সংসদে গাজায় ইসরাইলি হামলার নিন্দা প্রস্তাব – U.S. Bangla News




সংসদে গাজায় ইসরাইলি হামলার নিন্দা প্রস্তাব

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ৩১ অক্টোবর, ২০২৩ | ৫:০৮
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত এবং নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, মানবাধিকারের কথা বলা হয়, কিন্তু ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এটা বন্ধ করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ড, এই যুদ্ধ আমরা চাই না। আমাদের কথা হচ্ছে ফিলিস্তিনের ন্যায্য দাবি যেন মেনে নেওয়া হয়। তাদের রাষ্ট্র যেন তারা ফেরত পায়, সেটাই আমরা চাই। তিনি এসময়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফিলিস্তিনে সেবাখাত খুলে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। সোমবার জাতীয় সংসদে ১৪৭ বিধির আওতায় উত্থাপিত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর হামলায় জাতীয় সংসদে নিন্দা

প্রস্তাব উত্থাপন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারদলীয় সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। ফিলিস্তিনের আগে অনেক জায়গা ছিল কিন্তু তা দখল করতে করতে ক্ষুদ্র একটি জায়গা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বড় দেশ ছিল, ধীরে ধীরে তা দখল করতে করতে এখন ক্ষুদ্র একটি অংশ তাদের। তারপরও একটি প্রস্তাব ছিল টু স্টেট ফর্মুলা। এটাও তারা মানছে না। আমাদের কথা হচ্ছে ফিলিস্তিনের ন্যায্য দাবি যেন মেনে নেওয়া হয়। তাদের রাষ্ট্র যেন তারা ফেরত পায়। সেটা আমরা চাই। সেবাটা খুলে দেওয়া উচিত। শিশুদের এভাবে কষ্ট দেওয়া এটা কখনোই গ্রহণ করতে পারি না। এ ঘটনার পর বাংলাদেশের পক্ষ

থেকে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকতে। জাতিসংঘ থেকে যখন যে চেষ্টা হয় এবং কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাকাণ্ড হলে তার নিন্দা জানাই। এটাই আমাদের নীতি। আরবলীগের সঙ্গে আমরা স্পন্সর হয়ে জাতিসংঘে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছি। সেখানে ১২০ দেশ আমাদের সমর্থন দিয়েছে। আমরা চাই অন্তত সেবাখাত খোলা হোক। যাতে ওখানকার মানুষগুলো বাঁচতে পারে। সেই সেবাখাতটা বন্ধ করে কষ্ট দিচ্ছে। ইসরাইল ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর যা ঘটাচ্ছে তা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। ফিলিস্তিনে অনবরত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, নারী ও শিশু সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সেখানে কী অবস্থা?

আমরা মানবাধিকারের কথা শুনি। অনেক কিছু শুনি। আমাদের প্যালেস্টাইনের জনগণ যে অমানবিক জীবনযাপন করছে, সেখানে হাসপাতাল নিরাপদ মনে করে মা তাদের সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখানেই ইসরাইলি বাহিনী এয়ার অ্যাটাক করে, বোম্বিং করে. নারী-শিশুকে হত্যা করে। একটা জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে। এর নিন্দার ভাষা নেই। হাসপাতালের মতো জায়গায় কী করে হামলা করতে পারলো? মানুষ হত্যা করতে পারলো? বাংলাদেশে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কীভাবে ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করেছি। ব্রাসেলস সফরে গিয়ে আমার ভাষণে এ বিষয়টি তুলেছি। সেখানে ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং প্রতিনিধিরা ছিলেন। সেখানে

আমি বলেছি, আপনারা আর যাই করেন যুদ্ধ বন্ধ করেন। যুদ্ধ মানুষের মঙ্গল আনে না। অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। অস্ত্র প্রতিযোগিতা মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে। নারী-শিশুদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি। অস্ত্র প্রতিযোগিতার টাকা শিশুদের শিক্ষা ও চিকিৎসায় ব্যয় করেন। তাহলে বিশ্বের মানুষের কষ্ট থাকবে না। অতীতের হামলার ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এর আগেও কিন্তু এভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। নারী-শিশু, অন্তঃসত্ত্বা হত্যা করেছে। শিশুরা বড় হলে নাকি যোদ্ধা হয়ে যায়, তাই তাদের হত্যা। আমি যখন যে ফোরামে গিয়েছি এসব হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানিয়েছি। এ ধরনের ঘটনা আমরা কখনো মেনে নিতে পারি না। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে প্রতিবাদ করা একজন মানুষ হিসেবে,

