বিয়ের প্রলোভনে ব্র্যাক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ: এবি পার্টি নেতা ব্যারিস্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশে জনমনে তীব্র ক্ষোভ
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সংশ্লিষ্ট থানাকে এই অভিযোগটি মামলা (এফআইআর) হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। একজন আইনজীবী ও রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠায় সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্যারিস্টার ফুয়াদ নিজের বিবাহিত পরিচয় গোপন করে এবং নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে বিয়ের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে আসছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার জবানবন্দিতে বলেন, "ব্যারিস্টার ফুয়াদ আমাকে জানিয়েছিল তার কোনো স্ত্রী নেই। এই মিথ্যা বলে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সে দিনের পর দিন আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। কিন্তু এখন আমি জানতে পেরেছি তার স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। সে একজন প্রতারক ও মিথ্যাবাদী। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।" একজন আইনজীবী এবং রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন নৈতিক স্খলনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনমনে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, "যিনি আইন পেশায় আছেন এবং একটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে এমন জঘন্য অভিযোগ উঠলে সাধারণ নারীরা কার কাছে নিরাপদ বোধ করবে? আমরা চাই পদের প্রভাব খাটিয়ে যেন তদন্ত ভিন্ন খাতে না নেয়া হয়।" সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে রায়হান উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, "বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ একটি গুরুতর অপরাধ। অভিযুক্ত ব্যক্তি যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। আমরা এই ঘটনার দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চাই।" আদালত পাড়ায় উপস্থিত এক বিচারপ্রার্থী মন্তব্য করেন, "আইনজীবীরা হলেন সমাজের বিবেক। তারাই যদি ভক্ষক হয়ে ওঠেন, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? ফুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন প্রতারণা করার সাহস না পায়।" অন্যদিকে, সচেতন নাগরিক সমাজের মতে, রাজনৈতিক পরিচয় বা পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে অভিযুক্ত যেন পার পেয়ে না যান, সেদিকে প্রশাসনের কড়া নজর রাখা উচিত। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
