জাগো বাহে, কুণ্ঠে সবায়? – ইউ এস বাংলা নিউজ




জাগো বাহে, কুণ্ঠে সবায়?

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৫ জুলাই, ২০২৫ | ১০:২০ 20 ভিউ
বাংলাদেশ। এই ভূমি কেবল মানচিত্র নয়—এ আমাদের আত্মার আধার, আমাদের ভাষার শিকড় চারিয়ে পেল্লবিত হয়েছে যে পলিতে সে পল্বল বাঙালি জাতির যুগ যুগ শোষণ নিপীড়ন প্রতিরোধের সংগ্রামী চেতনার প্রতীক ভিত্তিভূমি। কিন্তু আজ আমার এ পবিত্র ভূমি সন্তর্পনে বেড়ে ওঠা শত্রুর হাতে অপহৃত হচ্ছে। বিশ্বাসঘাতকদের একটি চক্র—যাদের হাতে নেই দেশপ্রেম, নেই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা—তারা আজ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে। যা ছিল একটি উন্নয়নশীল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, আজ তা রূপ নিয়েছে এক বিদেশী-শত্রুর হাতে পরিচালিত অন্তর্বর্তী শাসনের কাঠামোয়। যারা সরকারের নাম ধরে আছে, তাদের কার্যকলাপ প্রমাণ করে—তারা আমাদের স্বাধীনতার শত্রু, আমাদের জাতিসত্তার শত্রু। তারা শুধু ক্ষমতা দখল করেনি, তারা বাঙালির আত্মার গভীরতম শেকড়

উপড়ে ফেলতে এসেছে। একটি জাতিকে ধ্বংস করতে হলে প্রথমে ধ্বংস করতে হয় তার বিচারব্যবস্থা, তার ন্যায়বোধ, তার সংস্কৃতি ও আদর্শিক ভিত্তি। আজ আমরা তা-ই প্রত্যক্ষ করছি। মুহাম্মদ ইউনুস, যিনি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের এক মুখপাত্র, তাকে ঘিরে এক ভয়ানক বলয় সক্রিয়—যেখানে জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, এনসিপি এবং জিহাদি গোষ্ঠী ও তাদের পেছনে পাকিস্তানের আইএসআই একত্রে বৈশ্বিক শক্তির হাতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তুলে দিচ্ছে। এ কোনও রাজনীতি নয়। বাঙ্গালী জাতির আত্মাকে ছিঁড়ে উপড়ে ফেলার অপচেষ্টা চলছে। এ দেশের গড় মানুষ—গ্রামের কিষাণ, কামার-কুমার, জেলে, শহরের শ্রমিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ফুটপাথের ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী। তারাই এ দেশের মূল শক্তি। তাদের পিতৃ-পিতামহ রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছে, স্বপ্ন দেখেছে উন্নত দেশ, সমাজ ও

জীবনের। আজ সেই জনতার উপরই চেপে বসেছে রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট বাহিনী, গুণ্ডা, খুনি ও বিশ্বাসঘাতকদের জোট। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাকস্বাধীনতার গলা টিপে ধরা হয়েছে। নাগরিক অধিকার কফিন-বন্দী। রাজনৈতিক দলগঠনের নামে ‘ক্রিমিনাল সিন্ডিকেট’কে আইনী চেহারা দেয়া হচ্ছে। জনগণকে দমিয়ে রাখতে চলছে অপমান, অপদস্তকরণ, হত্যার হুমকী, ধর্ষনের হুমকী, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় নিপীড়ন। বিদেশি বন্ধুরা এখন কূটনৈতিক নাটকে অভিনয় করছেন। দেশীয় বিশ্বাসঘাতকেরা পিলপিল করে বেরিয়ে এসেছিল জুলাইতে। গত এক বছর সেই সুবাদে অন্যের অর্জিত সম্পদ লুটে নিতে কাজে নেমেছে। বুদ্ধিজীবিরা, যাদের ওপর চোখ বুঁজে মানুষ ভরসা রাখতে চায়, তারা জুলাইতে আপস করেছিল। গত এক বছরেও তাদের চোখ খোলে নি। শিক্ষিত মধ্যবিত্তের

ও উচ্চবিত্তের আপস দেশদ্রোহীদের, জনতার প্রতি বিশ্বাসঘাতকদের সাহস জোগায়। এদের আপস আমজনতাকে বিভ্রান্ত করে। গণের প্রতিরোধকে অঙ্কুরিত হওয়ার আগেই উপড়ে ফেলে বা দূর্বল করে দেয়। তথাপি হে বন্ধু, আমাদের এখন জাগতে হবে। দল নয়, মত নয়—এখন জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সময়। তাই জাগতে হবে। স্মরণ করুন বঙ্গবন্ধুর সেই ডাক—”এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এইবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম!” হোমার তাঁর মহাকাব্যে লিখেছিলেন—ভীরু হাজারবার মরে, বীর মাত্র একবার—“A coward dies a thousand deaths, a hero only once.” শেক্সপিয়রের জুলিয়াস সিজার চরিত্র বলে—“There is a tide in the affairs of men, which taken at the flood, leads on to fortune.” সময়ের স্রোত যখন বয়ে যায়,

