 
                                                        
                                ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স                            
                        আরও খবর
 
                                জেএমবিএফ-এর প্রতিবেদন: অন্তবর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশে আইনজীবীদের ওপর দমন-পীড়নের চিত্র
 
                                জামায়াত কি আদৌ মওদুদীর ‘বিকৃত আকিদা’ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছে? নাকি আগের পথেই আছে?
 
                                শেখ হাসিনা: যারা আগুন দিয়েছে, লুটপাট করেছে, তাদের চিহ্নিত করে রাখুন, পাই পাই হিসাব নেওয়া হবে
 
                                বৈদেশিক অর্থায়ন ব্যর্থ, তহবিলের টাকায় ইস্টার্ন রিফাইনারি-২ নির্মাণের সিদ্ধান্ত
 
                                পুলিশ-র্যাবের পক্ষে শেখ হাসিনার শক্ত অবস্থান: ‘আন্দোলনকারীরাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যায়’
 
                                ডিসেম্বরে খাদ্যসংকটে পড়বে ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ: ঝুঁকির মুখে ১৬ লাখ শিশু
 
                                বিজিএমইএ’র বিবৃতি: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও উপ-প্রেস সচিবের বক্তব্য বিভ্রান্তিকর
শীত আসার আগেই রাজধানীতে তীব্র গ্যাস সংকট: অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ নাগরিকরা
 
                             
                                               
