”ভিডিও বানিয়ে ফাইভ স্টারে থাকা যায় না, ‘কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ শুধুই লোকদেখানো মুখোশ, আমি কাজ করি ‘ইসরায়েলের’ হয়ে”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপে নিজের আসল পরিচয় নিয়ে বোমা ফাটালেন বিতর্কিত ট্রাভেল ভ্লগার বনি আমিন। নিজেকে তথাকথিত ‘বিশ্ব পরিব্রাজক’ হিসেবে পরিচয় দিলেও, ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তিনি স্বীকার করেছেন যে, ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর’ পরিচয়টি তার শুধুই একটি লোকদেখানো মুখোশ। বিলাসী জীবনযাপন ও ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার নেপথ্যে রয়েছে ভিনদেশি এক শক্তিশালী রাষ্ট্র তথা ইসরায়েলের সঙ্গে তার গোপন কানেকশন। ফোনালাপের অডিও ক্লিপ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো: ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর’ শুধুই মুখোশ: বিলাসী জীবনের রহস্য সাধারণ মানুষের ধারণা ভেঙে দিয়ে বনি আমিন অডিওতে স্পষ্ট ভাষায় জানান, তিনি কোনো সাধারণ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নন। তার দাবি, ইউটিউব বা ফেসবুকে ভিডিও বানিয়ে তার মতো রাজকীয় জীবনযাপন করা অসম্ভব। অত্যন্ত দম্ভের সঙ্গে তিনি বলেন, “সবাই এই চুদনা জাতি আমারে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে চিনে… ভিডিও মেকিং করলে কি ফাইভ স্টারে থাকে নাকি? কিন্তু আমি এভরি টাইম বিদেশে গেলে ফাইভ স্টারে থাকি।” তার এই বক্তব্য প্রমাণ করে, ভ্লগিং বা কন্টেন্ট ক্রিয়েশন তার আয়ের মূল উৎস নয়, বরং এটি তার গোপন কর্মকাণ্ড আড়াল করার একটি মুখোশ মাত্র। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজের দাবি কথপোকথনের একপর্যায়ে বনি আমিন নিজের আসল ক্ষমতার উৎস সম্পর্কে ইঙ্গিত দেন। তিনি সরাসরি দাবি করেন, বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি হিসেবে তিনি ইসরায়েলের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় বা সিকিউরিটি সিস্টেমের ভেতর ঢুকে সবকিছু দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, “পৃথিবীতে একমাত্র ব্যক্তি যে ইসরায়েলকে একেবারে খোলামেলা দেখিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলের সিকিউরিটি সিস্টেমের ভিতরে ঢুকায় দেখায় দিছে… সেই লোকের কী কানেকশন থাকলে সে এটা করতে পারে?” তিনি দম্ভ করে বলেন, তিনি এমন একটি দেশের (ইসরায়েল) হয়ে কাজ করেন, যা একমাত্র বুদ্ধিমানরাই বুঝতে পারবে। নিজ জাতিকে ‘চুদনা’ বলে গালি ও অশ্লীলতা নিজের দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ে চরম অবজ্ঞা ও অশ্লীল মন্তব্য করতে শোনা যায় তাকে। বনি আমিন বলেন, “বাঙালি একটা চুদনা জাতি… ভেরি ইনসিকিউর।” তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তাকে কেবলই একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মনে করে, যা তার জন্য অপমানজনক। নিজের দেশের মানুষকে তিনি একাধিকবার ‘বাইনচোদ’ ও ‘চুদনা’ বলে গালি দেন। সেনাবাহিনী ও ডিজিএফআই প্রটোকলের অপব্যবহারের দাবি সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হলো, বনি আমিন দাবি করেন যে তিনি যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনাবাহিনী তাকে বিশেষ নিরাপত্তা দেয়। তার ভাষ্যমতে, “একমাত্র বাংলাদেশের আর্মিরা জানে যে ইয়েস উনি কোন দেশের জন্য কাজ করে। যার জন্য আমি যতবারই দেশে যাই… চারিদিকে আমার ডিজিএফআই, সিকিউরিটি ওরা আমারে দিয়ে রাখে… বিকজ আই ওয়ার্ক ফর এ ডিফারেন্ট কান্ট্রি।” ভিনদেশি এজেন্টের জন্য দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রটোকল ব্যবহারের এই দাবি জনমনে তীব্র প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। আরজে কিবরিয়া ও মিডিয়া কানেকশন তিনি আরও দাবি করেন, জনপ্রিয় উপস্থাপক আরজে কিবরিয়াও তার আসল পরিচয় জানেন। এ কারণেই এক সাক্ষাৎকারে কিবরিয়া তাকে অন-এয়ারে বলেছিলেন, “আপনি যাদের জন্য কাজ করেন সেই বিষয়ে আমরা আপনাকে প্রশ্ন করব না।” জনরোষ ও শাস্তির দাবি মুসলিম পরিচয় ও হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করাসহ নিজ দেশের মানুষকে অশ্লীল গালি দেওয়ায় নেটিজেনরা বনি আমিনের ওপর ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর’-এর মুখোশ পরে ইসরায়েলি এজেন্ডা বাস্তবায়নের স্বীকারোক্তি দেওয়ায় তাকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের স্বার্থে তার দাবিকৃত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
