নতুন যুগের সূচনা
আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকেই শুরু হয়েছিল প্রক্রিয়া। কিন্তু সরাসরি সঞ্চালন লাইন না থাকায় এবং ভারতের করিডর ব্যবহারের অনুমতি না থাকায় দুই দেশের সম্মতি সত্ত্বেও আনা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে অন্তর্বর্তী সরকার সেই অসম্ভবকে সম্ভব করল। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছরের নানা প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে দেশটি থেকে বিদ্যুৎ এলো বাংলাদেশে। পূর্বে ভারতের সম্মতি না থাকলেও তাদের করিডর ব্যবহার করেই আনা হয়েছে বিদ্যুৎ। চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৫ মাস দৈনিক ৪০ মেগাওয়াট করে জলবিদ্যুৎ পাওয়া যাবে দেশটি থেকে। যার মূল্য পড়বে ইউনিট প্রতি ৮ দশমিক ১৭ রুপি। বছরের অন্য সময় এই বিদ্যুৎ না পাওয়া গেলেও দেশটি থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তুতি
চলছে। শুক্রবার একটি বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ত্রিপক্ষীয় একটি চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানো শুরু করে নেপাল। এর মাধ্যমে ভারতের পর তৃতীয় কোনো দেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ রপ্তানি করল হিমালয়ের দেশটি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অক্টোবরের শুরুতেই বিদ্যুৎ রপ্তানির এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল প্রতিবছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বাংলাদেশে। সেই হিসেবে চলতি বছর শুধু শুক্রবারই দেশে পাওয়া গেল নেপালের জলবিদ্যুৎ। তবে ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে বছরের পাঁচ মাস পাওয়া যাবে এই বিদ্যুৎ। অর্থাৎ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়েই ঢাকায় আসবে এই জলবিদ্যুৎ। তবে দেশটি থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া
চলছে জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে জুন-জুলাইয়ে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ থাকে। ওই সময়টায় আমাদের সংকট তৈরি হয়। তাই দেশটি থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর হয়তো এ লক্ষ্যে একটি ত্রিদেশীয় চুক্তি হতে পারে। যদি এটি হয় তা হলে ভারতের সম্মতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানের চতুর্পক্ষীয় চুক্তি হতে পারে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা যায়, দেশটি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠাবে তাদের দুটি কেন্দ্র থেকে। এর মধ্য ২৫ মেগাওয়াট ত্রিশূলি আর ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে চিলমি হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্ট থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক
কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সরাসরি বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই। তাই ভারতের সঞ্চালন লাইন হয়ে এই বিদ্যুৎ আসছে। তবে ভারতের গ্রিডের সঙ্গে বাংলাদেশের গ্রিডের সংযোগে খুব বেশি বাড়তি ক্যাপাসিটি না থাকায় নেপাল মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি সঞ্চালন লাইনের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হয় তা হলে নেপাল আরও বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ। তবে এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। দেশটির আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে ইতোমধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই বিদ্যুতের দাম পড়ছে প্রায় ১৪ টাকার মতো। এর প্রায় অর্ধেক মূল্যে যদি নেপালের বিদ্যুৎ বেশি পরিমাণ আমদানি করতে যায় তা হলে ভূরাজনৈতিক একটা প্রভাব
পড়বে নিশ্চয়ই। ভারতও যে খুব সহজে তখন করিডর ছাড় দেবে তা আমার মনে হয় না। এর আগে গত দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর যাবৎ চলছিল নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনার প্রক্রিয়া। প্রাথমকিভাবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ভারতের গ্রিড ব্যবহারের পূর্ণ অনুমতি না পাওয়ায় আটকে ছিল প্রক্রিয়াটি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলের শেষ সময়ে চরম প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। কিন্তু ভারত সরকারের নারাজির কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ (পঞ্চগড়) এবং ভারতের মাঝখানে ২২ কিলোমিটার একটা করিডর রয়েছে। যেটার নাম চিকেন নেক। ভারত এই করিডর দিয়ে একটি লাইন টেনে দিয়েছে। সব স্থাপনা ভারতের। কয়লা, তেল, গ্যাসের উচ্চ খরচের বিদ্যুৎ থেকে বের
