
ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স
আরও খবর

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব ঢাকা আসছেন বুধবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে

পশ্চিমবঙ্গে একদিনে ২৪ বাংলাদেশি গ্রেফতার

ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতে মামলা

ভারতে ১৭০ মাদ্রাসা সিলগালা

বিল গেটসের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদটা দরকার ছিল: মেলিন্ডা গেটস

নিলামে উঠছে বিরল ভারতীয় নীল হীরা, কততে বিক্রি হতে পারে?

হজযাত্রীদের জন্য ফের নতুন নির্দেশনা সৌদির
গাজা যুদ্ধে সহযোগিতা: মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে উত্তাল প্রযুক্তি বিশ্ব

চলতি বছরের শুরুতে একটা বিষয়ে রীতিমত হতবাক হয়ে যান ইবতিহাল আবুসাদ। কানাডা-ভিত্তিক মরোক্কান এই প্রকৌশলী কাজ করেন মাইক্রোসফটের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিভাগে। দেখতে পান, তিনি তার কাজের অংশ হিসেবে যে কোড লিখছিলেন, সেটিই ব্যবহৃত হচ্ছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গাজা আক্রমণে। পরে এই তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে রীতিমত হৈচৈ শুরু হয়ে যায়।
প্রজেক্ট আজোর: মাইক্রোসফটের বিতর্কিত প্রকল্প
‘প্রজেক্ট আজোর’ নামক এক গোপন প্রকল্পের মাধ্যমে মাইক্রোসফট ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে ক্লাউড কম্পিউটিং, এআই ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি দিচ্ছে— এমন অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষত ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কুখ্যাত ইউনিট ৮২০০, ইউনিট ৮১ ও ওফেক বিমান শাখা এই প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার করে ‘হত্যা তালিকা’ তৈরি করছে— এমনটাই জানা গেছে।
কর্মীদের প্রতিবাদ
এই
খবরে হতবাক হয়ে আবুসাদ ‘No Azure for Apartheid’ নামক একটি আন্দোলনে যোগ দেন। অনলাইনভিত্তিক এই আন্দোলনটি মূলত ২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হয়। এর লক্ষ্য— ইসরাইলের সঙ্গে মাইক্রোসফটের চুক্তি বাতিল করা ও প্রতিষ্ঠানের ‘মূল্যবোধ’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য ফিরিয়ে আনা। চোখে চোখ রেখে মুখোমুখি প্রতিবাদ এরপর গত ৪ এপ্রিল মাইক্রোসফটের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আবুসাদ সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ জানান। তিনি তাদের এআই বিভাগের প্রধান মুস্তাফা সুলেইমানকে জনসমক্ষে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ‘Mustafa, shame on you!’ মরোক্কার এই নারী প্রকৌশলী তাদের বিভাগীয় প্রধানকে বলেন, ‘আমাদেরকে বলছেন- আপনি এআই-কে ভালো কাজে ব্যবহার করতে চান। অথচ মাইক্রোসফট সেই এআই-কেই ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছে বিক্রি করছে!যারা
কিনা নারী ও শিশুসহ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। আপনার লজ্জিত হওয়া উচিৎ, ধিক্কার জানাই আপনাকে’। একইভাবে ওয়াশিংটনের অনুষ্ঠানে ভানিয়া আগরওয়াল নামের আরেক কর্মী সরাসরি বিল গেটস, স্টিভ বালমার ও সিইও সত্য নাদেলা-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘গাজার ৫০ হাজার মানুষকে মাইক্রোসফট-এর প্রযুক্তি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা উৎসব করছেন?’ এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা দুজনকেই দ্রুত সরিয়ে দেয়। পরদিনই মাইক্রোসফট তাদের চাকরিচ্যুত করে। সেইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে যে, তারা ‘ইচ্ছাকৃত অবাধ্যতা ও দায়িত্বে অবহেলা’ করেছেন। মাইক্রোসফটের ‘দ্বিমুখী নীতি’ প্রতিষ্ঠানটি যদিও কর্মীদের বলেছিল ‘speak your mind at Microsoft’ (মাইক্রোসফটে তোমার মনের কথা বলো)। তবে বাস্তবে কেউ প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষ তার ই-মেইল
অ্যাক্সেস বন্ধ করে অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়। আবুসাদ বলেন, ‘তারা মুখে বলে স্বাধীন মতপ্রকাশের কথা, কিন্তু বাস্তবে প্রতিশোধ নেয়’। প্রতিক্রিয়া ও বৃহৎ প্রেক্ষাপট এদিকে এতসব ঘটনা ঘটার পর ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে অবস্থিত মাইক্রোসফটের সদরদপ্তরের বাইরে বড়সড় প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে যায়। আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হোসাম নাসর বলেন, ‘তারা আর নিজেদেরকে উচ্চ লেভেলের ব্র্যান্ড ইমেজের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারবে না’। তিনি আরও বলেন, ‘কর্মীরা জানে তারা চাকরি হারাতে পারে, তবুও তারা প্রতিবাদ করছে — এটিই বলে দেয় এই প্রতিষ্ঠান আসলে কতটা ভুল পথে’। প্রযুক্তি বিশ্বে বৃহত্তর উদ্বেগ মাইক্রোসফট ছাড়াও গুগল ও অ্যামাজনের ‘প্রোজেক্ট নিমবাস’ ইসরাইলের সঙ্গে ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি নিয়েও বড় বিতর্ক চলছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ‘ডেটা পয়েন্টে’র
