সংবিধান সংস্কার কমিশনে গুরুত্ব সাত বিষয়ে – ইউ এস বাংলা নিউজ




সংবিধান সংস্কার কমিশনে গুরুত্ব সাত বিষয়ে

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ১১:১০ 5 ভিউ
একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিতে বলেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে সংবিধানের বিদ্যমান প্রস্তাবনার ভাষ্যকে পরিবর্তন করে পুনঃপ্রতিস্থাপনের সুপারিশ করেছে কমিশন। প্রস্তাবনার সেই ভাষ্যে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ জমা দিয়েছে কমিশন। ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি’ এই বিধানটি বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে। তারা বর্তমান অনুচ্ছেদ ৬(২) সংশোধন করে ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলে পরিচিত হবেন’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের জন্য বলেছে। প্রস্তাব করা হয়েছে- একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সর্বোচ্চ দুবার

দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তরুণদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো নিম্নকক্ষের মোট আসনের ন্যূনতম দশ ভাগ আসনে তরুণ-তরুণীদের মধ্য থেকে প্রার্থী মনোনীত করবে। সংসদীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ন্যূনতম বয়স হবে ২১ বছর। শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে সংবিধান সংস্কার কমিশনের (প্রথম খণ্ড) পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়। এর আগে ১৫ জানুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় সংবিধান সংস্কার কমিশন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন। সংবিধান সংস্কার কমিশনে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজকে

প্রধান করা হয়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪-এর ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদী আন্দোলনের আদর্শকে সামনে রেখে কমিশনের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ‘আমরা জনগণের সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্রকে সংবিধানের মূলনীতি হিসাবে গ্রহণ করে জনগণের জন্য একটি সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করছি। যে সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের সর্বোচ্চ আকাক্সক্ষার বহিঃপ্রকাশ এবং যে সংবিধান স্বাধীন সত্তায় যৌথ জাতীয় বিকাশ সুনিশ্চিত করবে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষণ করবে।’ কমিশন অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কেও সুপারিশ করেছে। তারা বলেছে, আইনসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে কিংবা আইনসভা ভেঙে গেলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার শপথ না নেওয়া পর্যন্ত, একটি অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগের সুপারিশ

করছে। এই সরকারের প্রধান ‘প্রধান উপদেষ্টা’ বলে অভিহিত হবেন। আইনসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৫ (পনেরো) দিন পূর্বে অথবা আইনসভা ভেঙে গেলে, পরবর্তী অন্যূন ১৫ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা সর্বোচ্চ ১৫ (পনেরো) সদস্য বিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে কার্য পরিচালনা করবেন। অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৯০ (নব্বই) দিন হবে, তবে যদি নির্বাচন আগে অনুষ্ঠিত হয় তবে নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শপথ গ্রহণ মাত্র এই সরকারের মেয়াদের অবসান ঘটবে। কমিশন, সংবিধানের ৭(ক), ৭(খ), ৮, ৯, ১০, ১২, ১৪১(খ), ১৪১(গ) ও ১৫০(২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্তি এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফশিল সংবিধানে না রাখার সুপারিশ করেছে। ক্ষমতার

প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাসসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ করার সুপারিশ করে কমিশন। জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষে আসন থাকবে ৪০০। নির্বাচন হবে বর্তমান পদ্ধতিতে, সরাসরি ভোটে। এর মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তারাও নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে। আর উচ্চকক্ষে আসন থাকবে ১০৫টি। এর মধ্যে ১০০ জন নির্বাচিত হবেন আনুপাতিক পদ্ধতিতে। বাকি পাঁচটি আসনের সদস্য রাষ্ট্রপতি নাগরিকদের মধ্য থেকে (যারা কোনো কক্ষেরই সদস্য ও রাজনৈতিক দলের সদস্য নন) মনোনীত করবেন। সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট আসন হবে ৫০৫টি। কমিশন উচ্চ আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের সব বিভাগে হাইকোর্ট বিভাগের সমান এখতিয়ার সম্পন্ন হাইকোর্টের স্থায়ী আসন প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে। বিচারক নিয়োগে

একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন গঠন করার জন্য বলেছে। কমিশন বিচার বিভাগকে পূর্ণ আর্থিক স্বাধীনতা প্রদানের সুপারিশ করেছে। এছাড়াও কমিশন অধস্তন আদালতের পরিবর্তে স্থানীয় আদালত ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। কমিশন সংবিধানের মূলনীতি হিসাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে। বিদ্যমান সংবিধানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগের অধিকারসমূহ সমন্বিত করে ‘মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা’ নামে একটি একক সনদ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা আদালতে বলবৎযোগ্য হবে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার ও নাগরিক, রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে বিদ্যমান তারতম্য দূর করবে। বলা হয়েছে, একজন সংসদ-সদস্য একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা কিংবা রাজনৈতিক দলের প্রধান- এই তিনটির যে কোনো

একটির বেশি পদে অধিষ্ঠিত হবেন না। এর পাশাপাশি অর্থ বিল ব্যতীত নিম্নকক্ষের সদস্যরা তাদের মনোনয়নকারী দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে এবং আইনসভার স্থায়ী কমিটিগুলোর সভাপতি সব সময় বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে মনোনীত হবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
চাল চুরির দায়ে বহিষ্কারের পর এবার সড়কের ইট তুলে নিলেন সেই যুবদল নেতা সংবিধান সংস্কার কমিশনে গুরুত্ব সাত বিষয়ে জরুরি সংস্কার শেষে নির্বাচনে যেতে চায় সরকার দেশের মানুষ সরকারি সেবায় অসন্তুষ্ট রাশিয়ার বিদ্যুৎ সাম্রাজ্যে ফাটল ভারতের গাফিলতি, হিলিতে কমেছে আমদানি ও রপ্তানি ডিআইজিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তা আটক ১৮৩ ফিলিস্তিনির মুক্তি দিল ইসরাইল, হাসপাতালে ভর্তি ৭ আলিকদম সীমান্তে ৩৩ রোহিঙ্গা আটক নিজ আসনে কেজরিওয়ালের ভরাডুবি, বিজেপিকে অভিনন্দন বড় অর্থনীতিবিদ হয়েও দেশের অর্থনীতিকে ভালো করতে পারেন নাই: মান্না সুপ্রিমকোর্টে নিরাপত্তা জোরদার দিল্লির মসনদ হারালেন কেজরিওয়াল, বিজেপির জয় জেলেনস্কির সঙ্গে আগামী সপ্তাহে দেখা করতে পারেন ট্রাম্প আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস জিম্মি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আবারও ব্যাপক শােডাউন হামাসের ট্রাম্পের গাজা খালির প্রস্তাব ‘পুরোপুরি খারিজ’ করলেন জার্মান চ্যান্সেলর ‘মুরগির মতো প্রাণ বাঁচিয়ে বিড়ালের মতো বেঁচে থাকুন’, কাকে বললেন চমক ত্রিদেশীয় সিরিজে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ড মালয়েশিয়ায় ৭৪ বাংলাদেশিসহ আটক ১১৬ অভিবাসী