নেতানিয়াহু গাজায় সেনাদের যুদ্ধাপরাধে পাঠাচ্ছেন, দাবি সাবেক সেনাপ্রধানের – ইউ এস বাংলা নিউজ




নেতানিয়াহু গাজায় সেনাদের যুদ্ধাপরাধে পাঠাচ্ছেন, দাবি সাবেক সেনাপ্রধানের

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ মে, ২০২৫ | ১০:৩১ 24 ভিউ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে সরাসরি ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়েছেন দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান মোশে ইয়ালোন। তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সেনাপ্রধান এয়াল জামিরের তীব্র সমালোচনা করেছেন। ইয়ালোন দাবি করেছেন, বর্তমান ইসরায়েলি সেনাপ্রধান ‘তার সেনাদের গাজায় যুদ্ধাপরাধ করতে পাঠাচ্ছেন’, আর সরকার ‘ইহুদি নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত’ হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়ানেটে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোশে ইয়ালোন বলেন, ইসরায়েলি সরকার এখন তার সেনাদের এমন নির্দেশ দিচ্ছে যা আন্তর্জাতিক আইনের সস্পূর্ণ লঙ্ঘন। তিনি এই মন্তব্যে গাজার পরিস্থিতিকে চরম উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেন, ইসরায়েল এখন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নাম করে বর্বরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথে হাঁটছে। মোশে ইয়ালোন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর

উদ্দেশ্যে সরাসরি বলেন, আপনি সেনাদের যুদ্ধাপরাধ করতে পাঠাচ্ছেন। তিনি ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানে সেনাদের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে রাজনৈতিকভাবে দায়ী করেছেন। ইয়ালোনের মতে, ইসরায়েল গাজার জনগণের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত নিধন’ অভিযান চালাচ্ছে, যা কোনোভাবেই বৈধ নয়। ইয়ালোন আরও বলেন, গাজার যেসব ঘটনা ঘটছে, তা শুধু যুদ্ধ নয়, এটি একটি পরিকল্পিত মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইসরায়েলের সরকার আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি কাজ করছে এবং এটি একটি শঙ্কার বিষয়। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি এই ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকে, তবে এটি শুধু ইসরায়েলের অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করবে না, বরং তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। মোশে ইয়ালোন দেশটির বর্তমান সেনাপ্রধান

এয়াল জামিরকে অভিযুক্ত করেন এবং তাকে নিয়ে বলেন, তিনি সেনাপ্রধান হিসেবে ‘স্পষ্টভাবে কোনো অবৈধ আদেশ’ প্রতিহত করছেন না। বরং, বর্তমান সেনাপ্রধান তার অধীনে ‘সেনাদের যুদ্ধাপরাধ করতে নির্দেশ দিচ্ছেন।’ ইয়ালোন বলেন, যুদ্ধের সময় একজন সেনাপ্রধানের দায়িত্ব হচ্ছে, সৈন্যদের অবৈধ আদেশ থেকে রক্ষা করা। কিন্তু এই সেনাপ্রধান তা করছেন না। এছাড়া, তিনি মন্তব্য করেন, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের নীতি ও তাদের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত দায়ী। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, এটা একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিস্থিতি যেখানে সেনাদের এমন কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, যা শুধু ইসরায়েলকে নয়, গোটা বিশ্বকেই বিপদগ্রস্ত করতে পারে। ইয়ালোন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ও ইতামার বেন গাভিরের গাজা

পুরোপুরি দখল এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে সেখান থেকে সরিয়ে ইহুদি বসতি স্থাপনের পরিকল্পনার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি তাদের এই পরিকল্পনাকে ‘জাতিগত নিধন’, ‘স্থানান্তর’ এবং ‘নির্বাসন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জাতিসংঘের রেজুলেশনের বিরোধী। ইয়ালোন বলেন, এই ধরনের পরিকল্পনা যুদ্ধাপরাধের শামিল। ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপন করা কেবলই অপরাধমূলক কাজ হবে। এটি কোনোভাবেই আইনসঙ্গত নয়। তিনি আরও বলেন, স্মোট্রিচ ও বেন গাভির গাজায় সামরিক শাসন ও ইসরায়েলি বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন, যা তার মতে কেবল ‘অত্যাচার’ এবং ‘অবৈধ’। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুতর অভিযোগ করেছেন ইয়ালোন, যেখানে তিনি বলেন, এই যুদ্ধটি ১৯ মাস

ধরে চলছে, যা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ যুদ্ধ। তিনি দাবি করেন, নেতানিয়াহু এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার দায়ী, তিনি কেবল ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি আরও বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলা ও এর পরবর্তী পরিস্থিতি পুরোপুরি নেতানিয়াহুরই দায় ; যদিও তিনি এখনো নিজের দায় স্বীকার করেননি। ইয়ালোন বলেন, যুদ্ধটি যখন একে একে দীর্ঘায়িত হচ্ছে, তখন প্রধানমন্ত্রী কেন এখনো নিজের দায়িত্ব স্বীকার করছেন না? যুদ্ধের দায় কার? আপনি কি সত্যিই নির্ভার হয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারেন, যখন আপনার সৈন্যরা যুদ্ধাপরাধ করছে? ইয়ালোন ইসরায়েলি সরকারকে কঠোর বার্তা দিয়ে বলেন, এ সরকার আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এর পরিবর্তন সময়ের দাবি। তিনি ইসরায়েলের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক

করে দিয়ে বলেন, যদি এই সরকারের কার্যকলাপ চলতে থাকে, তবে ইসরায়েল ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে। এখনো পর্যন্ত, মোশে ইয়ালোনের এই মন্তব্যগুলি ইসরায়েলের রাজনৈতিক পরিসরে এক নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সাবেক সেনাপ্রধানের অভিযোগ আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি ইসরায়েলের অঙ্গীকার এবং মানবাধিকারের প্রতি অবজ্ঞার সংকেত দিতে পারে। সাক্ষাৎকারে দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান ইয়ালোনের মন্তব্যের পর, ইসরায়েলি সমাজের বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
এবার রণবীরের নায়িকা হচ্ছেন শ্রীলীলা অন্যান্য দেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য না করতে ট্রাম্পের নির্দেশনা ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশনের কার্যক্রম শুরু ইরান পারমাণবিক চুক্তিতে না এগোলে ফের নিষেধাজ্ঞা : ফ্রান্স প্রাইভেটকারে চুরির গরু নিয়ে যাচ্ছিল চোর, অতঃপর… নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিতে পশ্চিমবঙ্গে মোদি ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণার ফল আমিরাতের কাছে এনভিডিয়ার চিপ বিক্রিতে ভয় আমেরিকার হাতিরঝিলে রাত ১১টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ তরুণ অভিনেতার সঙ্গে কারিনার প্রেম হানিয়ার নতুন রেকর্ড চীনের ঋণ বন্ধ, দিতে হতে পারে ভর্তুকি ইরানে ফের হামলার পরিকল্পনা সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলা, এরদোয়ানের কঠোর বার্তা ইরানের গুপ্তচর ছিলেন ইসরায়েলি সেনা, অতঃপর… গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তি ব্ল্যাক বক্স রেকর্ডিংয়ে মিলল পাইলটের সম্পৃক্ততা আজ মিলবে বিনামূল্যে ইন্টারনেট, যেভাবে পাবেন ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা অবশেষে লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণ হচ্ছে সেতু