
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

সাবেক সেনাসদস্যদের আবেদন সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে, ধৈর্য ধরার পরামর্শ

ফারাক্কা যেন নদী হত্যার মেশিন

‘চল চল যমুনা যাই’ এই রাজনীতি আর হতে দেব না: তথ্য উপদেষ্টা

মাদক-অপকর্মের আখড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

আঞ্চলিক আকাশসীমা স্বাভাবিক, বিমানের টরন্টো লন্ডন রোমের ফ্লাইটের সময়সূচি পুনর্নির্ধারণ

ঈদুল আজহায় বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি ১৬ মে শুরু

যমুনা অভিমুখী লংমার্চে টিয়ারগ্যাস-লাঠিচার্জ, আহত অর্ধশতাধিক
এনবিআর বিলুপ্তি নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে নতুন বিভাগ সৃষ্টির গেজেট নিয়ে কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তারা কার্যত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এক পক্ষ সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নবসৃষ্ট দুই বিভাগকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ করছে। অপর পক্ষ গেজেটকে একরকম প্রত্যাখ্যান করে কর্মসূচি দিচ্ছে। প্রথমদিনের কর্মসূচি হিসাবে বুধবার এ বিষয়ে এনবিআর-এর প্রধান কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলোয় কলমবিরতি কর্মসূচি আহ্বান করা হয়।
এক পক্ষ জানিয়েছে, কলমবিরতি কর্মসূচিতে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়নি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা অংশ নিলেও বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সকাল ১০টা থেকে কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এমনকি কেউ কেউ অভিযোগ করেন, আন্দোলনকারীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের দোসররা সক্রিয়,
যারা ‘এনবিআরে আওয়ামী ভূত’ নামে পরিচিত। সরকারকে বিভ্রান্ত করতে তারা সুবিধামতো নানান রূপ ধারণ করে। কলমবিরতি দিয়ে সুবিধা করতে না পেরে বৃহস্পতিবার চক্রটি মানববন্ধন করার পাঁয়তারা করছে। যেখানে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তারা মূলত দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসাবে সরকারের রাজস্ব আহরণের গুরুত্বপূর্ণ এ লাইফলাইনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি। যদিও অপর পক্ষ এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে। তারা বলেন, তাদের কলমবিরতি কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সারা দেশে পালিত হয়েছে। বেশির ভাগ কর্মকর্তা তাদের আন্দোলনের সঙ্গে আছেন। এখানে কোনো
রাজনীতি হচ্ছে না। কেউ কোনো দলের কর্মী নন। সবাই সরকারি কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, এনবিআরকে বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ করার ক্ষেত্রে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত না হওয়ায় মঙ্গলবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার কলমবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঐক্য পরিষদের কমিটি কিংবা আহ্বায়ক না থাকলেও কয়েকজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। মূলত কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ড এবং যুগ্ম-কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা এ আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের অনেকে কাছে দাবি করেন, চলমান আন্দোলনে সমর্থন এবং কর ও কাস্টমস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান
নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দুই অ্যাসোসিয়েশনের অন্তত ২৫ জন সদস্য বুধবার পদত্যাগ করেন। পদত্যাগকারী কর্মকর্তারা হলেন বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উপকর কমিশনার নাজমা পারভিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উপকর কমিশনার রইসুন নেসা, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উপকর কমিশনার ফিরোজ কবির, সহ-গবেষণা সম্পাদক উপকর কমিশনার ফারুক হোসেন, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক উপকর কমিশনার আবদুল্লাহ ইউসুফ, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক উপকর কমিশনার জিল্লুর রহমান। নির্বাহী সদস্য-উপকর কমিশনার নেফাউল ইসলাম সরকার, মাফরোজ সুলতানা ইমা, মোছা. ফাতেমা খাতুন, জোনায়েদ হোসেন, তানজিনা রহমান, সহকারী কর কমিশনার তামজিদ ইয়াসমিন ও সাইফুদ্দিন খান। অপরদিকে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন থেকে পদত্যাগ করেছেন মহাসচিব একেএম নুরুল হুদা আজাদ, সহসভাপতি সৈয়দ মুসফিকুর রহমান
