দাবির মুখে সিদ্ধান্ত বদল এনবিআরের – ইউ এস বাংলা নিউজ




দাবির মুখে সিদ্ধান্ত বদল এনবিআরের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ | ৭:০৮ 9 ভিউ
অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ভ্যাট বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে (আইএমএফ) দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে এ পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। অবশ্য শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট-সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর পর জোরালো দাবির মুখে বুধবার রেস্তোরাঁ, মোবাইল ফোন, ওয়ার্কশপ, ওষুধের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে সংস্থাটি। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ১৫ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি অণুবিভাগ থেকে এনবিআরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জারি করা নতুন অধ্যাদেশের (ভ্যাট হার বৃদ্ধির) মাধ্যমে আইএমএফকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে

এনবিআর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে পারে। সূত্র জানায়, অক্টোবরে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় আইএমএফ ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ কিস্তি পেতে বাংলাদেশকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের শর্ত দেয়। একইসঙ্গে আইএমএফ নতুন শর্ত দেয় যে, বকেয়া রাজস্ব আদায় বা আদালতে চলমান মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে না। রাজস্ব হার (আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস) বাড়িয়ে-কমিয়ে বাজেট পদক্ষেপের মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে হবে এনবিআরকে। ঋণ পেতে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রতিনিধিদলটি সেই শর্ত মেনে নেয় এবং পরবর্তীতে এনবিআরকে বাজেট পদক্ষেপের মাধ্যমে

রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশ দেয়। রেওয়াজ অনুযায়ী, অর্থবছরের শুরুতে বাজেট প্রণয়নের সময় রাজস্ব হার বাড়ানো-কমানো হয়ে থাকে। কিন্তু আইএমএফের চতুর্থ কিস্তি পেতে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী প্রতিনিধিদলটি বাজেট পদক্ষেপ মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের শর্ত পূরণের অঙ্গীকার করে। এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, এ কারণে বাধ্য হয়েই অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট হার বাড়াতে হয়েছে। এখানে এনবিআরের দায় নেই। অথচ ভ্যাট হার বাড়ানোর পরে জনরোষের মুখে পড়েছে এনবিআর। নীতি প্রণয়নে জড়িত এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, আইএমএফের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা শুধু ঋণের কিস্তি প্রাপ্তিকে নিজেদের সফলতা হিসাবে বিবেচনা করেন। এক্ষেত্রে ব্যাংক বা রাজস্ব সংক্রান্ত যে কোনো শর্তই তারা মেনে আসেন। এই

শর্তপূরণ করতে গিয়ে এনবিআরের গৃহীত পদক্ষেপ অর্থনীতি ও সমাজে কী প্রভাব ফেলবে তা তারা মূল্যায়ন করেন না। যেমন আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভ্যাট হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি বুমেরাং হয়েছে। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, শুধু আইএমএফ নয়, অন্য সব আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যে কোনো ধরনের চুক্তি বা ঋণ চুক্তির নেগোসিয়েশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দুর্বলতা আছে। বাংলাদেশে সিঙ্গেল ভ্যাট হার প্রয়োজন, এতে দ্বিমত নেই। কিন্তু সেই হার কত হবে, সেটি অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা উচিত। হুট করেই অর্থবছরের মাঝামাঝি এমন কঠিন সময়ে এসে ভ্যাট হার বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই। আইএমএফের সঙ্গে

বৈঠকে এ ধরনের শর্ত মানার পূর্বে জনজীবনে তা কী প্রভাব ফেলবে সেটি তুলে ধরা উচিত ছিল। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ টিমের নেগোসিয়েশনের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক হার বৃদ্ধির পর জনরোষে পড়ে এনবিআর। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে ভ্যাট বৃদ্ধির তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। রেস্তোরাঁ এবং মোটরগাড়ির ওয়ার্কশপের মালিক-শ্রমিকরা এনবিআরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রেস্তোরাঁ, মোবাইল ফোন, ওয়ার্কশপ, ওষুধের বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করে চারটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি। এনবিআর জানিয়েছে, সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা সহজ করতে ওষুধের ব্যবসায়িক পর্যায়ে বৃদ্ধিকৃত ভ্যাটের হার প্রত্যাহার করে পূর্বের হার ২ দশমিক ৪ শতাংশ বলবৎ রাখা হয়েছে। ওষুধের ওপর অতিরিক্ত

আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করায় ওষুধ শিল্পের ধারাবাহিক বিকাশ বজায় থাকবে এবং সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি পাবে না। একইভাবে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহার এবং আইএসপি সেবার ওপর বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এতে ভোক্তাদের খরচ বৃদ্ধি পাবে না। এনবিআর বলছে, দেশের চলমান ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে মোবাইল ফোনের সিম/রিম কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে প্রদত্ত সেবার ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক এবং আইএসপি সেবার ওপর নতুন আরোপিত সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। ৯ জানুয়ারি রেস্তোরাঁ খাতের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ঢাকাসহ সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে

থ্রি-স্টার, ফোর-স্টার এবং ফাইভ স্টার হোটেল ব্যতীত অন্য সব রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে ভোক্তাদের রেস্তোরাঁয় খেতে আগের মতোই ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। একইসঙ্গে মোটর গাড়ির গ্যারেজ ও ওয়ার্কশপের ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। আড়ং, জেন্টাল পার্ক, টুয়েলভ, ইনফিনিটির মতো নিজস্ব ব্র্যান্ডের তৈরি পোশাকের ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ এবং ব্রান্ড ব্যতীত অন্য পোশাকের ওপর অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া মিষ্টান্ন ভান্ডারের ভ্যাট ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
কেন বয়সে বড় বউ বিয়ে করবেন! ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার ১ হাজার সেনা নিহত অতিরিক্ত ভাত খেলে শরীরে কী প্রভাব পড়ে? বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার শীত ও ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত, হাসপাতালে রোগীর চাপ এবার যাকাত দেওয়া যাবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে! রাজধানীর যেসব মার্কেট আজ বন্ধ, আপনি জানেন কি ? গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার ১২০টি মানব কঙ্কাল মার্কিন শুল্ক হুমকি, কানাডার অর্থনীতি রক্ষায় কে আসছে? বন্ধু ভারতীয়দের কেন বের করে দেবেন ট্রাম্প? চীন কি সত্যিই পানামা খাল পরিচালনা করে? মালয়েশিয়ায় প্রতারিত ৮ বাংলাদেশিকে উদ্ধার দাবির মুখে সিদ্ধান্ত বদল এনবিআরের ভাঙা ঘরে শতকোটি টাকার সম্পদ কচ্ছপের পিঠে স্বপ্নের যাত্রা সাবেক ২ নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা রাজশাহীতে বিএনপি নেতাদের দখল ও চাঁদাবাজি লাগাম টানা হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জে আটকে আছে সীমানাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতি স্বপ্ন ভাঙছে অনেকের, ফিরতে হবে দেশে