ফ্যাসিবাদীরা যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ঘৃণা করেন – ইউ এস বাংলা নিউজ




ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আপডেটঃ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
     ৮:০৩ অপরাহ্ণ

ফ্যাসিবাদীরা যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ঘৃণা করেন

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৮:০৩ 135 ভিউ
বাংলাদেশে উল্লেখ করার মতো কিছু ঘটনা ঘটে গেল। সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে প্রাথমিকভাবে আন্দোলন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বড় পরিসরে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু ক্রমেই স্বৈরাচার হয়ে ওঠা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে তা গায়ে লাগাননি। বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার পরিবর্তে তিনি এমন সব পদক্ষেপ নেন যে, তাতে সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি শেখ হাসিনার সরকার বিক্ষোভ দমনে চূড়ান্ত রকমের সহিংসতার আশ্রয় নেয়। পুলিশের গুলিতে মারা যান অনেক শিক্ষার্থী। দেশজুড়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট যোগাযোগ। পুলিশের নৃশংসতার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ওই মাসের শেষ নাগাদ বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

ঘটনাক্রমে সেনাবাহিনী ছাত্র–জনতার পক্ষে অবস্থান নিলে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা। এভাবেই দেশব্যাপী ছাত্র–জনতার আন্দোলন একজন সহিংস স্বৈরশাসককে সফলভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম হয়। দৃশ্যত, অন্তত এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা জয়ী হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোকে তার নাম না নিতে, তার বক্তব্যকে উদ্ধৃত না করতে বা তার ছবি প্রদর্শন না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারাগারে ঢোকানো হয়েছে তার দলের অনেককে। কিন্তু বিস্ময় জাগানো কিছু শুরু হয়েছে সেখানেও। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের শুরু করা গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে পাকিস্তানের স্টুডেন্টস ফেডারেশন গত ৩০ আগস্টের মধ্যে ইমরান খানকে মুক্তি দিতে সরকারকে সময় বেঁধে দেয়। তাকে মুক্তি না দিলে দেশজুড়ে ছাত্রবিক্ষোভ শুরুর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। বাংলাদেশে যা ঘটেছে এবং পাকিস্তানে

যা ঘটতে পারে, তা প্রতিটি স্বৈরশাসকের জন্যই দুঃস্বপ্নের। কর্তৃত্ববাদীরা ও সম্ভাব্য কর্তৃত্ববাদীরা এটা জানেন, তাদের সমালোচক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রাথমিক ঘাঁটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হামলা ফ্যাসিবাদের জন্য বিপদের আগাম সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে যা ঘটেছে এবং পাকিস্তানে যা ঘটতে পারে, তা প্রতিটি স্বৈরশাসকের জন্যই দুঃস্বপ্নের। কর্তৃত্ববাদীরা ও সম্ভাব্য কর্তৃত্ববাদীরা এটা জানেন, তাদের সমালোচক ও ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রাথমিক ঘাঁটি বিশ্ববিদ্যালয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হামলা ফ্যাসিবাদের জন্য বিপদের আগাম সতর্কবার্তা। ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সাল থেকে দেশটি শাসন করছেন। ‘ভারত-বিরোধিতার’ অজুহাতে দেশটির অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশানা বানানো তার সরকারের একটা বৈশিষ্ট্য। একইভাবে হাঙ্গেরির স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের কথা বলা যায়। বুদাপেস্টে সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি ‘জেন্ডার মতাদর্শ’ ছড়িয়ে

দিচ্ছে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে বাগাড়ম্বরপূর্ণ রাজনৈতিক প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। আইনকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দেশছাড়া করতে চায় তার সরকার। যুক্তরাষ্ট্রেও পরিস্থিতি অনেকটা একই রকমের। ভিন্নমত দমনে সম্ভাব্য কর্তৃত্ববাদীরা ও একদলীয় রাজ্যগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিশানা করছে। যেমন সংখ্যালঘু ভোটারদের কঠোরভাবে দমন করতে ভোটার জালিয়াতির পুরাকথা ব্যবহার করছেন ফ্লোরিডার রিপাবলিকান গভর্নর ও ‘উচ্চাকাঙ্ক্ষী স্বৈরাচার’ রন ডিস্যান্টিস (যুক্তরাষ্ট্রে বাস্তবিক অর্থে কখনো ভোটার জালিয়াতি হয়নি। অভিযোগ তদন্ত করে দেখা গেছে, এমন জালিয়াতি হলেও তা হয়তো অঙ্কের হিসাবে শূন্য দশমিক ০০০৩ থেকে শূন্য দশমিক ০০২৫ শতাংশ)। যুক্তরাষ্ট্রে, রিপাবলিকান পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্র আন্দোলনে ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত রয়েছে। রিপাবলিকান দল ক্রমেই যত কর্তৃত্ববাদের দিকে ঝুঁকবে, ততই

বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদী শাসকদের মতো ভিন্নমত গুঁড়িয়ে দিতে চাইবে। আর এটি শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অপরিসীম সাহস ও সংকল্প দিয়ে এটিই দেখিয়েছে, ফ্যাসিবাদীদের কৌশল হিতে বিপরীত হতে পারে। সংখ্যালঘু ভোটারদের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিশানা বানিয়েছেন ডিস্যান্টিস। ফ্লোরিডার সরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও শিক্ষাগত স্বাধীনতার ওপর গত বছরের মে মাসে ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসরস (এএইউপি)’–এর এক বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঙ্গরাজ্যের সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক স্বাধীনতা, শর্তাবলি ও শাসন এখন রাজনৈতিক ও আদর্শিক হামলার শিকার; যা মার্কিন ইতিহাসে নেই। কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভীতির পরিবেশ বজায় থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। অতি সম্প্রতি গাজায়

ইসরাইলের যুদ্ধের প্রতিবাদে গণহত্যাবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গোটা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে। বিক্ষোভে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ইহুদি শিক্ষার্থীও অংশ নেন। এই বিক্ষোভকারীদের হামাসপন্থী আখ্যা দিয়ে অভিজাত ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের ওপর মৌখিক, রাজনৈতিক ও শারীরিকভাবে আক্রমণ চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকান পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্র আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত রয়েছে। রিপাবলিকান দল ক্রমেই যত কর্তৃত্ববাদের দিকে ঝুঁকবে, ততই বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ববাদী শাসকদের মতো ভিন্নমত গুঁড়িয়ে দিতে চাইবে। আর এটি শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের মধ্য দিয়ে। তবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অপরিসীম সাহস ও সংকল্প দিয়ে এটিই দেখিয়েছে, ফ্যাসিবাদীদের কৌশল হিতে বিপরীত হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
“ড. ইউনূস উন্নয়ন করেনাই, ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হয় নাই; কামাইয়ের প্রচুর ক্ষতি হইছে, সংসার চলতেছে না” — জনতার ক্ষোভ গণহত্যা ১৯৭১: হরিণাগোপাল-বাগবাটী ইউনূসের অদক্ষতায় রূপপুরে ব্যয় বেড়েছে ২৬ হাজার কোটি, জনগণের ঘাড়ে বিশাল বোঝা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শিক্ষার্থীদের সনদ বাতিল: ড. ইউনূসকে কঠোর বার্তা আন্তর্জাতিক সংগঠনের ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯: ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নাম মুছে যেভাবে ‘বাংলাদেশ’ নাম দিলেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইইউ পার্লামেন্ট সদস্যের সাথে ‘হ্যান্ড ইন হ্যান্ড ফাউন্ডেশন’-এর বৈঠক ‘বালের বিজয় দিবস’ মন্তব্যের জেরে ইলিয়াসকে ‘স্টুপিড’, ‘শুয়োরের বাচ্চা’, ‘বেজন্মা’ বললেন আম জনতা দলের তারেক ক্ষমতার মোহ নয়, সাধারণ মানুষের হৃদয়েই থাকতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু: ড. কামাল হোসেন শাসক বঙ্গবন্ধু: ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে এক রাষ্ট্রনির্মাতার উপাখ্যান শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ‘সাংবিধানিক প্রহসন’, সংবিধানের ওপর আঘাত: ফার্স্টপোস্টের প্রতিবেদন তারেক জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির উত্থান: একটি অন্ধকার অধ্যায়ের বিশ্লেষণ গৃহকর্মীর পেটে বাবার ‘অবৈধ সন্তান’: ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবিরের কলঙ্কিত জন্মরহস্য ফাঁস! বিজয় দিবসের আনন্দ ম্লান করতেই কি ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’? খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুঞ্জন ও ১৬ই ডিসেম্বরের নেপথ্য বিশ্লেষণ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে বৈঠক: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও জাতিসংঘের প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে বৈঠক: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও জাতিসংঘের প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মালাইকার বিস্ফোরক মন্তব্য ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ ২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?