যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ইসরায়েলের নতুন সিদ্ধান্ত – ইউ এস বাংলা নিউজ




যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে ইসরায়েলের নতুন সিদ্ধান্ত

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৭ মার্চ, ২০২৫ | ৪:৪৫ 30 ভিউ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের ভয়ানক হামলা অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে গাজা নিয়ে একটি নতুন এবং বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে ইসরায়েল। এই পরিকল্পনা মূলত গাজাকে পুনরায় দখল ও শাসন করার লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি সরকার দ্বারা পর্যালোচিত হচ্ছে। এমনকি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনও এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে গাজা নিয়ে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর ইসরায়েলি সেনারা গাজা পুনর্দখল ও শাসনের

পদক্ষেপগুলো এখন একটি সম্ভাব্য পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের (জো বাইডেন) প্রশাসন চেয়েছিল আমরা যুদ্ধ শেষ করি, তবে ট্রাম্প চান আমরা যুদ্ধে জয়ী হই। এর মাধ্যমে ইসরায়েলের শাসকগোষ্ঠীর দৃঢ় ইচ্ছা প্রকাশিত হয় যে, তারা গাজার উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দাকে আল মাওয়াসি নামে একটি ছোট উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানান্তর করার কথা বলা হচ্ছে। এই অঞ্চলটি বর্তমানে ইসরায়েলি প্রশাসন ‘মানবিক অঞ্চল’ হিসেবে বর্ণনা করছে, তবে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে প্রায় ৪০ হাজার সেনা

মোতায়েন করা হতে পারে, যা ৪টি সেনা ডিভিশনের সমান। এই সেনাবাহিনী গাজার স্থায়ী শাসন পরিচালনা করবে। তবে এই পরিকল্পনার কার্যকারিতা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেক সামরিক বিশ্লেষক। তারা মনে করছেন, এত বড় একটি এলাকা পুনর্দখল ও শাসন করা অনেক জটিল হতে পারে, বিশেষ করে যখন গাজার বাসিন্দাদের প্রতি অত্যাচার এবং দমনপীড়ন শঙ্কা রয়েছে। এদিকে, টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে যে, ইসরায়েলের কৌশলগত বিষয়াদি সম্পর্কিত মন্ত্রী রন ডেরমার চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। এই সফরের সময় তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাজা উপত্যকার দখল নেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। এক্ষেত্রে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের লক্ষ্য হচ্ছে মার্কিন প্রশাসনের সমর্থন অর্জন করা, যাতে গাজার বাসিন্দাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা

সহজ হয়। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, বর্তমানে যেভাবে ত্রাণ গাজার জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে, সেটি আর সরবরাহ করা হবে না। পরিবর্তে, গাজার ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সরবরাহ করবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আইডিএফ। এর ফলে, গাজার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হতে পারে, কারণ তারা ইসরায়েলি বাহিনীর নীতি অনুযায়ী ত্রাণ পাওয়ার জন্য নির্ভরশীল হতে হবে। এছাড়া, সিএনএন জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় একটি বিতর্কিত প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে, যা গাজার সব ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করার পক্ষে। এই প্রস্তাবের মধ্যে গাজার বাসিন্দাদের অন্য দেশে স্থানান্তর করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের বাস্তুচ্যুতি জাতিগত নিধনের শামিল হতে পারে। রোববার (২৩ মার্চ) ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ও কট্টরপন্থি নেতা বেজালাল স্মোট্রিচ বলেন,

প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের উত্থাপিত প্রস্তাবটি নিরাপত্তা কাউন্সিলে অনুমোদন পেয়েছে। তিনি জানান, গাজার বাসিন্দাদের ‘স্বেচ্ছায়’ অন্য দেশে স্থানান্তরের কথাও বলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ও একই ধরনের প্রস্তাব ছিল, যা আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। বিশ্লেষকরা মনে করেন, গণবাস্তুচ্যুতি বা ব্যাপক স্থানান্তর মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক আইনে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এসব প্রস্তাবকে তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় হিসেবে উপস্থাপন করছে। এদিকে, গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতা অব্যাহত রয়েছে। ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন হামলা শুরু করার পর গাজায় ৭৩০ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে কমপক্ষে ৪০০ জন নারী ও শিশু। এই হামলাগুলোর মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা, আর্টিলারি শেলিং

ও গুলি চালানো অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব সম্প্রদায় এই সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, এবং মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর চাপ বাড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি শুরু হয়ে গেছে? যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক খুবই ভালো: ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ট্রলের শিকার ভারতের পররাষ্ট্রসচিব নেতানিয়াহু সেনাদের গাজায় যুদ্ধাপরাধ করতে পাঠাচ্ছেন: ইসরাইলের সাবেক সেনাপ্রধান ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ১৩ জাবির ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে মিলল বিষাক্ত চ্যালাপোকা যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক খুবই ভালো: ট্রাম্প ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত নারীর শ্লীলতাহানি, থানায় মামলা ২২ মে থেকে বাজারে মিলবে নওগাঁর আম ঢাকায় ২ বোন হত্যা, মাস্ক-ক্যাপ পরা সেই ব্যক্তি গ্রেফতার ‘পরমাণু অস্ত্র নয়, শান্তিই চাই’, বিশ্বকে বার্তা পেজেশকিয়ান থাকছে না পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এলো ‘আলোচনার জন্য’ নিজ দেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার আইভীর জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ডিভিশন মঞ্জুর ৪ জেলায় বন্যার আভাস যুদ্ধবিরতির পর ভারত ও পাকিস্তান যা দাবি করছে মোদি এখন বুঝতে পারছেন পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া কতটা ব্যয়বহুল: আফ্রিদি সন্ত্রাসী হামলার পর কাশ্মীরের অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে ফ্যাসিস্ট ইউনুস সরকারের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা: স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের উপর নিষ্ঠুর আঘাত