আইসল্যান্ডে ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ ভূমিকম্প, জরুরি অবস্থা

১১ নভেম্বর, ২০২৩ | ৮:১০ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেস্ক , ইউ এস বাংলা ২৪

আইসল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম রেকজেনেস উপদ্বীপে ১৪ ঘণ্টায় ৮০০ ভূমিকম্পের পর সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় দেশটির গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সবচেয়ে বড় কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে ভূমিকম্প হতে পারে। জাতীয় পুলিশ প্রধান গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সুন্ধনজুকাগিগারে তীব্র ভূমিকম্পের (ক্রিয়াকলাপ) কারণে নাগরিক প্রতিরক্ষার জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। খবর এনডিটিভির নাগরিক সুরক্ষা এবং জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিবৃতিতে ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় হতে পারে এবং এই সিরিজ ভূমিকম্পগুলো বিস্ফোরণের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে। আইসল্যান্ডিক মেট অফিস (আইএমও) জানিয়েছে, ‘কয়েক দিনের মধ্যে’ অগ্ন্যুৎপাত ঘটতে পারে। এজন্য গ্রিন্ডাভিক গ্রামের চার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সাড়ে ৫টায় রাজধানী রিকজাভিক থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে দু’টি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনভূত হয়। এতে দেশটির দক্ষিণ উপকূলের বেশিরভাগ অংশে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়েছিল। আইএমওর প্রাথমিক পরিসংখ্যান মতে, গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সবচেয়ে বড় কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২। কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর পুলিশ গ্রিন্ডাভিকের উত্তর-দক্ষিণে চলমান একটি রাস্তা বন্ধ করে দেয়। আইএমওর তথ্যমতে, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রায় ৮০০টি ভূমিকম্প নিবন্ধন করা হয়। অক্টোবরের শেষ থেকে শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট প্রায় ২৪০০০ কম্পন নিবন্ধন করা হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। এছাড়াও প্রায় পাঁচ কিলোমিটার গভীরতায় ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা জমার কথা উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। এটি পৃষ্ঠের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করলে আরও অগ্ন্যুৎপাত হবে বলে জানানো হয়। তবে সংস্থাটি বলছে, ম্যাগমাকে পৃষ্ঠে পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ বলেছে, ‘নিরাপত্তার জন্য টহল জাহাজ থরকে গ্রিন্ডাভিকে পাঠানো হচ্ছে। গ্রিন্ডাভিকের পাশাপাশি দক্ষিণ আইসল্যান্ডের তিনটি স্থানে তথ্য ও চলাচলে সহায়তার জন্য জরুরি আশ্রয় ও সহায়তাকেন্দ্র খোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সতর্কতা হিসেবে গ্রিন্ডাভিকের কাছের ব্লু লেগুন পর্যটন স্পট ও জিওথার্মাল স্পা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কাছের রেকজেনেস উপদ্বীপের ৩০ হাজার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎ ও জলের প্রধান সরবরাহকারী জিওথার্মাল প্ল্যান্টও বন্ধ করা হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের শুরু থেকে জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত রেকজেনেস উপদ্বীপে তিনটি অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। আইসল্যান্ডে রয়েছে ৩৩টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি, যা ইউরোপে সর্বোচ্চ। আগ্নেয়গিরিবিদরা মনে করেন, আগ্নেয়গিরি বাড়ার নতুন চক্র কয়েক দশক বা শতাব্দী ধরে চলতে পারে। ২০১০ সালের এপ্রিলে আরেকটি আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরিতে ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাতের ফলে দ্বীপের দক্ষিণে আইজাফজাল্লাজোকুল এলাকায় ১০ মিলিয়নেরও মানুষ আটকা পড়ে।