আগামী সপ্তাহ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত ফেরত
আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। আগামী সপ্তাহ থেকে একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত ফেরত দেওয়ার কাজ শুরু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করেন। পরে সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি মালিকানায় একটি ইসলামী ব্যাংক চালু হওয়া জাতির জন্য সুসংবাদ। ব্যাংকটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে টেকনিক্যাল টিম কাজ করছে। মূল লক্ষ্য হবে আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক জাতির আস্থার প্রতীক হয়ে উঠবে। রাজধানীর মতিঝিলের সেনা কল্যাণ ভবনে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির জন্য প্রস্তুত করা প্রধান কার্যালয় গতকাল পরিদর্শন করেছেন মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। জানা গেছে, শিগগিরই ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভা হবে। এর মধ্য দিয়ে ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবে। গত রোববার গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে বিশেষ পর্ষদ সভায় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। সোমবার ব্যাংকটিকে তপশিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসেও নিবন্ধিত হয়েছে। সমস্যাগ্রস্ত পাঁচ ইসলামী ব্যাংক সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক নামে একীভূত হয়ে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। ব্যাংক পাঁচটি হচ্ছে এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক। জানা গেছে, একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের বিষয়ে একটি স্কিম ঘোষণা করা হবে। এতে আমানতকারীরা কীভাবে টাকা তুলতে পারবেন তা উল্লেখ করা হবে। শুরুতে আমানত বীমা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করা হবে। বাকি টাকা ধাপে ধাপে তুলতে পারবেন আমানতকারীরা। কোন উপায়ে টাকা তোলা যাবে, কী হারে মুনাফা দেওয়া হবে তার বিস্তারিত এই স্কিমে থাকবে। সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে গত সোমবার ব্যাংকটির অনুকূলে ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট থেকে মূলধন হিসেবে দেওয়া হয়েছে। পরিশোধিত মূলধনের বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আসছে আমানতকারীদের শেয়ার থেকে। ব্যাংকটির অনুমোদিত মূলধন ৪০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন সরকারি তহবিল এই ব্যাংকে রাখা হবে। একই সঙ্গে আকর্ষণীয় মুনাফা দিয়ে সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ রাখায় উদ্বুদ্ধ করা হবে। এ ছাড়া ঋণ আদায়সহ বিভিন্নভাবে তারল্য প্রবাহ বাড়ানো হবে। অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট ইকুইটি তথা মূলধন খাতে ২৪ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা ছিল। সেখান থেকেই ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকটি ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার পর লাভজনক অবস্থায় ফিরলে মুনাফার অর্থ সরকার পাবে। সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে, ব্যাংকটি স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রমে সক্ষম হলে তিন বছর পর ২০ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
