কেমন হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন? – U.S. Bangla News




কেমন হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন?

ইউ এস বাংলা নিউজ ডেক্স:-
আপডেটঃ ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ | ৯:০৫
জাতীয় নির্বাচন শেষে দেশ এখন স্থানীয় নির্বাচনমুখী। গত ৯ মার্চ কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো খুব বেশি একটা সহিংসতা ছাড়াই। আগামী মাসগুলোয় পর্যায়ক্রমে উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন কাউন্সিলসহ বেশকিছু স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। বলাই যায়, জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় নির্বাচন ইসির জন্য অনেক বড় একটি কর্মযজ্ঞ। গত দুটি স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার আগে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন ছিল না। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উদ্দেশ্য ছিল তৃণমূলের রাজনীতি সংঘবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল করা, দলীয় ভিত্তি মজবুত করা। দুটি নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার পর বর্তমান নির্বাচনে দলীয়

কোনো প্রার্থী না রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাহলে কী ধরে নেওয়া যায়, তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেটি সফল হয়েছে? স্থানীয় নির্বাচনব্যবস্থা গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য সহায়ক। কিন্তু গত দুটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই মোটামুটি বিজয়ী হয়েছিল এবং সেই সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও, যাদের বেশির ভাগই আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তৃণমূল নেতারা মাঠ গোছানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন কেন্দ্রীয় নেতাদের সমর্থন লাভের, ধারণা এমন ছিল, যিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন, তিনিই হবেন নির্বাচিত। এর ব্যতিক্রমও দেখা গেছে, গত স্থানীয় নির্বাচনেই হাজারখানেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে আওয়ামী সমর্থিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা ধরাশায়ী হয়েছেন।

সরকারদলীয় হাইকমান্ড থেকে স্থানীয় নির্বাচনে কোনো দলীয় প্রার্থী থাকবে না ঘোষণা আসার পর থেকেই মাঠের রাজনীতির চিত্র বদলাতে শুরু হয়েছে। ধারণা করা যায়, সামনের নির্বাচনগুলোয় ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ শেষ, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেই জিতে আসতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য সরকারদলীয় হেভিওয়েট প্রার্থীদের জনগণের দ্বারে দ্বারে এখন থেকেই ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বোঝা যায়, জনগণও এবার ভোটকেন্দ্রমুখী হবে। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে সরকারদলীয় ৬০ জনেরও বেশি প্রার্থীকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেন এবং ওইসব কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো; তারই প্রভাব স্থানীয় নির্বাচনে পড়বে। আর দলীয় প্রার্থী না থাকার কারণে যে কারও

পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে যে কেউ; ফলে ভোটের মাঠে লড়াই জমে উঠবে। তবে সেই সঙ্গে কিছু চিন্তার বিষয়ও রয়েছে, গত দুটি স্থানীয় নির্বাচনেই তুলনামূলক সহিংসতা কম হতে দেখা গেছে; আওয়ামী লীগের তৃণমূলে ছোটখাটো কোন্দলও তারা ভালোভাবে মিটিয়ে নিতে পেরেছে। এজন্য দলীয় প্রতীকের বাইরে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতেও দেখা গেছে; কিন্তু এবার যেহেতু আর দলীয় প্রতীক থাকছে না, সেহেতু ধারণা করা যায়, আওয়ামী লীগেরই একাধিক প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে তুমুল; তাই তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে দেখা দিতে পারে বিভেদ; নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিসংতাও গত দুবারের তুলনায় অনেক বেড়ে যেতে পারে এবং ভোটের মাঠের কোন্দলের রেষ থেকে যাবে দীর্ঘদিন। জনগণকে নির্বাচনমুখী