(কমিশনার), যুগ্মসম্পাদক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (কমিশনার), কোষাধ্যক্ষ ড. নাহিদা ফরিদী (কমিশনার), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ জিয়া উদ্দিন (কমিশনার), দপ্তর সম্পাদক ইফতেখারুজ্জামান। নির্বাহী সদস্য-অতিরিক্ত কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সফিউর রহমান, আলীমুল ইহসান, যুগ্ম কমিশনার শাকিলা পারভীন, উপকমিশনার সাইদুল আলম ও সানজিদা অনুসূয়া। তাদের মধ্যে নুরুল হুদা আজাদ তার পদত্যাগপত্রে লেখেন, ‘বর্তমানে এনবিআর বিলুপ্ত, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগ অধ্যাদেশে ক্যাডারের স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষিত না হওয়ায় চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে আমি নিরবচ্ছিন্নভাবে অংশগ্রহণ করতে পারি না। কর্মসূচিতে নিরন্তর অংশগ্রহণ করতে না পারায় একদিকে চলমান তথ্যপ্রবাহ ও কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত থাকি না। অন্যদিকে আমার অনুপস্থিতি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্যদের মাঝে প্রশ্নের উদ্রেক
করে। যথাযথভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম না হওয়ায় আমি লজ্জিত বোধ করি।’ পদত্যাগের বিষয়ে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন অধ্যাদেশে ক্যাডারের স্বার্থ সংরক্ষণে শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্যাডার কর্মকর্তাদের মনের ভাব, হৃদয়ের রক্তক্ষরণ তারা সরকারের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগ করেছি। অবশ্য শীর্ষ একাধিক কর্মকর্তা বলেন, অধ্যাদেশের দুই ক্যাডারের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। তারপরও একটি গোষ্ঠী তরুণ ক্যাডার কর্মকর্তাদের উসকে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। তারা সরকারকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অধ্যাদেশের কোথাও ক্যাডারের
স্বার্থ সংরক্ষিত না হলে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে এখনো আলাপ-আলোচনার সুযোগ আছে। তারা বলেন, আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব ও উসকানি দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির মেয়ে এবং ছেলে রয়েছেন। তাদের একজনের ভাই পুলিশ ক্যাডার থেকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। এমনকি এ আন্দোলনকে আরও উসকে দিতে বিদেশ থেকেও ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে যারা কর ও কাস্টমস ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে পদধারী ছাত্রলীগের সাবেক অনেক নেতা রয়েছেন। মূলত তাদের কেউ কেউ প্রকাশ্যে এবং অনেকে পেছন থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সবকিছু করে যাচ্ছেন। অথচ বাস্তবে এনবিআরের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সঙ্গে নেই। যারা এখন অ্যাসোসিয়েশন থেকে পদত্যাগ করার কথা বলছেন, তারা আওয়ামী দোসর। এক প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর ক্যাডারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে এ চক্রকে আর বেশি সামনে এগোতে দেব না। তারা শুরু থেকে নানাভাবে চক্রান্ত করে আসছে। ফলে ফের কোনো কর্মসূচি দিলে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, আমাদের এখন কাজ হবে দুই ক্যাডারের জন্য একটি ভালো ক্যারিয়ার প্ল্যানিং করা। সেভাবে সাংগঠনিক কাঠামো প্রস্তত করা হবে। এছাড়া জনমতকে পক্ষে রেখে কীভাবে সরকারের রাজস্ব আহরণ আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দেওয়া। অন্যদিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এনবিআর এবং সারা দেশের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের দপ্তরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কলমবিরতি পালন করা হয়। এতে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররাও এতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। দেশের স্বার্থে রাজস্বব্যবস্থার একটি যুগোপযোগী ও টেকসই সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজন। এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্বব্যবস্থা সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন করে আসছেন। অথচ সংস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হওয়া সত্ত্বেও কাস্টমস ও ট্যাক্স সার্ভিসের