ঝুঁকির মাত্রা খতিয়ে দেখছে সরকার – ইউ এস বাংলা নিউজ




ঝুঁকির মাত্রা খতিয়ে দেখছে সরকার

ডেস্ক নিউজ
আপডেটঃ ৫ অক্টোবর, ২০২৪ | ৭:৪৭ 43 ভিউ
বিদায়ি অর্থবছর পর্যন্ত দেশি ও বিদেশি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা, চূড়ান্ত হিসাবে আরও বাড়তে পারে। এর বাইরে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে সম্প্রতি আরও দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি (১৩ বিলিয়ন ডলার) প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। কিন্তু পাহাড় পরিমাণ ঋণের স্তর শেষ পর্যন্ত ঝুঁকিতে ফেলছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে অর্থ বিভাগ। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ ঋণ ঝুঁকি নিরূপণ কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে নিজস্বভাবে বিশ্লেষণ করবে অর্থ বিভাগ। এরপর সেটি তুলে ধরা হবে অর্থ উপদেষ্টার কাছে। একই সঙ্গে ঋণের অর্থের সঠিক ব্যবহারও নিশ্চিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। একটি দেশের ঋণের বোঝা বেশি হলে ওই

দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দেশে এ পর্যন্ত ঋণের অঙ্ক অনেকটা বেশি মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব আহরণ ও রপ্তানি আয় না হওয়ায় এ ঋণের অঙ্ক আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার বলেন, আমাদের অনেক কাজের মধ্যে এটিও একটি কাজ। এ কাজটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। বিগত সরকার ঋণ অনেক বেশি নিয়েছে যা অর্থনীতিকে চাপে ফেলছে-দৃষ্টি আকষর্ণ করা হলে তিনি সায় দিয়ে বলেন, সবকিছুই পর্যালোচনা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে সাবেক অর্থ সচিব (সিনিয়র) মাহবুব আহমেদ জানান, ইতঃপূর্বে নেওয়া ঋণগুলো যথাযথ

ব্যবহার, যে শর্তে ঋণ নেওয়া সেটি লঙ্ঘন হলো কিনা, যে প্রকল্পের বিপরীতে ঋণ নেওয়া, আদৌ সে প্রকল্প গ্রহণের প্রয়োজনীতা ছিল কিনা এ বিষয়গুলোও পর্যালোচনা করা দরকার। ঋণ ব্যয় ও ঋণ ঝুঁকি দুটিই দেখা উচিত। সার্বিক জিডিপির অনুপাতে ঋণ বিশ্লেষণ করলে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে নেই বাংলাদেশ। কিন্তু ঋণের অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথাযথ হয়েছে কিনা সেটি দেখতে হবে। অর্থ বিভাগের খসড়া হিসাবে জুন পর্যন্ত সরকারের মোট ঋণের অঙ্ক ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে একটি দেশ তাদের জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ করা ঝুঁকিমুক্ত দেখা হয়। কিন্তু ৫৫ শতাংশের ওপর

ঋণ অনুপাত অতিক্রম করলে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দেশটি সে হিসাবও করা হয়। ওই হিসাবে বাংলাদেশ এখনও ঋণ সংকট ঝুঁকিতে পড়েনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও দেখা গেছে, এ সময় দেশি ঋণের অঙ্ক ১১ লাখ ৯৮৩ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং বিদেশি ঋণের অঙ্ক সাত লাখ ৮৫ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৪ দশমিক ০৪ শতাংশ। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকারের ঋণ এবং গ্যারান্টির পরিমাণ হচ্ছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যা ওই অর্থবছরের জিডিপির ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ। মোট ঋণের ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ স্থানীয় মুদ্রায় অভ্যন্তরীণ ঋণ। বৈদেশিক ঋণের

পরিমাণ মোট ঋণের ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আওতায় বহুজাতিক ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ২৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। সূত্রমতে, খুব শিগগিরই বাংলাদেশে ঋণ ঝুঁকির মাত্রা বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রণয়নের কাজ শেষ হচ্ছে। ঋণের সার্বিক তথ্য বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা নিু, মধ্যম ও উচ্চমানের এই তিন ক্যাটাগরির কোনোটিতে আছে বাংলাদেশ তা প্রকাশ করা হবে। তবে এর আগে সম্প্রতি প্রকাশিত আইএমএফের কান্ট্রি রিপোর্টে ‘ডেট সাসটেইনেবিলিটি’ পর্যালোচনা অংশে বাংলাদেশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অংশ