করতে ও বিরোধীদলগুলোকে আন্দোলন থেকে ভোটের মাঠমুখী করতে একের পর এক স্থানীয় নির্বাচনের ছক সরকারের মেয়াদ পূর্ণ করতে সহায়তা করবে এবং বড় আন্দোলনেরও সম্ভাবনা থাকবে না। উপজেলা নির্বাচনের পরই আসবে স্থানীয় নির্বাচন। উপজেলা নির্বাচনে যদি সরকারের ভোটার টানার নীতি কাজে লাগে, তাহলে স্থানীয় নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা কম। দীর্ঘদিন ধরে জনগণকে ভোটবিমুখতা থেকে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সব মহল কাজ করে যাচ্ছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের সম্ভাবনা কম, কিছু নেতাকর্মী হয়তো স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হবেন। এছাড়া বেশির ভাগই হবে আওয়ামী হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে লড়াই। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনের মাঠে জনসমর্থন ও প্রশাসনের সমর্থন আদায়ের জন্য প্রার্থীরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাবেন। জাতীয় নির্বাচনের

অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এবারের উপজেলা নির্বাচনেও প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রতিনিধিদের ভোটারদের দ্বারস্থ খুব বেশি একটা হতে দেখা যায়নি। ফলে স্থানীয় নেতাদের মাঝেও একধরনের স্বেচ্ছাচারিতা দেখা দিয়েছে। তবে এ নির্বাচনে হলফ করে বলা যায়, নতুন চমক আসবে। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থী বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে স্থানীয় ভোটারদেরও মূল্যায়ন বাড়বে। তবে স্থানীয় কোন্দল, নির্বাচনকালীন সহিংসতার ঘটনাও অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারে। হেভিওয়টে প্রার্থীরা চেষ্টা করবে মাঠ দখলে রাখার। স্থানীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটারমুখী করার সরকারের এখনই সুবর্ণ সুযোগ, সেই সঙ্গে ভোটে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনারও সুযোগ রয়েছে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের ভূমিকাই পারে জনগণকে আবারও ভোটকেন্দ্রমুখী

করতে। সরকার কোনোভাবেই চাইবে না রাজনীতির মাঠ আবারও উত্তপ্ত হোক; সে ক্ষেত্রে বিরোধী দলসহ সব দলকে নির্বাচনমুখী করা ও নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যস্ত রাখা সরকারের উত্তম কৌশল হতে পারে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছেও নির্বাচন নিয়ে যে বিতর্ক, তাও মোচনের সুযোগ আছে। বিরোধী দলগুলোর জন্যও বড় সুযোগ হতে পারে স্থানীয় উপজেলা নির্বাচন। দীর্ঘদিন ক্ষমতা ও নির্বাচনের বাইরে থাকা বড় দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোও এ সুযোগে মাঠ গুছিয়ে নিতে পারবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের আরও শক্তিশালী করতে পারবে। সাইফুল ইসলাম : প্রভাষক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর
ট্যাগ:

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
৮ দফা কমে আবার দুদফায় ১৭৮৫ টাকা বাড়ল সোনার দাম জিম্বাবুয়েকে ১৩৮ রানে থামিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ের স্বপ্ন দেখছে টাইগাররা ডিবিতে ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ, যা জানালেন মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী শুক্রবার ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি ভুল করে ফেসবুকে পোস্ট হয়েছিল: মন্ত্রণালয় হামাসের রকেট হামলায় ইসরাইলে আহত ৭ শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানো হবে কিনা, জানালেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী শাপলা চত্বরে সমাবেশের ১১ বছর পর এখন কী অবস্থা হেফাজতের? পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হওয়া রাজনৈতিক ব্যর্থতা মিল্টন সমাদ্দারের অ্যাকাউন্টে কত টাকা, জানালেন ডিবিপ্রধান দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোটে দাঁড়ানোয় ২ বিএনপি নেতার পরিণতি পরকীয়ার জেরে হত্যা, বাবা-ছেলে-পুত্রবধূসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করবে ছাত্রলীগ ইসরাইলে বন্ধ আল-জাজিরা, যা বললেন নেতানিয়াহু মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী ডিবি কার্যালয়ে, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ স্ত্রীকে নিয়ে ওমরাহ পালন করলেন মির্জা ফখরুল উপজেলার ‘ডা‌মি’ নির্বাচনও বর্জনের আহ্বান রিজভীর ইসরাইলে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধে একমত মন্ত্রিসভা সারা দেশে গাছ কাটা ইস্যুতে ৫ নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট যুদ্ধবিরতিতে বাধা দিচ্ছে নেতানিয়াহু: হামাস