হাজার-হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতামত গ্রহণ না করে এবং রাজস্ব খাত সংস্কার কমিটির সুপারিশ প্রকাশ না করে জারিকৃত অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা দেশের রাজস্বব্যবস্থায় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে বলে ঐক্য পরিষদ মনে করে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কলমবিরতিতে সম্মানিত করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য ঐক্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ মনে করে, করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের এই সাময়িক ত্যাগ দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এবং রাজস্বব্যবস্থার টেকসই সংস্কারে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।
যারা ‘এনবিআরে আওয়ামী ভূত’ নামে পরিচিত। সরকারকে বিভ্রান্ত করতে তারা সুবিধামতো নানান রূপ ধারণ করে। কলমবিরতি দিয়ে সুবিধা করতে না পেরে বৃহস্পতিবার চক্রটি মানববন্ধন করার পাঁয়তারা করছে। যেখানে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে তাদের পক্ষে কথা বলানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তারা মূলত দেশি-বিদেশি চক্রান্তের অংশ হিসাবে সরকারের রাজস্ব আহরণের গুরুত্বপূর্ণ এ লাইফলাইনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি। যদিও অপর পক্ষ এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করে। তারা বলেন, তাদের কলমবিরতি কর্মসূচি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সারা দেশে পালিত হয়েছে। বেশির ভাগ কর্মকর্তা তাদের আন্দোলনের সঙ্গে আছেন। এখানে কোনো
রাজনীতি হচ্ছে না। কেউ কোনো দলের কর্মী নন। সবাই সরকারি কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, এনবিআরকে বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ করার ক্ষেত্রে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতামত প্রতিফলিত না হওয়ায় মঙ্গলবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার কলমবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঐক্য পরিষদের কমিটি কিংবা আহ্বায়ক না থাকলেও কয়েকজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। মূলত কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ড এবং যুগ্ম-কর কমিশনার মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা এ আন্দোলন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এদিকে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের অনেকে কাছে দাবি করেন, চলমান আন্দোলনে সমর্থন এবং কর ও কাস্টমস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান
নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দুই অ্যাসোসিয়েশনের অন্তত ২৫ জন সদস্য বুধবার পদত্যাগ করেন। পদত্যাগকারী কর্মকর্তারা হলেন বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উপকর কমিশনার নাজমা পারভিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উপকর কমিশনার রইসুন নেসা, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক উপকর কমিশনার ফিরোজ কবির, সহ-গবেষণা সম্পাদক উপকর কমিশনার ফারুক হোসেন, সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক উপকর কমিশনার আবদুল্লাহ ইউসুফ, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক উপকর কমিশনার জিল্লুর রহমান। নির্বাহী সদস্য-উপকর কমিশনার নেফাউল ইসলাম সরকার, মাফরোজ সুলতানা ইমা, মোছা. ফাতেমা খাতুন, জোনায়েদ হোসেন, তানজিনা রহমান, সহকারী কর কমিশনার তামজিদ ইয়াসমিন ও সাইফুদ্দিন খান। অপরদিকে বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশন থেকে পদত্যাগ করেছেন মহাসচিব একেএম নুরুল হুদা আজাদ, সহসভাপতি সৈয়দ মুসফিকুর রহমান
(কমিশনার), যুগ্মসম্পাদক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (কমিশনার), কোষাধ্যক্ষ ড. নাহিদা ফরিদী (কমিশনার), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কাজী মুহাম্মদ জিয়া উদ্দিন (কমিশনার), দপ্তর সম্পাদক ইফতেখারুজ্জামান। নির্বাহী সদস্য-অতিরিক্ত কমিশনার মিনহাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সফিউর রহমান, আলীমুল ইহসান, যুগ্ম কমিশনার শাকিলা পারভীন, উপকমিশনার সাইদুল আলম ও সানজিদা অনুসূয়া। তাদের মধ্যে নুরুল হুদা আজাদ তার পদত্যাগপত্রে লেখেন, ‘বর্তমানে এনবিআর বিলুপ্ত, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগ অধ্যাদেশে ক্যাডারের স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষিত না হওয়ায় চলমান আন্দোলন কর্মসূচিতে আমি নিরবচ্ছিন্নভাবে অংশগ্রহণ করতে পারি না। কর্মসূচিতে নিরন্তর অংশগ্রহণ করতে না পারায় একদিকে চলমান তথ্যপ্রবাহ ও কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত থাকি না। অন্যদিকে আমার অনুপস্থিতি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সদস্যদের মাঝে প্রশ্নের উদ্রেক
