বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ‘গুপ্তচর ক্যামেরা’ বানিয়ে সাড়া ফেলল চীন – ইউ এস বাংলা নিউজ




বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ‘গুপ্তচর ক্যামেরা’ বানিয়ে সাড়া ফেলল চীন

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ | ৮:৫০ 93 ভিউ
চীনের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি অপটিক্যাল ইমেজিং প্রযুক্তিতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন। অত্যন্ত শক্তিশালী এক লেজার ক্যামেরার মাধ্যমে তারা নজরদারি তথা গুপ্তচরবৃত্তির বৈশ্বিক মানকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে চলেছেন। এই প্রযুক্তি বেইজিংকে বিদেশি সামরিক উপগ্রহগুলোর কার্যক্রম নজরদারির ক্ষেত্রে নজিরবিহীন সুবিধা দিতে পারে। এমনকি নিম্ন-কক্ষপথ (low-Earth orbit) থেকে মানবমুখের মতো সূক্ষ্ম বিশদও শনাক্ত করতে পারে। চীনা অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের অ্যারোস্পেস ইনফরমেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক অতি সম্প্রতি ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে মিলিমিটার-পর্যায়ের স্পষ্ট ছবি ধারণ করতে সক্ষম হয়েছেন। যা এতদিন পর্যন্ত অসম্ভব বলে মনে করা হতো। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিয়ে সম্প্রতি চাইনিজ জার্নাল অব লেজারস-এ একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষাটি কিভাবে পরিচালিত হয়? বিজ্ঞানীরা চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিংহাই

লেক এলাকায় পরীক্ষাটি পরিচালনা করেন। লেকের উত্তর তীরে একটি সিন্থেটিক অ্যাপারচার লাইডার সিস্টেম স্থাপন করা হয়, যা লেজার-ভিত্তিক চিত্রগ্রহণের একটি উন্নততর পদ্ধতি। ডিভাইসটি ১০১.৮ কিলোমিটার দূরে স্থাপিত প্রতিফলিত প্রিজমের সারিকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে চিত্র সংগ্রহ করে। আদর্শ আবহাওয়ার (পরিষ্কার আকাশ, কম বাতাস) কারণে ডিভাইসটি নিখুঁতভাবে ১.৭ মিলিমিটার (১/১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত সূক্ষ্ম বিশদ ধরতে সক্ষম হয়। এটি দূরত্ব পরিমাপেও অত্যন্ত নিখুঁত—শুধুমাত্র ১৫.৬ মিলিমিটারের পার্থক্য দেখা গেছে, যা বর্তমান গুপ্তচর ক্যামেরা ও টেলিস্কোপের তুলনায় ১০০ গুণ উন্নত। প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন কী কী? গবেষকরা একাধিক অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন— বর্ধিত অপটিক্যাল অ্যাপারচার: ৪×৪ মাইক্রো-লেন্স গ্রিড ব্যবহার করে লেজার বিমের বিস্তার বাড়ানো হয়েছে। এতে অপটিক্যাল অ্যাপারচার ১৭.২ মিমি থেকে ৬৮.৮

মিমিতে উন্নীত হয়, যা সাধারণত অ্যাপারচার ও দৃষ্টিক্ষেত্রের মধ্যে বিরাজমান সীমাবদ্ধতা দূর করে। উন্নত লেজার সংকেত: চওড়া ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড (১০ গিগাহার্টজ-এর বেশি) ব্যবহার করে সূক্ষ্ম রেঞ্জ রেজল্যুশন অর্জন করা হয়েছে। সংকীর্ণ রঙের স্পেকট্রামে লেজার রশ্মি ধরে রেখে আড়াআড়ি বিশদ আরও স্পষ্ট করা হয়েছে। শব্দ কমানোর জন্য উন্নত অ্যালগরিদম: বিশেষ অ্যালগরিদম ব্যবহার করে অপটিক্যাল শব্দ কমিয়ে আনা হয়েছে ১০,০০০ গুণ, ফলে দূরবর্তী বস্তুর খুব ক্ষীণ সংকেতও ধরা সম্ভব হয়েছে। অত্যন্ত শক্তিশালী লেজার: প্রচলিত লাইডার সিস্টেমের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী ১০৩ ওয়াটের লেজার ব্যবহার করা হয়েছে, যা বিশাল পরিমাণ ডেটা দ্রুত প্রসেস করতে পারে। এই প্রযুক্তির সামরিক গুরুত্ব কতটা? বেইজিং-ভিত্তিক একজন ইমেজিং বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ‘এটি শুধু স্যাটেলাইটই নজরদারী করবে