                    
                         শীত এখনো পুরোপুরি নামেনি। অথচ রাজধানীজুড়ে তীব্র গ্যাস সংকটে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। সকাল থেকে রাত—কোনো সময়েই রান্নার জন্য পর্যাপ্ত গ্যাস মিলছে না। এতে নিত্যদিনের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। বাধ্য হয়ে কেউ বিদ্যুৎচালিত হিটার, কেউবা সিলিন্ডার গ্যাসের ওপর নির্ভর করছেন। এতে গৃহস্থালির ব্যয়ও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
রাজধানীর আজিমপুর, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, আরামবাগ, খিলগাঁও, বাড্ডা ও বাসাবোসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন—এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্যাসের চাপ প্রায় নেই বললেই চলে। দিনে কিছু সময় গ্যাস এলেও চুলা জ্বলে খুব দুর্বলভাবে। ফলে রান্না করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
ঢাকা কলেজের আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আবাসিক হলের ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন বলেন, “হোস্টেলের রান্নার 
জন্য গ্যাসের চুলা ব্যবহার করি। কিন্তু এক মাস ধরে চুলা জ্বলে না। বাধ্য হয়ে কাঠ দিয়ে রান্না করছি। এমন অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। শীত তো এখনো আসেনি, এখনই গ্যাস পাই না।” মিরপুরের বাসিন্দা গৃহিণী ইতি আক্তার বলেন, “গ্যাস নেই বললেই চলে। ভোরে উঠে রান্না করতে হয়, তাও অনেক কষ্টে। সকাল আটটার পর আর গ্যাসই থাকে না।” খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা জেসমিন বলেন, “প্রতি মাসে বিল দিতে হয়, অথচ গ্যাস পাই না। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে। এখন গ্যাসের বিল ও সিলিন্ডারের খরচ—দুই দিকেই ব্যয় বাড়ছে। অল্প আয়ের পরিবারের জন্য এটা বড় কষ্ট।” যাত্রাবাড়ীর শ্রমজীবী ইসরাফিল আলমের অভিযোগ, “গ্যাসের বিল তো ঠিকই দিই, কিন্তু রান্না
করতে হয় বিদ্যুৎচালিত হিটারে। দুই দিক থেকেই খরচ বাড়ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটা অন্যায়।” তিতাসের সিস্টেম লস বেড়েই চলছে ঢাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির তথ্যে দেখা যায়, বছরের পর বছর সিস্টেম লস বেড়েই চলেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গ্যাসের সিস্টেম লস ছিল ৩০৮.৩২ মিলিয়ন ঘনমিটার (এমএমসিএম)। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ৩২৩.৬৪ এমএমসিএম, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৮০৬.৫৮৫ এমএমসিএম, আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভয়াবহভাবে বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৯৬ এমএমসিএম। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইপলাইনে ফাটল, সংযোগস্থলে ত্রুটি, পুরোনো অবকাঠামো, অবৈধ সংযোগ, মিটারের ত্রুটি ও গ্যাস চুরির কারণে এই সিস্টেম লস আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। একজন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, “তিতাস, পেট্রোবাংলা ও বিউআরসি—সব প্রতিষ্ঠানের
কাজ জনগণের জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা বরং এই অব্যবস্থাপনাকে সুরক্ষা দিচ্ছে। এভাবে কোনো দেশের জ্বালানি খাত টেকসই হতে পারে না।” সরকারি নীতিতেও অবহেলিত আবাসিক খাত তিতাসের অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান বলেন, “এখন গ্যাসের সাপ্লাই কম আছে। চাহিদা ১৯০০ এমএমসিএফের বেশি, কিন্তু আমরা পাচ্ছি মাত্র ১৫৫০ এমএমসিএফ।” তিনি আরও জানান, প্রতিবছর সরকারের এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা থাকে। তবে গরমকালে বেশি কার্গো আনা হয়, শীতকালে কম। ফলে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়। এছাড়া স্থানীয় গ্যাস উৎপাদনও কমেছে। সরকারি অগ্রাধিকার তালিকা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহে প্রথমে বিদ্যুৎ, এরপর সার, শিল্প, ক্যাপটিভ এবং সর্বশেষে আবাসিক খাত রাখা হয়। ফলে সাধারণ ভোক্তারা
পড়ছেন সবচেয়ে বিপাকে। ক্ষুব্ধ নাগরিক, দায় এড়িয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীর অভিযোগ, প্রতি মাসে বিল পরিশোধের পরও গ্যাস না পাওয়া চরম অবিচার। অনেকে বলছেন, সরকারি সংস্থার উদাসীনতা ও পরিকল্পনাহীনতার কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নাগরিক সমাজের প্রশ্ন— গ্যাস না থাকলে বিল কেন দিতে হবে? অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো দায় নিচ্ছে না, বরং দায় এড়িয়ে চলছে নীতিগত ‘অগ্রাধিকারের’ অজুহাতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অবকাঠামো উন্নয়ন ও তদারকির ঘাটতির পাশাপাশি গ্যাস ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, চুরি ও অব্যবস্থাপনাই সংকটের মূল কারণ। তবুও এই বিষয়ে সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। শীত এখনো আসেনি, অথচ রাজধানীজুড়ে গ্যাসের এমন সংকট কেবল নাগরিক জীবনের ব্যর্থ চিত্রই নয়—এটি সরকারের পরিকল্পনাহীনতা, তিতাসের অদক্ষতা ও প্রশাসনিক অবহেলারও
স্পষ্ট প্রতিফলন। গ্যাস বিল ঠিকই আদায় হচ্ছে, কিন্তু সেবা পাচ্ছে না জনগণ। এই বাস্তবতা এখন ঢাকাবাসীর কাছে এক প্রাত্যহিক যন্ত্রণার নাম—গ্যাস নেই, চুলা জ্বলে না, অথচ বিল ঠিকই যায়।
                    
                                                          
                    