করে। যথাযথভাবে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম না হওয়ায় আমি লজ্জিত বোধ করি।’ পদত্যাগের বিষয়ে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব বাস্তবায়ন অধ্যাদেশে ক্যাডারের স্বার্থ সংরক্ষণে শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ক্যাডার কর্মকর্তাদের মনের ভাব, হৃদয়ের রক্তক্ষরণ তারা সরকারের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগ করেছি। অবশ্য শীর্ষ একাধিক কর্মকর্তা বলেন, অধ্যাদেশের দুই ক্যাডারের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। তারপরও একটি গোষ্ঠী তরুণ ক্যাডার কর্মকর্তাদের উসকে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। তারা সরকারকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অধ্যাদেশের কোথাও ক্যাডারের
স্বার্থ সংরক্ষিত না হলে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে এখনো আলাপ-আলোচনার সুযোগ আছে। তারা বলেন, আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব ও উসকানি দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপির মেয়ে এবং ছেলে রয়েছেন। তাদের একজনের ভাই পুলিশ ক্যাডার থেকে ইতোমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। এমনকি এ আন্দোলনকে আরও উসকে দিতে বিদেশ থেকেও ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে যারা কর ও কাস্টমস ক্যাডারে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে পদধারী ছাত্রলীগের সাবেক অনেক নেতা রয়েছেন। মূলত তাদের কেউ কেউ প্রকাশ্যে এবং অনেকে পেছন থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার সবকিছু করে যাচ্ছেন। অথচ বাস্তবে এনবিআরের বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সঙ্গে নেই। যারা এখন অ্যাসোসিয়েশন থেকে পদত্যাগ করার কথা বলছেন, তারা আওয়ামী দোসর। এক প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর ক্যাডারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে এ চক্রকে আর বেশি সামনে এগোতে দেব না। তারা শুরু থেকে নানাভাবে চক্রান্ত করে আসছে। ফলে ফের কোনো কর্মসূচি দিলে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, আমাদের এখন কাজ হবে দুই ক্যাডারের জন্য একটি ভালো ক্যারিয়ার প্ল্যানিং করা। সেভাবে সাংগঠনিক কাঠামো প্রস্তত করা হবে। এছাড়া জনমতকে পক্ষে রেখে কীভাবে সরকারের রাজস্ব আহরণ আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দেওয়া। অন্যদিকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এনবিআর এবং সারা দেশের আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমসের দপ্তরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কলমবিরতি পালন করা হয়। এতে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররাও এতে একাত্মতা প্রকাশ করেন। দেশের স্বার্থে রাজস্বব্যবস্থার একটি যুগোপযোগী ও টেকসই সংস্কার অত্যন্ত প্রয়োজন। এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্বব্যবস্থা সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিন করে আসছেন। অথচ সংস্কারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হওয়া সত্ত্বেও কাস্টমস ও ট্যাক্স সার্ভিসের হাজার-হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মতামত গ্রহণ না করে এবং রাজস্ব খাত সংস্কার কমিটির সুপারিশ প্রকাশ না করে জারিকৃত অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা দেশের রাজস্বব্যবস্থায় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে বলে ঐক্য পরিষদ মনে করে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কলমবিরতিতে সম্মানিত করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য ঐক্য পরিষদ আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ মনে করে, করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের এই সাময়িক ত্যাগ দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে এবং রাজস্বব্যবস্থার টেকসই সংস্কারে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।