হতে নানা বিকল্প উপায় খুঁজছে সরকার। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নানা কৌশলে ব্যস্ত বিদ্যুৎ বিভাগ। ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে জোর দেওয়া হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে। জলবিদ্যুৎ তুলনামূলকভাবে সস্তা ও পরিবেশবান্ধব হলেও বাংলাদেশে এর উৎপাদন সম্ভব না হওয়ায় নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ চালিয়ে আসছিল সরকার। নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতের একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতাও হয় এর আগে। ভারতের জিএমআর এনার্জি নেপালে ’আপার কারনালি’ প্রকল্পের আওতায় ৯০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। এই কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২০১৭ সালে জিএমআরইয়ের সঙ্গে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ভারত হয়ে আন্তঃদেশীয় গ্রিড লাইনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ আনার পরিকল্পনা করা হয়। তবে এর আগেই আরও ওই বিদ্যুতের বাইরেও দেশটি থেকে আরও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে। গত বছর ভারতের নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমলের একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের সম্মতি সাপেক্ষে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই দিন বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই চুক্তির ফলে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য তারা অনেক দিন ধরেই সচেষ্ট ছিলেন। অবশেষে তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নে আঞ্চলিক উপকার হচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অঞ্চল উপকৃত হলে সেটাই হয়ে উঠে প্রকৃত প্রতিবেশি নীতি। বিনয় কোয়াত্রা বলেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে সহযোগিতা ভারত ও অন্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। সামগ্রিকভাবে সবাই উপকৃত হয়। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল সবাই। আমাদের এই অঞ্চলে এর প্রাচুর্য রয়েছে। সুযোগের সেই সদ্ব্যবহারে সচেষ্ট হওয়াই সহযোগিতার ধর্ম। এর আগে ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ। ওই সমঝোতার আওতায় নেপাল থেকে ভারত হয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি ছাড়াও নেপালের বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের সরকারি বা বেসরকারি কোম্পানির বিনিয়োগের বিষয়গুলো রয়েছে। নেপালের রাজধানী কাঠমা-ুতে দেশটির জ্বালানি, পানি ও সেচ মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও নেপালের জ্বালামি মন্ত্রী বর্ষা মান পুন অনন্ত।
চলছে। শুক্রবার একটি বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের ত্রিপক্ষীয় একটি চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানো শুরু করে নেপাল। এর মাধ্যমে ভারতের পর তৃতীয় কোনো দেশে প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ রপ্তানি করল হিমালয়ের দেশটি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অক্টোবরের শুরুতেই বিদ্যুৎ রপ্তানির এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তিটি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, নেপাল প্রতিবছরের ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বাংলাদেশে। সেই হিসেবে চলতি বছর শুধু শুক্রবারই দেশে পাওয়া গেল নেপালের জলবিদ্যুৎ। তবে ২০২৫ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে বছরের পাঁচ মাস পাওয়া যাবে এই বিদ্যুৎ। অর্থাৎ বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়েই ঢাকায় আসবে এই জলবিদ্যুৎ। তবে দেশটি থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া
চলছে জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে জুন-জুলাইয়ে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ থাকে। ওই সময়টায় আমাদের সংকট তৈরি হয়। তাই দেশটি থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর হয়তো এ লক্ষ্যে একটি ত্রিদেশীয় চুক্তি হতে পারে। যদি এটি হয় তা হলে ভারতের সম্মতি সাপেক্ষে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানের চতুর্পক্ষীয় চুক্তি হতে পারে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা যায়, দেশটি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠাবে তাদের দুটি কেন্দ্র থেকে। এর মধ্য ২৫ মেগাওয়াট ত্রিশূলি আর ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে চিলমি হাইড্রোপাওয়ার প্রজেক্ট থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিবির এক
কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সরাসরি বৈদ্যুতিক সংযোগ নেই। তাই ভারতের সঞ্চালন লাইন হয়ে এই বিদ্যুৎ আসছে। তবে ভারতের গ্রিডের সঙ্গে বাংলাদেশের গ্রিডের সংযোগে খুব বেশি বাড়তি ক্যাপাসিটি না থাকায় নেপাল মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি সঞ্চালন লাইনের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হয় তা হলে নেপাল আরও বেশি পরিমাণে বিদ্যুৎ। তবে এক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান নিয়ে কিছুটা শঙ্কা রয়েছে। দেশটির আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে ইতোমধ্যে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই বিদ্যুতের দাম পড়ছে প্রায় ১৪ টাকার মতো। এর প্রায় অর্ধেক মূল্যে যদি নেপালের বিদ্যুৎ বেশি পরিমাণ আমদানি করতে যায় তা হলে ভূরাজনৈতিক একটা প্রভাব
পড়বে নিশ্চয়ই। ভারতও যে খুব সহজে তখন করিডর ছাড় দেবে তা আমার মনে হয় না। এর আগে গত দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর যাবৎ চলছিল নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনার প্রক্রিয়া। প্রাথমকিভাবে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হলেও ভারতের গ্রিড ব্যবহারের পূর্ণ অনুমতি না পাওয়ায় আটকে ছিল প্রক্রিয়াটি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলের শেষ সময়ে চরম প্রস্তুতিও নেওয়া হয়। কিন্তু ভারত সরকারের নারাজির কারণে বাস্তবায়িত হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ (পঞ্চগড়) এবং ভারতের মাঝখানে ২২ কিলোমিটার একটা করিডর রয়েছে। যেটার নাম চিকেন নেক। ভারত এই করিডর দিয়ে একটি লাইন টেনে দিয়েছে। সব স্থাপনা ভারতের। কয়লা, তেল, গ্যাসের উচ্চ খরচের বিদ্যুৎ থেকে বের
হতে নানা বিকল্প উপায় খুঁজছে সরকার। নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নানা কৌশলে ব্যস্ত বিদ্যুৎ বিভাগ। ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরে জোর দেওয়া হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে। জলবিদ্যুৎ তুলনামূলকভাবে সস্তা ও পরিবেশবান্ধব হলেও বাংলাদেশে এর উৎপাদন সম্ভব না হওয়ায় নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে এ বিষয়ে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ চালিয়ে আসছিল সরকার। নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে ভারতের একটি কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতাও হয় এর আগে। ভারতের জিএমআর এনার্জি নেপালে ’আপার কারনালি’ প্রকল্পের আওতায় ৯০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। এই কেন্দ্র থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার জন্য ২০১৭ সালে জিএমআরইয়ের সঙ্গে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করে
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ভারত হয়ে আন্তঃদেশীয় গ্রিড লাইনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ আনার পরিকল্পনা করা হয়। তবে এর আগেই আরও ওই বিদ্যুতের বাইরেও দেশটি থেকে আরও ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে। গত বছর ভারতের নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমলের একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের সম্মতি সাপেক্ষে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই দিন বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই চুক্তির ফলে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। নেপালে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভারত ছাড়াও বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য তারা অনেক দিন ধরেই সচেষ্ট ছিলেন। অবশেষে তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নে আঞ্চলিক উপকার হচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অঞ্চল উপকৃত হলে সেটাই হয়ে উঠে প্রকৃত প্রতিবেশি নীতি। বিনয় কোয়াত্রা বলেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে সহযোগিতা ভারত ও অন্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। সামগ্রিকভাবে সবাই উপকৃত হয়। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল সবাই। আমাদের এই অঞ্চলে এর প্রাচুর্য রয়েছে। সুযোগের সেই সদ্ব্যবহারে সচেষ্ট হওয়াই সহযোগিতার ধর্ম। এর আগে ২০১৮ সালে বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করে বাংলাদেশ। ওই সমঝোতার আওতায় নেপাল থেকে ভারত হয়ে জলবিদ্যুৎ আমদানি ছাড়াও নেপালের বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের সরকারি বা বেসরকারি কোম্পানির বিনিয়োগের বিষয়গুলো রয়েছে। নেপালের রাজধানী কাঠমা-ুতে দেশটির জ্বালানি, পানি ও সেচ মন্ত্রণালয়ের এক অনুষ্ঠানে ওই সমঝোতা স্মারকে সই করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও নেপালের জ্বালামি মন্ত্রী বর্ষা মান পুন অনন্ত।