ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম স্থবিরতা: ঋণের উচ্চ সুদ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় থমকে গেছে বিনিয়োগ – ইউ এস বাংলা নিউজ




ব্যবসা-বাণিজ্যে চরম স্থবিরতা: ঋণের উচ্চ সুদ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় থমকে গেছে বিনিয়োগ

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৪ জুন, ২০২৫ | ৫:০৬ 16 ভিউ
গত বছর সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই মন্থর হয়ে গেছে অর্থনীতির চাকা। ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, উদ্যোক্তারা নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ, বড় শিল্পপতিদের জিম্মি করে নানা অনৈতিক সুবিধা হাসিল করে নিচ্ছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি দুষ্টচক্র। অর্থনীতিবিদের মতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও শিল্পোৎপাদন এখন এক ধরনের স্থবিরতার মুখে। উদ্যোক্তাদের আস্থাহীনতা, ডলার সংকট, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতির পাশাপাশি উচ্চ সুদহারের কারণে ব্যবসা সম্প্রসারণ ও নতুন বিনিয়োগে ভয়ঙ্কর ধস দেখা দিয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, বাড়ছে বেকারত্ব। বিশ্লেষকদের মতে, ইউনূস সরকারের অদক্ষতা-অব্যবস্থাপনা এবং শিল্পোদ্যোক্তাদের ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত নিপীড়নের কারণে অনেক কারখানা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি সরকারি

পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবসা দখল করা হয়েছে। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে কারখানা। লুট করা হয়েছে বিপুল সম্পদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭.৫০ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৪০ শতাংশ কম। মার্চে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৫৭ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ৬.৮২ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ৭.১৫ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউনূস সরকারের মুদ্রানীতির কারণে ঋণগ্রহণ কমে গেছে, ফলে বিনিয়োগও থমকে গেছে। অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, “বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থানও তৈরি হবে না এবং দারিদ্র্য বিমোচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।” ব্যাংকগুলো বর্তমানে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে। একদিকে

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর মুদ্রানীতি, অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিসুদহার ১০ শতাংশে ধরে রেখেছে। ফলে আমানতকারীরা কিছুটা লাভবান হলেও ব্যবসায়ী ও ব্যাংক উভয়ই বিপাকে পড়েছে। এই অবস্থা নিরসনের কোনও কার্যকর উদ্যোগ নেই। বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় কারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানিও কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) মূলধনী যন্ত্র আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে ১৪১ কোটি ৯১ লাখ ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭.৪৬ শতাংশ কম। ব্যাংক খাতের বিশ্লেষক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ. খান বলেন, “উচ্চ সুদের কারণে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। রাজনৈতিক

অনিশ্চয়তা এবং দীর্ঘমেয়াদি নীতির অভাবও বড় কারণ। ব্যাংক গুলোও সংকটে পড়েছে।” ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, “বর্তমানে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিনিয়োগ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ঋণের প্রবৃদ্ধি দ্বিগুণ করার পাশাপাশি মন্দ ঋণ নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা এবং সুদহার কমানো জরুরি।” বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, “ব্যবসার পরিবেশ এখনো স্থিতিশীল নয়। উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদেরও ভয় কাটেনি।” এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত নীতিসুদহার কমানো হবে না। তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে সুদহার কমানো হবে

না, আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।” অন্যদিকে, আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক ঋণ থেকে সরকার ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ শতাংশ বেশি। বিশ্লেষকদের মতে, এতে বেসরকারি খাতের জন্য ব্যাংক ঋণের সুযোগ আরও কমে যেতে পারে। বিজিএমইএর নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, “বর্তমানে অন্তবর্তী সরকার থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। নির্বাচিত ও গ্রহণযোগ্য সরকার গঠন হলেই বিনিয়োগ বাড়বে এবং অর্থনীতিতে গতি ফিরবে।” বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা এবং রাজনীতিবিদদরা জানান, ঋণের প্রবাহ বাড়াতে এবং অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদের হার নিয়ন্ত্রণ, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ

নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নিরাপদ পরিবেশ দিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
নীরবে বাগদান, মুখ খুললেন ডুয়া লিপা ইরানি হামলার ভয়ে বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা আইআরজিসির নতুন এয়ারস্পেস কমান্ডার হলেন মজিদ মোসাভি ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে কে জিতবে, জানালেন রুশ বিশ্লেষক ইরানের হামলায় ইসরাইলের ৭ সেনা আহত ইসরাইলে হামলা ইরানের, যা বলছে হামাস আষাঢ়ের প্রথম দিন থেকে সারা দেশে টানা বৃষ্টির আভাস অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দ. আফ্রিকার আলোচনাকে স্বাগত জানালেও যৌথ বিবৃতি নিয়ে উদ্বেগ উত্তরায় ফিল্মি স্টাইলে র‌্যাব পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই কাবরেরাকে সরিয়ে ১৮ কোটি মানুষকে মুক্তি দিতে চাই, বললেন বাফুফে সদস্য সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি আর লিজ দেওয়া হবে না: রিজওয়ানা ইরানের হামলায় ইসরায়েলে ধ্বংসযজ্ঞ, আহত অর্ধশতাধিক দিনাজপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, ৫ যাত্রী নিহত পদ্মা সেতুতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, চালকসহ নিহত ২ সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আনার বার্তা গণতন্ত্রের জন্য সুসংবাদ: মির্জা ফখরুল নতুন ‘কর্মসংস্থান অধিদফতর’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ‘জুলাই সনদ’ কার্যকরের আগে নির্বাচনের তারিখ জনগণ মানবে না: এনসিপি ঈদের ছুটির শেষ মুহূর্তে রমনায় দর্শনার্থীদের বাঁধভাঙা আনন্দ মধুমাসে রাজধানীর বাজারে ফলের বাহার