প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা ফিরে পাচ্ছে চসিক – ইউ এস বাংলা নিউজ




প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা ফিরে পাচ্ছে চসিক

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ১৩ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯:৪৩ 28 ভিউ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) টাকায় এবং জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং তার ছেলে ও আওয়ামী সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের রাজনৈতিক প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজেদের পরিবারের দখলে নিয়ে নেন তারা। আদালতের রায়ের তোয়াক্কা না করে সাত বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে নিজেদের সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করেন মহিউদ্দিনপুত্র নওফেল। আবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শর্তপূরণ না করার পরও স্থায়ী সনদ পাইয়ে দেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী। দখলকে স্থায়ী করতে ট্রাস্টি বোর্ডে যুক্ত করা হয়েছিল শত শত কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদসহ তার পরিবারের তিন সদস্যকেও। অবশেষে মহিউদ্দিনপুত্র নওফেলের দখলমুক্ত

হতে যাচ্ছে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির মালিকানা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) ফিরিয়ে দিতে কাজ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এজন্য ইতোমধ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে জোর তৎপরতা শুরু করে চসিক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে চিঠি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ইউজিসির মতামত চেয়েছে। সেই আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন একটি কমিটি গঠন করেছে। এবিষয়ে ইউজিসির ড. মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটি কাজ

শুরু করেছে। কমিটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রদান করবে এবং কমিটি প্রাপ্ত মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরবে। ইউজিসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি যেহেতু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সেহেতু সেটি সিটি করপোরেশনের কাছে মালিকানা ফিরিয়ে দেয়া হবে। তবে যেহেতু এখনো কমিটি কাজ করছে তাই প্রতিবেদন পেলেই বিস্তারিত জানাবেন। চসিকের তথ্যমতে, সংস্থাটির প্যাডে সরকারি দপ্তরে করা আবেদনের ভিত্তিতে ২০০২ সালে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠান অনুমোদন পায় সিটি করপোরেশন। বিশ্ববিদ্যালয়টি করার প্রস্তাব প্রথমে এসেছিল এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে। সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন ভবনে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু করা হয়। শুরুতে চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এরপর প্রবর্তক সিএসসিআর হাসপাতালের বিপরীতে এবং নগরীর ওয়াসা মোড়ের

ফিলিং স্টেশনের উপরে সিটি করপোরেশনের দুটি জমিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হয়। তিনটি ভবন নির্মাণসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় মোট ৪৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হয় সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে। মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকাকালে ২০১০ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন পদাধিকার বলে। ২০১০ সালের মেয়র নির্বাচনে এম মনজুর আলমের কাছে পরাজয়ের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান পদও হারান তিনি। তবে মেয়র মনজুর সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় মহিউদ্দিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টির সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন। ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব। একই বছরের

১৪ জুলাই ইউজিসি এক চিঠি দিয়ে তৎকালীন মেয়র নাছির উদ্দীকে ট্রাস্টির চেয়ারম্যান হিসেবে সম্বোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ট্রেজারার প্যানেলসহ ঘাটতি পদগুলো পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলে। এছাড়া একটি চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট (সিএ) প্রতিষ্ঠান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের হিসাব নিরীক্ষা করতে বলা হয় ওই চিঠিতে। তবে ইউজিসির চিঠিটি কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বা রেজিস্ট্রার বরাবর দেওয়া হলো না, এই যুক্তি তুলে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উচ্চ আদালতের রিট পিটিশন দায়ের করেন মহিউদ্দিন। বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চসিকের সম্পৃক্ততা ও হস্তক্ষেপ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই প্রশ্ন তুলে তিনি হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। রিট পিটিশন, রিভিউ পিটিশন, লিভ

টু আপিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনার দায়িত্ব পায় চসিক। কিন্তু মেয়রকে ট্রাস্টির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২০১৯ সালে নতুন সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান মহিউদ্দিনপুত্র নওফেল। পরে তিনি শিক্ষামন্ত্রী হন। এসময় তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে পছন্দমতো ট্রাস্টি বোর্ডে সদস্য অন্তর্ভুক্ত করেন। এছাড়া দলীয় হাইকমান্ডের অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তৎকালীণ মেয়র নাছির উদ্দীন। ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হন নওফেল। ট্রাস্টি বোর্ডের ১২ সদস্যের মধ্যে তিনজনই ছিলেন তার পরিবারের। তিনি ছাড়াও তার মা হাসিনা মহিউদ্দিন ও ছোট ভাই বোরহানুল হাসান চৌধুরী সদস্য হিসেবে আছেন। এর বাইরে ট্রাস্টি বোর্ডে ছিলেন এস আলম গ্রুপের তিনজন, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নাসির

উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি প্রফেসর অনুপম সেন, রেমন্ড আরেং, প্রকৌশলী শহীদুল আলম ও সাবেক এমপি সাবিহা মূসা।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ইয়ুথ সামিট স্টার্টআপে নিবন্ধন আহ্বান সার কারখানার সাবেক সেই হিসাব রক্ষকের ৯১ গাড়ি-জমিজমা জব্দ যেসব কারণে ম্যানসিটির কাছে হারতে পারে রিয়াল অপারেশন ডেভিল হান্ট: ৬০৭ জনসহ সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৭৭৫ আ.লীগের নারী কর্মীকে হাত-পা বেঁধে পিটুনি, পুলিশে সোপর্দ ওসিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা ফিক্সিং কাণ্ডে নারী ক্রিকেটার সোহেলী ৫ বছর নিষিদ্ধ ভ্রমণের সময় বমি প্রতিরোধে করণীয় মাথাব্যথা কারণটা জানুন রোজায় বিভাগীয় শহরে ট্রাকে চালসহ তিন পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি সিনেমা হলে আবেগে ভাসলেন শতাধিক রিকশাচালক অযাচিত সংযোগে ঝুঁকি যে কারণে দুই কারণে যুদ্ধ থামাতে চান না নেতানিয়াহু ‘স্যার দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুণ, না হলে বেইনসাফ হবে’ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জনের ঘোষণা ‘পাঁচ ঘণ্টায় ৯ গ্লাস মদপান’ করে জাপানি কর্মকর্তার কাণ্ড ইউক্রেন একদিন রাশিয়ার হতে পারে: ট্রাম্প বিপিএলে ট্রফি নিয়েও কেলেঙ্কারি আ.লীগ নেতাকে ছাড়াতে না পেরে পুলিশ পেটালেন স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা গৃহবধূকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেফতার