি এখনো। অন্যদিকে, জো বাইডেন ভূমধ্যসাগরে আরো সৈন্য পাঠিয়ে ইরানকে ইঙ্গিত করছেন, যদি ইসরায়েলের ওপর আঘাত আসে, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আঘাত বলেই বিবেচিত হবে। এসব কারণে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা নিয়ে কথা উঠছে। চলমান ঘটনাপ্রবাহে তৈরি অস্থিতিশীলতা ও অশান্তির পরিপ্রেক্ষিতে কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ একেবারেই ক্ষীণ
হয়ে এসেছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা আগুন দ্রুতই নরকে রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। অবশ্য, গুতেরেসকে নিজেদের দেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ইসরাইল।