নির্বিচারে পাহাড় কাটা থামছে না – ইউ এস বাংলা নিউজ




নির্বিচারে পাহাড় কাটা থামছে না

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ৯:২৫ 58 ভিউ
হবিগঞ্জ জেলার সব পাহাড় ও টিলা সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ২০১৭ সালে পাহাড় কাটা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের জেরে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জেলার চুনারুঘাট, নবীগঞ্জ, বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কেটে উচ্চ দামে লাল মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক লিখিত অভিযোগ। তবে থানা পুলিশ ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে শিথিলতা বিরাজ করায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শুধু হবিগঞ্জ নয় চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, সিলেট, ময়মনসিংসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাহাড় কাটার উৎসব চলছে। প্রশাসন মামলা ও জরিমানা করে পাহাড় কাটা রোধে চেষ্টা

চালিয়ে গেলেও তা কার্যকর নয়। পরিবেশের মামলায় বেশিরভাগই অর্থদণ্ডে নিষ্পত্তি হয়। এটিও পাহাড় কাটা বন্ধ না হওয়ার অন্যতম কারণ মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পাহাড় কাটা রোধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) বিভিন্ন সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছে। পাহাড় কাটা বন্ধ চেয়ে জনস্বার্থে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। জানতে চাইলে মনজিল মোরসেদ মঙ্গলবার বলেন-চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট জেলায় পাহাড় কাটা বন্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে একাধিক আবেদন করা হয়। আদালত পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। দেখা যাচ্ছে, রায়

অমান্য করে পাহাড়গুলো কেটে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় এক শ্রেণির লোকজন। পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে কার্যকর প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় পাহাড় রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল পাহাড় কেটে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও পরিবেশ নষ্ট করছে, যা বন্ধ হওয়া আবশ্যক। কিন্তু এ বিষয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। চলতি বছরের ২ এপ্রিল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। সাজেকে পাহাড়ের মাটি কাটা সম্পর্কে ২৯ মার্চ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে জনস্বার্থে

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে একটি রিট পিটিশন করা হয়। আদালত এক অন্তর্বর্র্তীকালীন আদেশে প্রশাসনকে মনিটরিং টিম গঠন করার নির্দেশ দেন যাতে কেউ পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতীত পাহাড় কাটতে না পারে। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পাহাড় ও কৃষি জমির মাটি কাটা ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের এ নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিচালককে নির্দেশ দেন আদালত। এক রিট আবেদনে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি

মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কেএম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানান, হাইকোর্টের রায়ের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু কিছু দিন পর ফের পাহাড় কাটা শুরু হয়। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়েছে। মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জে পাহাড় ও টিলা কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৫ ধারা অনুসারে চার সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে করা এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। উচ্চ আদালতের রায়ের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে

কোনো ধরনের তৎপরতা দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। ফলে পাহাড় কাটা অব্যাহত আছে। এ প্রসঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মো. খসরুজ্জামান বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পাহাড়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কিন্তু আমাদের দেশে নির্বিচারে পাহাড় নিধন চলে। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি পাহাড় ধসে প্রাণ হারায় এর পাদদেশে বসবাসরত মানুষ। এজন্য পাহাড় রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। কিন্তু প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্য ও মানুষের অসচেতনতায় নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই থামানো সম্ভব হচ্ছে না। পরিবেশের ওপর যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে পাহাড় কাটা হচ্ছে। যা গুরুতর অপরাধ। শুধু অর্থদণ্ড নয়, অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে

শাস্তি নিশ্চিত না করলে, পাহাড় কাটা কিছুতেই থামবে না। জানা যায়, চট্টগ্রামে ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৫৬০টি পাহাড় কাটার অভিযান পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব অভিযানে ৮৫ কোটি ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরে চলতি বছরে পাহাড় কাটার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর পাঁচটি মামলা করেছে। আগের বছর মামলা হয় ১০টি। ২০২২ সালে মামলা হয়েছিল ২২টি। বৃহত্তর চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি পাহাড় কাটা হয়েছে কক্সবাজার এলাকায়। এ পর্যন্ত এখানে পাহাড় কাটার জন্য ১৮১টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টিতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ৬৬টি মামলার তদন্ত চলছে। চট্টগ্রাম জেলা, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে মোট মামলা হয়েছে ৬০টি। এর মধ্যে ৫২টির অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া বান্দরবানে ২১টি ও কুমিল্লায় পাহাড় কাটার অপরাধে ৯টি মামলা হয়েছে। গত চার মাসেও এসব এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
ঢাকায় ২ বোন হত্যা, মাস্ক-ক্যাপ পরা সেই ব্যক্তি গ্রেফতার ‘পরমাণু অস্ত্র নয়, শান্তিই চাই’, বিশ্বকে বার্তা পেজেশকিয়ান থাকছে না পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এলো ‘আলোচনার জন্য’ নিজ দেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার আইভীর জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ডিভিশন মঞ্জুর ৪ জেলায় বন্যার আভাস যুদ্ধবিরতির পর ভারত ও পাকিস্তান যা দাবি করছে মোদি এখন বুঝতে পারছেন পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া কতটা ব্যয়বহুল: আফ্রিদি সন্ত্রাসী হামলার পর কাশ্মীরের অর্থনৈতিক-কূটনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে ফ্যাসিস্ট ইউনুস সরকারের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা: স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের উপর নিষ্ঠুর আঘাত সকালের মধ্যে ৬ জেলায় ঝড় ও বৃষ্টির আশঙ্কা ২ লাখেরও বেশি নার্স-সংকট, সাদা পোশাক ফেরত চান তারা রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা কমছে ১ হাজার কোটি টাকা সাগরে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ যে কারণে দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ভারত-পাকিস্তান পু‌তি‌নের স‌ঙ্গে বৈঠক কর‌তে তুরস্ক যা‌চ্ছেন জে‌লেন‌স্কি আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মাঝে বালোচিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করলেন মির ইয়ার বালোচ রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্তেই কি লাদেনকে আশ্রয় দেয় পাকিস্তান?