মা হিসেবে প্রতিবাদ করা আমাদের দায়িত্ব। এই হত্যাকাণ্ড, যুদ্ধ আমরা চাই না। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে ওষুধ, খাদ্য এবং নারী ও শিশুদের জন্য পণ্যসামগ্রী পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটা ওখানে পৌঁছানোর সুযোগ নেই। আমরা মিশরে পাঠিয়েছি, তারা গ্রহণ করেছে। সেখান থেকে পৌঁছে দেবে। সব থেকে দুর্ভাগ্য যে সেখানে খাবার, ওষুধ, কোনো কিছুই দিতে দিচ্ছে না। ইসরাইলি বাহিনী চারদিক বন্ধ করে রেখেছে। এটা কোন ধরনের কথা! যে কোনো যুদ্ধে নারী-শিশু ও হাসপাতালের ওপর এভাবে হামলা হয় না। খাবার বন্ধ হয় না। কিন্তু আজ সেখানে খাবার-পানি সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে অমানবিক যন্ত্রণা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে মানুষ হাহাকার

করছে। এর আগে মাহমুদ আলীর প্রস্তাবে বলা হয় সংসদের অভিমত এই যে, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইল কর্তৃক পরিচালিত নৃশংস গণহত্যার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে এবং এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছে। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মানবাধিকারের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। এই সংসদ ফিলিস্তিনে মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বের সব বিবেকবান জনগণ, রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিশ্বের মুসলিম উম্মাহকে ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষা এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কার্যকরভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।’ আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেনম, যারা কথায় কথায় গণতন্ত্রের ছবক দেয় এবং মানবাধিকারের কথা বলেন- ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলার ঘটনায় তারা

এখন নিশ্চুপ কেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইসরাইল ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করে। সেই হামলায় এখন পর্যন্ত আট হাজারের বেশি মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। প্রতিমুহূর্তে মানুষ মারা যাচ্ছে। নিহতদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি শিশু এবং দুই হাজারের বেশি নারী রয়েছেন। অর্থাৎ, নারী ও শিশুরাই হত্যাকাণ্ডের শিকার বেশি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গাজায় লাখ লাখ মানুষ বস্তুচ্যুত হয়েছে। এমনকি সেখানে হাসপাতালগুলোও হামলা থেকে রেহাই পায়নি। সেই হামলায় অনেকে মারা গেছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরাইল সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা অবাক বিস্ময়ে দেখলাম- পৃথিবীর একটি শক্তিধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান (বাইডেন) সেখানে (ইসরাইল) গেলেন। সেখানে গিয়ে

সেদেশের প্রধানমন্ত্রীর (বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু) সঙ্গে কোলাকুলি করলেন। সেই রাষ্ট্রপ্রধান হামাসের নিন্দা করলেন, কিন্তু গাজায় হাসপাতালে হামলা ও নারী-শিশু হত্যার নিন্দা তিনি করলেন না। তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গাজায় হাসপাতালে হামলার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল করা নিষিদ্ধ করেছে। তারা বারবার মুক্ত গণমাধ্যম, মুক্তমত এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে। সেখানে ফ্রান্সের আইনমন্ত্রী এক ধাপ বাড়িয়ে বলেছেন যে, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বললে সেটি আইনগত অপরাধ বলে গণ্য করা হতে পারে। অথচ তারাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে। মাঝে মাঝে আমাদের মতো দেশগুলোকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে তারা প্রেসক্রিপশন দেয়।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম বার্ষিকী উদযাপিত আগামী অর্থবছরের বাজেট সংকটেও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা রিজার্ভে স্পর্শকাতর তথ্য বিক্রি করেন র‌্যাব-এটিইউর দুই কর্মকর্তা বিদেশে ৬ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের খোঁজ বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর ৪৪৮ কোটি টাকা রণক্ষেত্র এখন জাবালিয়া, ইসরাইল-হামাস তুমুল লড়াই রাজধানীতে দাপটে চলছে ব্যাটারির রিকশা সিলেটে নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স বাতিল হচ্ছে না বিএনপির ২০ নেতাকে সতর্ক বার্তা আলোচিত বক্তব্য দেওয়া সেই যুব মহিলা লীগ নেত্রী বহিষ্কার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঋণের ১ লাখ কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে: আইএমএফ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে অপহরণ হলেন দুই বাংলাদেশি চাকমা অনিবন্ধিত অনলাইন ও ওয়েব পোর্টাল বন্ধের সিদ্ধান্ত বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণি সরকারি কর্মচারীদের বিদ্যুৎ খাত লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বগুড়ায় হিমাগার থেকে ফের এক লাখ ডিম উদ্ধার মালয়েশিয়ায় মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট শনাক্ত নীরব ঘাতক উচ্চ রক্তচাপ: নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন আরও বাড়ল স্বর্ণের দাম