ইউনূসের অদক্ষতায় রূপপুরে ব্যয় বেড়েছে ২৬ হাজার কোটি, জনগণের ঘাড়ে বিশাল বোঝা
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল, সেই প্রকল্প এখন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদক্ষতা, সিদ্ধান্তহীনতা এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গভীর সংকটে পড়েছে। ২০২৫ সালের নভেম্বরে প্রকল্পের ব্যয় আরও ২৬ হাজার ১৮১ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে, যা মোট ব্যয়কে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকায় নিয়ে গেছে—মূল অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ বেশি। এই ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে বিনিময় হারের সমন্বয়ের অজুহাত দেখানো হলেও, আসল কারণ হলো ইউনূস সরকারের প্রশাসনিক অচলাবস্থা এবং প্রকল্প পরিচালনায় চরম অভাব। শেখ হাসিনার আমলে প্রকল্পটি ২০১৬ সালে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকায় অনুমোদিত হয় এবং ২০২৪ সাল পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের বিলম্ব বা ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ইউনূসের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সবকিছু উল্টে গেছে। প্রকল্পের মেয়াদও এখন ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে, যা মানে আরও তিন বছরের বিলম্ব। প্রথম ইউনিটের উৎপাদন, যা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার কথা ছিল, এখন অনিশ্চিত। দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে। ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে প্রকল্পের খরচ আরও ২৬ হাজার ১৮১ কোটি টাকা বেড়েছে, যা সরাসরি প্রশাসনিক অদক্ষতার ফল। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং অপ্রয়োজনীয় তদন্তের নামে প্রকল্পকে হয়রানি করার ফলে এই বিলম্ব হচ্ছে। রাশিয়া নিজেই ইউনূস সরকারকে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকল্পকে রাজনৈতিক করার জন্য সমালোচনা করেছে। এতে করে ঋণের সুদ বাড়ছে, যন্ত্রপাতির আয়ুষ্কাল কমছে এবং জনবলের বেতন-ভাতায় অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রকল্পটি ছিল স্বচ্ছ এবং গতিশীল—রাশিয়ার ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার হচ্ছিল এবং ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত কোনো বড় অভিযোগ ছাড়াই কাজ চলছিল। কিন্তু ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদ, যা পুরোপুরি দুর্নীতিগ্রস্ত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় লিপ্ত, প্রকল্পকে হাসিনা-যুগের দুর্নীতির তকমা দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে। আসলে, দুর্নীতির অভিযোগগুলো হাসিনা-যুগের নয়, বরং ইউনূস সরকারের রাজনৈতিক অপপ্রচার। উদাহরণস্বরূপ, হাসিনার ভাইঝি তুলিপ সিডিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে প্রকল্পকে থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এতে করে জনগণের বিদ্যুৎ সংকট বাড়ছে। ইউনূস নিজেই চারটি বড় অভিযোগের মুখোমুখি, যা তাঁর সরকারের দুর্নীতি এবং অদক্ষতা প্রমাণ করে। এখন জনগণের অবস্থা দুর্বিষহ—বিদ্যুৎ সংকট বাড়ছে, জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি খরচ বেড়ে যাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক চাপ সাধারণ মানুষের উপর পড়ছে। শেখ হাসিনার আমলে প্রকল্পটি দেশের বিদ্যুৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথে ছিল, কিন্তু ইউনূসের চাপাবাজি এবং উপদেষ্টা পরিষদের দুর্নীতির কারণে সবকিছু ধ্বংসের মুখে। প্রকল্পের বিলম্বে ঋণ পরিশোধের ঝুঁকি বাড়ছে, যা ২০২৯ সাল থেকে শুরু হবে এবং দেরি হলে বার্ষিক ১৫০ শতাংশ সুদ দিতে হবে। ইউনূস সরকারের এই ব্যর্থতা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়, এবং এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।
