২৩ স্থানে নাশকতার শঙ্কা – U.S. Bangla News




২৩ স্থানে নাশকতার শঙ্কা

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ১৬ নভেম্বর, ২০২৩ | ৮:৪৯
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা হতে পারে। এর মধ্যে ২৩টি স্থান নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব স্থানে পিকেটিংসহ পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের অস্ত্র ছিনতাই, নির্বাচনি ও রাজনৈতিক কার্যালয় ভাঙচুর, রাস্তা অবরোধ, যানবাহনে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে। অন্দোলনকারীরা বেইলি ব্রিজ ও কালভার্ট ধ্বংসের পাশাপাশি লঞ্চ-স্টিমার-ফেরিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করতে পারে। কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেল স্টেশন, গাবতলী-সায়েদাবাদ-মহাখালী বাস টার্মিনাল এবং সদরঘাট লঞ্চঘাটসহ বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনে নাশকতার শঙ্কা আছে। এসব বিষয় সামনে রেখে সারা দেশে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্থান ২৩টি হচ্ছে-ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, নারায়ণগঞ্জ,

কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা, সিলেট মহানগর, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, পাবনা, নেত্রকোনা, বগুড়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, সিরাজগঞ্জ, ভোলা, মাগুরা, রাজশাহী, বরগুনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং বরিশাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। তফশিলপরবর্তী নিরাপত্তা ছকের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরে ডিআইজি (অপারেশন্স) আনোয়ার হোসেন বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সব ইউনিটকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সবাই মাঠে নেমে পড়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচনি কার্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মহানগর, জেলা ও উপজেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিজিবিসহ র‌্যাব-পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল এবং লঞ্চঘাটে গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাস্তার পাশে গাছ কেটে বা রাস্তায়

গর্ত করে যেন কেউ নাশকতা করতে না পারে সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশ। ব্রিজ ও কালভার্টের ক্ষতি করে আন্দোলনকারীরা যেন যান চলাচলে বাধা দিতে না পারে সেজন্য পুলিশ তৎপর। ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, সচিবালয়, সুধাসদন, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মন্ত্রী-এমপিদের বাসভবন, বিদেশি দূতাবাস, সাবমেরিন কেবলস, রেল স্টেশন, নৌ-টার্মিনাল, পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশন, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, টানেল, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়ক, রেল সেতু ও ফ্লাইওভারসহ কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিñিদ্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াত শিবির অধ্যুষিত এলাকায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। জামায়াত শিবিরসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ছাত্রাবাস, হল ও

মেসে জোরদার করা হয়েছে তল্লাশি কার্যক্রম। সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশে যেসব নাশকতার মামলা হয়েছে সেসব মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কূটনীতিক ও বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বভাবিক রাখতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, অন্তত চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের অপর এক ডিআইজি জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে কেউ যেন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাসা-বাড়ি ও উপাসনালয়ে হামলা করতে না পারে সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া আছে। দেশব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তল্লাশি কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি

পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা যথাযথ গিয়ার পরিধান করে দায়িত্ব পালন করবে। আপৎকালীন রিজার্ভ ফোর্স স্ট্যান্ডবাই থাকবে। ঢাকামুখী নিত্যপণ্যের নিরাপত্তা ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া আছে। দেশের বিভিন্ন এলাকার নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তফশিল-পরবর্তী সময়ে বিএনপি ও সমমনা দলের পক্ষ থেকে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালনে প্ররোচিত করা হতে পারে। প্রশাসন ব্যবস্থাকে অচল করে দিতে সচিবালয়ে সরকারবিরোধী মনোভাবাপন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠিত করে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টা হতে পারে। অফিসে

যাওয়ার পথে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধার মুখে পড়তে পারেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ওপর হামলাসহ তাদের বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত আক্রান্ত হতে পারে। বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তফশিল-পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন, পুলিশ তাই করবে। আন্দোলনের নামে কোনো নৈরাজ্য বা বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন হলে পুলিশ সে আন্দোলনে সহযোগিতা করবে। আন্দোলনের নামে যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। এদিন দুপুরে নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, তফশিল ঘোষণার পর উসকানি, জনমনে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি জানান, তফশিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে অথবা ঘোষণার পর কেউ যদি সহিংসতা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, জনগণের নিরাপত্তা দিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি অলিগলিতে মোটরসাইকেলে কাজ করবে পুলিশের পেট্রল টিম। নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ঢাকার কোথাও মিছিলের নামে নাশকতার চেষ্টা করা হলে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলের রাজনীতি নিয়ে কোনো কথা নেই, তারা তাদের কর্মসূচি পালন করবে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে কেউ যদি বাস পোড়ানো-ভাঙচুরের চেষ্টা করে এবং অরাজকতার মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে

ডিএমপি জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে। তিনি বলেন, আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশন কার্যালয়সহ ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের সব কার্যালয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ব্যুরো : তফশিল ঘোষণার পর যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। নগরীতে নামানো হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। নগরী ও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশও টহল দিচ্ছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ও পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে ১৪ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির সঙ্গে ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন। সিএমপির এডিসি (পিআর) স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, ‘তফশিল ঘোষণার পর যাতে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা

ও নাশকতা করতে না এ ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। গুরুত্বপর্ণ স্থানে পুলিশ টহল দিচ্ছে।’ রংপুর : রংপুর ব্যুরো জানায়, তফশিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রংপুর মহানগরীসহ জেলায় নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় নাশকতার চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। বুধবার বেলা ১১টায় রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় মহড়া শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আবু মারুফ হোসেন বলেন, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকাতে কোনো ধরনের নাশকতা ঘটাতে দেব না।
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
মঙ্গলবার থেকে খুলছে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে মুখ খুললেন পিয়া জান্নাতুল কেন পরমাণু মহড়া চালাতে চায় রাশিয়া? রাফাহ ছাড়তে ইসরাইলের নির্দেশ, হামলা হবে ইয়াবা সেবন করে শিশু-বৃদ্ধদের পেটাতেন মিল্টন: হারুন টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হামলার হুমকি রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার জন্য ওআইসি সদস্যদের প্রতি আহবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর খালি কলসি বাজে বেশি: ওবায়দুল কাদেরকে রিজভী কেন পরমাণু মহড়া চালাতে চায় রাশিয়া? নিউইয়র্কে ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজের শুভ জন্মদিন উদযাপন ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক চাহিদার প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম প্রণয়নের আহ্বান রাষ্ট্রপতির অভিবাসন সংক্রান্ত অপতথ্য রোধে বাংলাদেশ-ইতালি একসঙ্গে কাজ করবে : তথ্য প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরত রাখা নীতিগত সিদ্ধান্ত : ওবায়দুল কাদের বুধবার ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবিতে ১৫০ চিকিৎসকের যৌথ বিবৃতি নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত মৌলিক ন্যূনতম শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করা হবে অবৈধ কারেন্ট জালসহ নিষিদ্ধ অন্যান্য জাল ব্যবহার করতে দেয়া হবে না: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী রাশিয়ান রকেট হামলায় দোনেৎস্ক অঞ্চলে ২ জন নিহত