বিটিআরসির সাবেক তিন চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বেআইনিভাবে আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট পরিবর্তন করে আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সুবিধা দিয়ে সরকারের ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক ও বিটিআরসির সাবেক তিন চেয়ারম্যানসহ ৬ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। মঙ্গলবার দুদক পরিচালক জালাল উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মামলার আসামিরা হলেন- বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান ও দুদকের সাবেক কমিশনার মো. জহুরুল হক, সাবেক বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, ড. শাহজাহান মাহমুদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান। এজাহারে বলা হয়, এক বছরের জন্য অস্থায়ী এবং পরীক্ষামূলকভাবে নির্ধারিত প্রতি কল মিনিট টার্মিনেশন রেট শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মার্কিন ডলারের স্থলে শূন্য দশমিক শূন্য ১৫ মার্কিন ডলার, সরকার বা বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিং ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশের স্থলে ৪০ শতাংশ, আইজিডব্লিউ অপারেটরের রেভিনিউ শেয়ারিং ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশের স্থলে ২০ শতাংশ; বর্ণিত পরীক্ষামূলক ১ বছর পরবর্তী ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ২৮ মাস বেআইনিভাবে বহাল রাখা হয়। রেভিনিউ শেয়ারিংয়ে কম-বেশি করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয় ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা, কম রেটে কল আনায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয় ২৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বা দেশে আনয়নের জন্য সরকার কর্তৃক নিয়ম মোতাবেক যে কলহার নির্ধারিত ছিল, তা বিদেশ হতে দেশে আনয়ন না করায় রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৭২ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা। তাতে দেখা যায়, বিটিআরসি কর্তৃপক্ষের বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্নভাবে রাষ্ট্র সর্বমোট ৯ হাজান ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪১৮ ধারা, ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে বাল জানিয়েছে দুদক।
