৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯: ‘পূর্ব পাকিস্তান’ নাম মুছে যেভাবে ‘বাংলাদেশ’ নাম দিলেন বঙ্গবন্ধু

৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

পূর্ব পাকিস্তান থেকে এই ভূখণ্ডের নাম কবে এবং কীভাবে ‘বাংলাদেশ’ হলো—ইতিহাসের সেই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি নিজের ভেরিফাইড সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে তুলে ধরেছেন দেশের জনপ্রিয় কলামিস্ট ও ব্র্যাকের কর্মকর্তা শরিফুল হাসান। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই ভূখণ্ডের নাম ‘বাংলাদেশ’ চূড়ান্ত করেছিলেন। শরিফুল হাসান তাঁর লেখায় বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক উক্তিটি তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “একটা সময় এই ভুখন্ড ও এই মানচিত্র থেকে বাংলা শব্দটি মুছে ফেলার অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। অবস্থা এখন এমন যে এক বঙ্গোপসাগর ছাড়া বাংলা শব্দটি আর কোথাও নেই। আমি পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে আজ ঘোষণা দিলাম এই দেশের নাম এখন থেকে বাংলাদেশ, আর পূর্ব পাকিস্তান নয়।” ইতিহাসের উদ্ধৃতি দিয়ে শরিফুল হাসান জানান, বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার পরদিন ৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ’ নামকরণের খবর গুরুত্বসহকারে ছাপা হয়। আতাউর রহমান খান ‘পাকিস্তান অবজার্ভার’-এ বঙ্গবন্ধুর এই নামকরণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন। এছাড়াও ন্যাপের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা ভাসানী ৭ ডিসেম্বর এক জনসভায় এই নামকরণের সমর্থন করে বলেন, “ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ নামকরণই হবে সঠিক এবং যথার্থ।” শরিফুল হাসান আরও লেখেন, সেই থেকে নথিপত্রে ‘পূর্ব পাকিস্তান’ লেখা থাকলেও মুখে মানুষ ‘বাংলাদেশ’ শব্দটিই ব্যবহার করতে শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার ঘোষণা, মুজিবনগর সরকারের নথিপত্র এবং ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গৃহীত স্বাধীন দেশের সংবিধানেও সাংবিধানিক নাম হিসেবে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি গৃহীত হয়। লেখার শেষাংশে শরিফুল হাসান নিজের অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের শাসনব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা স্বাভাবিক হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি উল্লেখ করেন, “লাখো মানুষের ত্যাগ আর গত ৫৪ বছরে নানা মানুষের অবদানে এই যে দেশ, যতোদিন এই পৃথিবী থাকবে, ততোদিন মাথা উঁচু করে থাকবে বাংলাদেশ।”