হিসাবে ঋণের ঝুঁকি ‘নিুমাত্রা’য় রয়েছে। রাজস্ব আয় ও রপ্তানির অংশ হিসাবে ঋণের পরিমাণ নিয়ে ঝুঁকি বাড়ছে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য আর্থিক সংকটের কারণে ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে জিডিপির অনুপাত ঋণের ঝুঁকি কম থাকলেও রাজস্ব ও রপ্তানির অনুপাতে ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আইএমএফ আরও বলেছে জিডিপির অনুপাতে ঋণের ঝুঁকি খুব বেশি না হলেও সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঋণের উচ্চ সুদ আগামী বছরগুলোয় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। সূত্রমতে, ঋণ ব্যবস্থাপনায় দেশের ঝুঁকি নিরূপণ করতে সরকারের মোট ঋণের প্রোফাইল, সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক এবং ঋণ ঝুঁকি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। নিজ দেশের ঋণ ঝুঁকি নিজস্বভাবে নিরূপণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে এ বিষয়টি জানতে চাইলে অর্থ

বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, দাতা সংস্থাগুলো ইতঃপূর্বে বাংলাদেশের ঋণ ঝুঁকির যে তথ্য প্রকাশ করেছে সেটি আমাদের কাছ থেকে ডাটা নিয়েই করেছে। যে ফরমুলা অনুসরণ করে দাতা সংস্থাগুলো ঝুঁকি নিরূপণ করছে সে ফরমুলা আমরাও অনুসরণ করছি। ফলে আমাদের হিসাব ভুল হবে না। অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের জিডিপির পাশাপাশি রাজস্ব আয়ের অনুপাতে ঋণ পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। কারণ ঋণ পরিশোধে টাকা কিংবা ডলার প্রয়োজন। জিডিপির অনুপাতে বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের হার অত্যন্ত কম। রাজস্ব আয়ের অনুপাতে বাংলাদেশের ঋণ ৩৮০ শতাংশের মতো। সার্বিকভাবে ঋণের দায় পরিশোধ দেশের অর্থনীতিতে অন্যতম সংকট হিসাবে দেখা দিয়েছে। ঋণ ঝুঁকি নির্ধারণের পাশাপাশি সরকারের ঋণ ব্যয় হ্রাস ও ঋণ ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল শনাক্ত করা হবে। বর্তমান বিদেশি ঋণ পাওয়ার হার কিছুটা কম থাকায় দেশীয় উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। পাশাপাশি সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমিয়েছে এবং দীর্ঘমেয়াদে ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করে বেশি ঋণ গ্রহণকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:


শীর্ষ সংবাদ:
আমিরাতে লটারিতে ৬৩ কোটি টাকার মালিক দুই বাংলাদেশি সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান সাতটি সুপারিশ যুদ্ধ বিরতি কার্যকরে গাজা উপত্যকাজুড়ে ফিলিস্তিনিদের উল্লাস যুদ্ধ বিরতিতে রাজি ইসরায়েল-হামাস বাংলাদেশ-পাকিস্তান শক্তিশালী নিরাপত্তা জোট, শঙ্কায় ভারত! ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ঘটনায় আটক ২ ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনর্নির্বাচন ২১ বছরে সংসদ নির্বাচন করার সুপারিশ নতুন করে ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব শিক্ষাঙ্গনে নীতিমালা প্রণয়নে এক ধরনের ডানপন্থার প্রভাব লক্ষ করছি ফিলিস্তিনিকে হত্যার দায়ে ক্ষমা পাবেন না মেট্রো স্টেশনে ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণ, আটক ১ সেন্টমার্টিনে অগ্নিকাণ্ড ॥ পুড়ে ছাই তিন রিসোর্ট মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৮ পদে নিয়োগ দুই কোচকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে বাফুফে টুইটারের পর এবার টিকটক কিনতে যাচ্ছেন মাস্ক? দাবানলে ‘হুমকির’ মুখে ৬০ লাখ মানুষ কী আছে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে? আমির খানের সেই অনুষ্ঠান নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য পাকিস্তানি অভিনেত্রীর