না—এর সিরিয়াল নম্বরও পড়তে পারবে!’ এতো উচ্চ রেজল্যুশনে—উপগ্রহের ক্ষুদ্র ক্ষয়ক্ষতি (যেমন- মাইক্রোমিটিওরয়েডের আঘাত) শনাক্ত করা যাবে। উপগ্রহের সেন্সর ও পেলোড (সজ্জিত যন্ত্রাংশ) চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এই প্রযুক্তি মাইক্রোওয়েভ-ভিত্তিক সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডারের নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি হলেও, অপটিক্যাল তরঙ্গদৈর্ঘ্যে কাজ করার কারণে এটি অনেক বেশি স্বচ্ছ ছবি তুলতে সক্ষম। এখন পর্যন্ত এ ধরনের প্রযুক্তির সবচেয়ে উন্নত নজির ছিল— ২০১১ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা ঠিকাদার লকহিড মার্টিন মাত্র ১.৬ কিলোমিটার দূর থেকে ২ সেন্টিমিটার রেজল্যুশন অর্জন করেছিল। পরে চীনের বিজ্ঞানীরা ৬.৯ কিলোমিটার দূর থেকে ৫ সেন্টিমিটার রেজল্যুশন অর্জন করতে সক্ষম হন। এবার চীনা গবেষকরা ১০০ কিলোমিটার দূর থেকে মিলিমিটার-পর্যায়ের রেজল্যুশন অর্জন করেছেন, যা একটি বিশাল

সাফল্য। প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা কী কী? তবে, বাস্তব পরিস্থিতিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে— আবহাওয়ার ওপর নির্ভরতা: লেজার ইমেজিংয়ের গুণমান নির্ভর করে আবহাওয়ার স্বচ্ছতা, মেঘের উপস্থিতি ও বাতাসের গতির ওপর। গতিশীল লক্ষ্যের ক্ষেত্রে জটিলতা: চলমান লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করার জন্য অত্যন্ত নিখুঁত যান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রয়োজন, যা তৈরি করা সহজ নয়। এই নতুন লেজার-ভিত্তিক গুপ্তচর ক্যামেরা চীনকে নজরদারি প্রযুক্তির শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে সামরিক পর্যায়ে এটি বিপ্লব ঘটাতে পারে—বিদেশি উপগ্রহের ক্ষুদ্রতম বিবরণ শনাক্ত করা, স্যাটেলাইটের সেন্সর চিহ্নিত করা, এমনকি মহাকাশযানের ক্ষতি নির্ধারণ করার মতো কাজেও এটি ব্যবহৃত হতে পারে। তবে বাস্তবিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে আবহাওয়া ও লক্ষ্যের গতি সংক্রান্ত সীমাবদ্ধতা এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সূত্র: সাউথ

চায়না মর্নিং পোস্ট

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
সমুচা না আনায় স্বামীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন স্ত্রী ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনব না : হাইকোর্ট দি‌নে বাংলা‌দে‌শি‌দের ২০টি স্টাডি ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দে‌বে ইতা‌লি দূতাবাস হারানো এনআইডি তুলতে আর লাগবে না জিডি ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ চবি শিক্ষার্থীর মাথায় সতর্কবার্তা প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে উত্তাল চবি ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি ভাঙার হুঁশিয়ারি দিল এক মুসলিম দেশ চট্টগ্রাম নগরজুড়ে চলছে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জা বৃষ্টি ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা রেকর্ড ছুঁয়ে কমলো স্বর্ণের দাম তেল খাতে আবার শক্তিশালী হতে পারবে সিরিয়া? কিমের প্রিয় কন্যাকে নিয়ে চীন সফর, কেন এত আলোচনা? বিশেষ কর সুবিধা চায় প্রশাসন ক্যাডার মালিবাগে সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ও মালিকের বাসায় হামলা-ভাঙচুর চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে কমেছে চালের দাম দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড়বৃষ্টি বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ ৪ সেপ্টেম্বর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে ০৪ সেপ্টেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি এখনো নিয়োগ হয়নি সেই ৫৩৬ পুলিশের