গোপনে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল! – ইউ এস বাংলা নিউজ




গোপনে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল!

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৩০ জুন, ২০২৫ | ৬:২১ 14 ভিউ
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) একটি বড় ধরনের সামরিক ও প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন কর্মসূচি শুরু করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো ২ হাজার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ব্যাপক হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন, যাতে ইরান, ইয়েমেন, ইরাক কিংবা অন্য দূরবর্তী দেশের শত্রুদের মোকাবিলা করা যায়। রোববার ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল তার প্রতিপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে একটি বহুমুখী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতিপক্ষ হতে পারে ইরানের আঞ্চলিক মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরাসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী। এদিকে ১২ দিনের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইরান আবারও ইসরায়েলকে ঘিরে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান

আবদুর রহিম মৌসাভি জানিয়েছেন, তেহরান এখনো বিশ্বাস করে না যে ইসরায়েল সত্যিকার অর্থে এই যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে। গতকাল রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে মৌসাভি বলেন, ‘আমরা এই যুদ্ধ শুরু করিনি, কিন্তু যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা শক্তভাবে জবাব দিয়েছি। আর এখনো আমাদের গভীর সন্দেহ রয়েছে যে, শত্রুপক্ষ যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি মানবে কি না। তাই যদি আবার আক্রমণ হয়, তাহলে আমরা শক্তি দিয়ে জবাব দিতে প্রস্তুত আছি।’ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সীমান্ত নেই। দুই দেশের রাজধানী (তেহরান থেকে তেল আবিব) প্রায় ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দূরে। আর হিজবুল্লাহ ও হুতিসহ অন্য গোষ্ঠীগুলোর অবস্থান আরও কম দূরত্বের মধ্যে। তাই ২

হাজার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত হামলা চালানোর আধুনিক সক্ষমতা অর্জন করতে পারলে সহজেই তারা সফল অভিযান চালাতে পারবে বলে মনে করে আইডিএফ। ইরানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযানের এই পরিকল্পনার আওতায় আরও আছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, আকাশ ও স্থলভিত্তিক লেজার প্রযুক্তি, দূরপাল্লার ড্রোন এবং ভূগর্ভস্থ অভিযান পরিচালনার প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্তকরণ। প্রতিরক্ষা খাতে একটি মূল ফোকাস হচ্ছে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে পারবে। সম্প্রতি ইরানের একটি হামলায় ইসরায়েলের বাত ইয়াম শহরের ১০২টি উঁচু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধ বিলিয়ন শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি ইন্টারসেপ্টর (আকাশ প্রতিরক্ষা)

মিসাইলের দাম ১৫ মিলিয়ন শেকেল (প্রায় ৫৪ কোটি টাকা), যা অনেক ব্যয়বহুল। তাই এখন সরকার আরও বেশি বাজেট দাবি করছে সামরিক খাতে। এ ছাড়া স্থল বাহিনীর আধুনিকায়নেও জোর দেওয়া হচ্ছে। নতুন ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ ঘাঁটি এবং সেনাদের জন্য উন্নত সরঞ্জাম সরবরাহে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রিজার্ভ সেনাদের জন্যও ব্যক্তিগত সরঞ্জামের ঘাটতি পূরণ করার কথা বলা হয়েছে। ইসরায়েলের নৌবাহিনী, যেটি একসময় কেবল উপকূল রক্ষার দায়িত্বে ছিল, এখন ইয়েমেন পর্যন্ত দূরবর্তী অভিযানে অংশ নিচ্ছে। প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, নৌবাহিনীকেও দীর্ঘ পাল্লার হামলায় সক্ষম জাহাজ দিয়ে সজ্জিত করতে হবে, যেন দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা যায়। এই সমগ্র প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে

কর্মকর্তারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই সহায়তা সস্তা নয়। প্রতিটি ডিভাইস, প্রতিটি প্রযুক্তির পেছনে রয়েছে কোটি কোটি শেকেলের ব্যয়। ফলে এখন প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে যুদ্ধকালীন খরচের জন্য তাৎক্ষণিক বাজেট চাওয়া হয়েছে। ইসরায়েল এখন মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি সম্ভাব্য যুদ্ধক্ষেত্র- গাজা, পশ্চিম তীর, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরাক, এমনকি জর্ডান সীমান্ত পর্যন্ত নজরে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ভবিষ্যতের যুদ্ধে জয়ী হতে হলে আরও গোপন, আরও ধ্বংসাত্মক এবং কৌশলগতভাবে চমকপ্রদ অস্ত্র ও প্রযুক্তি দরকার। এ ছাড়া স্পেস (মহাকাশ) প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানো, সাইবার যুদ্ধের প্রস্তুতি, ভূগর্ভস্থ অভিযানে দক্ষতা অর্জন এবং জনগণের জন্য আরও বেশি সুরক্ষিত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ- সবই এই নতুন কর্মপরিকল্পনার

অংশ। এই বিশাল প্রস্তুতি ইঙ্গিত দেয়, মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও সামরিক ভারসাম্যের যুগ শুরু হয়েছে, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা। ইসরায়েলের একজন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টকে বলেন, ‘পরবর্তী যুদ্ধে আমাদের শত্রুকে আরও চমকে দিতে হবে। ইসরায়েল যেন সব সময় যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারে, সেটিই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইরানকে কিছুই দিচ্ছি না, তাদের সঙ্গে আলোচনাও করছি না: ট্রাম্প সব ধরণের সঞ্চয়পত্রে সুদহার কমছে শাহজালাল বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ জুলাই শহীদদের স্মৃতি স্মরণে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন ইরানে স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যবহারে মৃত্যুদণ্ডের বিধান গাজাযুদ্ধে ৮৮০ ইসরায়েলি সেনা নিহত ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের ৩১ হাজার ভবন ধ্বংস চালের বাজারে আগুন, বিপাকে নিম্ন-মধ্যবিত্তরা ছাত্রদল-শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি: কে ছাত্র, কে অছাত্র? মতিঝিলে ডিবি পরিচয়ে ৩০ লাখ টাকা ছিনতাই ‘আমি যাই করি না কেন, মানুষ মন্তব্য করবেই’ পারিশ্রমিক বাড়ালেন শ্রীলীলা অবশেষে শুটিংয়ে ফিরছেন শাবনূর যে ৫টি জিনিস আবিষ্কৃত হয়েছিল স্রেফ ভুলের কারণে! পারমাণবিক অস্ত্র: শাসনের হাতিয়ার, শান্তির শত্রু মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা, বিচার দাবি হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশ: প্রশ্ন অনেক, উত্তর খুঁজছে পুলিশ মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা, বিচার দাবি গাজার ত্রাণকেন্দ্র যেন ‘বধ্যভূমি’