                    
                                    জন্য গ্যাসের চুলা ব্যবহার করি। কিন্তু এক মাস ধরে চুলা জ্বলে না। বাধ্য হয়ে কাঠ দিয়ে রান্না করছি। এমন অবস্থা আগে কখনো দেখিনি। শীত তো এখনো আসেনি, এখনই গ্যাস পাই না।” মিরপুরের বাসিন্দা গৃহিণী ইতি আক্তার বলেন, “গ্যাস নেই বললেই চলে। ভোরে উঠে রান্না করতে হয়, তাও অনেক কষ্টে। সকাল আটটার পর আর গ্যাসই থাকে না।” খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা জেসমিন বলেন, “প্রতি মাসে বিল দিতে হয়, অথচ গ্যাস পাই না। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার কিনতে হয়েছে। এখন গ্যাসের বিল ও সিলিন্ডারের খরচ—দুই দিকেই ব্যয় বাড়ছে। অল্প আয়ের পরিবারের জন্য এটা বড় কষ্ট।” যাত্রাবাড়ীর শ্রমজীবী ইসরাফিল আলমের অভিযোগ, “গ্যাসের বিল তো ঠিকই দিই, কিন্তু রান্না
করতে হয় বিদ্যুৎচালিত হিটারে। দুই দিক থেকেই খরচ বাড়ছে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এটা অন্যায়।” তিতাসের সিস্টেম লস বেড়েই চলছে ঢাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির তথ্যে দেখা যায়, বছরের পর বছর সিস্টেম লস বেড়েই চলেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে গ্যাসের সিস্টেম লস ছিল ৩০৮.৩২ মিলিয়ন ঘনমিটার (এমএমসিএম)। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ৩২৩.৬৪ এমএমসিএম, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৮০৬.৫৮৫ এমএমসিএম, আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভয়াবহভাবে বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭৯৬ এমএমসিএম। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইপলাইনে ফাটল, সংযোগস্থলে ত্রুটি, পুরোনো অবকাঠামো, অবৈধ সংযোগ, মিটারের ত্রুটি ও গ্যাস চুরির কারণে এই সিস্টেম লস আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। একজন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, “তিতাস, পেট্রোবাংলা ও বিউআরসি—সব প্রতিষ্ঠানের
কাজ জনগণের জ্বালানি অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা বরং এই অব্যবস্থাপনাকে সুরক্ষা দিচ্ছে। এভাবে কোনো দেশের জ্বালানি খাত টেকসই হতে পারে না।” সরকারি নীতিতেও অবহেলিত আবাসিক খাত তিতাসের অপারেশন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান বলেন, “এখন গ্যাসের সাপ্লাই কম আছে। চাহিদা ১৯০০ এমএমসিএফের বেশি, কিন্তু আমরা পাচ্ছি মাত্র ১৫৫০ এমএমসিএফ।” তিনি আরও জানান, প্রতিবছর সরকারের এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা থাকে। তবে গরমকালে বেশি কার্গো আনা হয়, শীতকালে কম। ফলে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়। এছাড়া স্থানীয় গ্যাস উৎপাদনও কমেছে। সরকারি অগ্রাধিকার তালিকা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহে প্রথমে বিদ্যুৎ, এরপর সার, শিল্প, ক্যাপটিভ এবং সর্বশেষে আবাসিক খাত রাখা হয়। ফলে সাধারণ ভোক্তারা
পড়ছেন সবচেয়ে বিপাকে। ক্ষুব্ধ নাগরিক, দায় এড়িয়ে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ রাজধানীবাসীর অভিযোগ, প্রতি মাসে বিল পরিশোধের পরও গ্যাস না পাওয়া চরম অবিচার। অনেকে বলছেন, সরকারি সংস্থার উদাসীনতা ও পরিকল্পনাহীনতার কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। নাগরিক সমাজের প্রশ্ন— গ্যাস না থাকলে বিল কেন দিতে হবে? অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো দায় নিচ্ছে না, বরং দায় এড়িয়ে চলছে নীতিগত ‘অগ্রাধিকারের’ অজুহাতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অবকাঠামো উন্নয়ন ও তদারকির ঘাটতির পাশাপাশি গ্যাস ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, চুরি ও অব্যবস্থাপনাই সংকটের মূল কারণ। তবুও এই বিষয়ে সরকারের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। শীত এখনো আসেনি, অথচ রাজধানীজুড়ে গ্যাসের এমন সংকট কেবল নাগরিক জীবনের ব্যর্থ চিত্রই নয়—এটি সরকারের পরিকল্পনাহীনতা, তিতাসের অদক্ষতা ও প্রশাসনিক অবহেলারও
স্পষ্ট প্রতিফলন। গ্যাস বিল ঠিকই আদায় হচ্ছে, কিন্তু সেবা পাচ্ছে না জনগণ। এই বাস্তবতা এখন ঢাকাবাসীর কাছে এক প্রাত্যহিক যন্ত্রণার নাম—গ্যাস নেই, চুলা জ্বলে না, অথচ বিল ঠিকই যায়।