মাধ্যমে এসব প্রযুক্তি ফিলিস্তিনিদের কড়া নজরদারিতে রাখছে। সম্প্রতি বিডিএস আন্দোলন মাইক্রোসফটের গেমিং প্রোডাক্ট Xbox, Minecraft, Call of Duty, Candy Crush-কে ‘গুরুতর বর্জন তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। পরিশেষে বলা যায় যে, ওয়াশিংটনের এই প্রতিবাদ কেবলই মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে নয়। এটি প্রযুক্তির দায়িত্ব ও মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এআই ও ক্লাউড প্রযুক্তি যখন জীবনের সঙ্গে—বা মৃত্যুর সঙ্গে—এত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েছে, তখন প্রযুক্তিকর্মীদের এই প্রশ্ন তোলাটাই সময়ের দাবি।
খবরে হতবাক হয়ে আবুসাদ ‘No Azure for Apartheid’ নামক একটি আন্দোলনে যোগ দেন। অনলাইনভিত্তিক এই আন্দোলনটি মূলত ২০২৩ সালের শেষ দিকে শুরু হয়। এর লক্ষ্য— ইসরাইলের সঙ্গে মাইক্রোসফটের চুক্তি বাতিল করা ও প্রতিষ্ঠানের ‘মূল্যবোধ’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য ফিরিয়ে আনা। চোখে চোখ রেখে মুখোমুখি প্রতিবাদ এরপর গত ৪ এপ্রিল মাইক্রোসফটের ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আবুসাদ সরাসরি বিষয়টি নিয়ে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ জানান। তিনি তাদের এআই বিভাগের প্রধান মুস্তাফা সুলেইমানকে জনসমক্ষে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ‘Mustafa, shame on you!’ মরোক্কার এই নারী প্রকৌশলী তাদের বিভাগীয় প্রধানকে বলেন, ‘আমাদেরকে বলছেন- আপনি এআই-কে ভালো কাজে ব্যবহার করতে চান। অথচ মাইক্রোসফট সেই এআই-কেই ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছে বিক্রি করছে!যারা
কিনা নারী ও শিশুসহ ৬০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। আপনার লজ্জিত হওয়া উচিৎ, ধিক্কার জানাই আপনাকে’। একইভাবে ওয়াশিংটনের অনুষ্ঠানে ভানিয়া আগরওয়াল নামের আরেক কর্মী সরাসরি বিল গেটস, স্টিভ বালমার ও সিইও সত্য নাদেলা-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘গাজার ৫০ হাজার মানুষকে মাইক্রোসফট-এর প্রযুক্তি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা উৎসব করছেন?’ এ সময় নিরাপত্তা কর্মীরা দুজনকেই দ্রুত সরিয়ে দেয়। পরদিনই মাইক্রোসফট তাদের চাকরিচ্যুত করে। সেইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে যে, তারা ‘ইচ্ছাকৃত অবাধ্যতা ও দায়িত্বে অবহেলা’ করেছেন। মাইক্রোসফটের ‘দ্বিমুখী নীতি’ প্রতিষ্ঠানটি যদিও কর্মীদের বলেছিল ‘speak your mind at Microsoft’ (মাইক্রোসফটে তোমার মনের কথা বলো)। তবে বাস্তবে কেউ প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষ তার ই-মেইল
অ্যাক্সেস বন্ধ করে অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়। আবুসাদ বলেন, ‘তারা মুখে বলে স্বাধীন মতপ্রকাশের কথা, কিন্তু বাস্তবে প্রতিশোধ নেয়’। প্রতিক্রিয়া ও বৃহৎ প্রেক্ষাপট এদিকে এতসব ঘটনা ঘটার পর ওয়াশিংটনের রেডমন্ডে অবস্থিত মাইক্রোসফটের সদরদপ্তরের বাইরে বড়সড় প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে যায়। আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হোসাম নাসর বলেন, ‘তারা আর নিজেদেরকে উচ্চ লেভেলের ব্র্যান্ড ইমেজের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারবে না’। তিনি আরও বলেন, ‘কর্মীরা জানে তারা চাকরি হারাতে পারে, তবুও তারা প্রতিবাদ করছে — এটিই বলে দেয় এই প্রতিষ্ঠান আসলে কতটা ভুল পথে’। প্রযুক্তি বিশ্বে বৃহত্তর উদ্বেগ মাইক্রোসফট ছাড়াও গুগল ও অ্যামাজনের ‘প্রোজেক্ট নিমবাস’ ইসরাইলের সঙ্গে ১.২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি নিয়েও বড় বিতর্ক চলছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ‘ডেটা পয়েন্টে’র
মাধ্যমে এসব প্রযুক্তি ফিলিস্তিনিদের কড়া নজরদারিতে রাখছে। সম্প্রতি বিডিএস আন্দোলন মাইক্রোসফটের গেমিং প্রোডাক্ট Xbox, Minecraft, Call of Duty, Candy Crush-কে ‘গুরুতর বর্জন তালিকায়’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। পরিশেষে বলা যায় যে, ওয়াশিংটনের এই প্রতিবাদ কেবলই মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে নয়। এটি প্রযুক্তির দায়িত্ব ও মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে এআই ও ক্লাউড প্রযুক্তি যখন জীবনের সঙ্গে—বা মৃত্যুর সঙ্গে—এত ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে পড়েছে, তখন প্রযুক্তিকর্মীদের এই প্রশ্ন তোলাটাই সময়ের দাবি।