বিজয় দিবসের আনন্দ ম্লান করতেই কি ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’? খালেদা জিয়ার মৃত্যুর গুঞ্জন ও ১৬ই ডিসেম্বরের নেপথ্য বিশ্লেষণ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মৃত্যু সংবাদকে কেন্দ্র করে এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট বাক্য নেটদুনিয়ায় ঝড়ের সৃষ্টি করেছে— "সরকারের মেটিকুলাস ডিজাইন! ১৬ই ডিসেম্বরকে শোক দিবস বানাতেই নাকি মৃত্যুর অফিসিয়াল ঘোষণা আটকে রাখা হয়েছে।" এই দাবিটি নিছক গুজব নাকি এর পেছনে কোনো গভীর রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’ বা সূক্ষ্ম পরিকল্পনার অর্থ কী? সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, বেগম জিয়া গত ৭দিন আগেই (২৮ নভেম্বর) ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু এই খবরটি গোপন রাখা হয়েছে একটি বিশেষ দিনের অপেক্ষায়—১৬ই ডিসেম্বর। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, যদি এই দাবি সত্য হয়, তবে ‘মেটিকুলাস ডিজাইন’ বলতে মূলত জাতীয় আবেগের জায়গাটি পরিবর্তনের কৌশলকে বোঝানো হচ্ছে। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস, যা আনন্দের ও গৌরবের দিন। এই দিনে যদি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেত্রীর মৃত্যুর ‘অফিসিয়াল ঘোষণা’ আসে, তবে পুরো জাতির মনস্তত্ত্বে এক বিশাল পরিবর্তন আসবে। বিজয়ের আনন্দ মুহূর্তেই শোকে পরিণত হতে পারে। বিজয় দিবস নাকি শোক দিবস? নেটিজেনদের দাবি, সরকার বা সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ চাইছে ১৬ই ডিসেম্বরের জাতীয় উৎসবের আবহকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে। বিজয় দিবসে মৃত্যুর ঘোষণা দিলে সেটি ইতিহাসের পাতায় অন্যভাবে নথিবদ্ধ হবে। পোস্টদাতার অভিযোগ অনুযায়ী, এটি একটি পরিকল্পিত ছক, যাতে বিজয় দিবসের উদযাপনকে ‘শোক দিবস’ হিসেবে পালনের মাধ্যমে ম্লান করে দেওয়া যায়। আবেগের রাজনীতি ও ডা. জাহিদের কান্না এই বিশ্লেষণের পালে হাওয়া দিয়েছে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সাম্প্রতিক একটি আবেগঘন ভিডিও। নেটিজেনদের দাবি, চিকিৎসকের সেই ‘বুক ফাটা কান্না’ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, বরং এটি মৃত্যুরই ইঙ্গিত। লাশ নিয়ে রাজনীতি বা ‘ডেডবডি পলিটিক্স’-এর যে অভিযোগ পোস্টে আনা হয়েছে, তা জনমনে সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও এই মুহূর্তে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব বা এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেগম জিয়ার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি। বরং দলের পক্ষ থেকে বারবার গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ১৬ই ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে যে ‘ষড়যন্ত তত্ত্ব’ বা বিশ্লেষণের জন্ম হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের মনে গভীর প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। এখন সবার দৃষ্টি আগামী ১৬ই ডিসেম্বরের দিকে— সত্যিই কি কোনো ‘অফিসিয়াল ঘোষণা’ আসছে, নাকি এটি শুধুই আবেগের বশবর্তী হয়ে ছড়ানো কোনো রাজনৈতিক গুজব?