তখন সঠিক সময়ে ঝাঁপ দিলে, কালপ্রবাহ সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যায়। আমাদের সত্যিকারের পরিচয় তো এই যে এই পলিতে জন্মিছি বলেই হাজার বছর ধরেই আমরা নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই কখনও ত্যাগ করিনি। বঙ্গবন্ধু প্রায়ই বলতেন, “বাঙালি জাতি মাথা নত করে না।” এই জাতির আত্মমর্যাদা ইতিহাসে বারবার প্রমাণিত—পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতন আমাদের শিক্ষা দেয় বিশ্বাসঘাতকদের পরিণতি কেমন হয়। আজও সেই “এবারের সংগ্রাম” আহ্বান আমাদের পথ দেখায়। জাতির ভবিষ্যৎ রক্ষায় যদি কেউ না দাঁড়ায়, তবে আপনিই হোন প্রথম কণ্ঠ। আজ আবার সেই সংগ্রাম আমাদের দুয়ারে। তবে এবারের লড়াই চতুর্মখী- এবারের লড়াই ভিতরে বাহিরে। এবারের লড়াই অন্তর্দৃষ্টির, সত্য ও ন্যায়ের জন্য। এদেশ আপনার, আমার,

আমাদের সন্তানদের। এদেশকে আমরা শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারি না। হে বন্ধু, আপনাকে এখন জেগে উঠতে হবে। নতুন এক মুক্তিযুদ্ধের ভেতর জাতি পা দিয়েছে, যদিও আপনারা এখনও ভাবছেন হয়তো এ বিভ্রম, এ মায়া, চোখ খুললেই দেখবেন সব ঠিক আছে। বাস্তবে, কিছু ঠিক নেই। আপনার দেশ অন্যের হাতে। হয়তো অস্ত্র নয় এখনই। তবে শাণিত চেতনার যুদ্ধটা এই মুহূর্ত থেকে লড়তে হবে। আমাদের অস্ত্র হবে সাহস, তথ্য, ঐক্য এবং দেশপ্রেম। যদি আজ না জাগেন, কাল হয়তো জেগে উঠে দেখবেন আপনি সব হারিয়েছেন। থাকবে না আপনার আমার জন্য কোনো স্বাধীন স্বদেশ, যার গর্ব নিয়ে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ায় লক্ষ লক্ষ বাঙ্গালী। এ দেশ এমন দেশ

যার জন্য সানন্দে আমাদের পূর্বপুরুষেরা জীবন দিয়ে লড়েছেন। এ দেশ এমন দেশ যা সহজে মাথা নোয়ায় না। হাজার বছরের ইতিহাসে তাই বাঙ্গালীর প্রতিরোধের ও লড়াইয়ের ইতিহাস অন্তহীন। বাংলার আত্মাকে খুবলে ধরেছে নতুন ও পুরণো হার্মাদদের সিন্ডিকেট। জেগে উঠুন! আর ঘুমানোর সময় নাই। লেখক পরিচিতঃ জাহানারা নুরী, সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক ২৪ জুলাই ২০২৫ সুইডেন

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মশা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ ইসির প্রস্তাবে একমত বিএনপি পরিবর্তন চায় টিআইবি বিমান দেখলে আঁতকে ওঠে শিক্ষার্থীরা থাইল্যান্ডের ৮ জেলায় মার্শাল ল’ জারি সকালের মধ্যে ১১ জেলায় ঝড়ের আভাস খুলনায় ইসলামী ব্যাংকের ভিতর গ্রাহক নির্যাতনে তোলপাড় জলবায়ুজনিত অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাংলা বলায় আধার কার্ডধারী ভারতীয় যুবককে পাঠানো হলো বাংলাদেশে গাজায় মানবিক সহায়তা অবরোধে ক্ষুব্ধ কানাডা, ইসরাইলকে নিয়ন্ত্রণ ছাড়ার আহ্বান কার্নির ইস্তানবুলে ইরান-ইউরোপের দ্বিতীয় দফা পারমাণবিক আলোচনা সম্পন্ন চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন আমার বাবা থাইল্যান্ডের ৮ জেলায় মার্শাল ল’ জারি ট্রাম্পের প্রশংসার পর মিয়ানমারের জান্তা-ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার গভীর রাতে ফেনী সংলগ্ন ভারতের সীমানায় বিএসএফের গুলিতে নিহত ২, আহত ১ দেশে বিনিয়োগে ধস: থমকে যাওয়া শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা হতাশ মিয়ানমারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল যুক্তরাষ্ট্র: জান্তা সরকারের ট্রাম্প বন্দনা, সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পথে জাগো বাহে, কুণ্ঠে সবায়? ২ সপ্তাহ ব্যবধানে বিমানবন্দর থেকে আরও ১২৩ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া ভারতের কাছে যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত পোশাক রপ্তানির একচেটিয়া সুযোগ হারালো বাংলাদেশ যে শুদ্ধ রাজনীতির বয়ান দেয় জামায়াত-শিবির, তারা কি তা আদৌ ধারণ করে?