জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের গোপন সফর ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র জল্পনা
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গতকাল গভীর রাতে হঠাৎ করে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই এই সফর সম্পন্ন হওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল ও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, এতো গুরুত্বপূর্ণ একজন রাজনৈতিক নেতার বিদেশযাত্রা নিয়ে দলীয় ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে কোনো তথ্যই প্রকাশ করা হয়নি। বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র জানায়, সফরটি পরিকল্পিত হলেও তা সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরে দলীয় কোনো শীর্ষ নেতার উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়নি। এমনকি সফরটি ব্যক্তিগত না সাংগঠনিক, সে বিষয়েও দলীয় দপ্তর এখন পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দেশের বর্তমান টানাপোড়েনপূর্ণ রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের একজন শীর্ষ নেতা যদি নীরবে বিদেশে পাড়ি জমান, তাহলে বিষয়টি নিছক ব্যক্তিগত সফর বলে উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। তাঁদের ধারণা, লন্ডনে অবস্থানরত শীর্ষ দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণ অথবা আন্তর্জাতিক যোগাযোগ জোরদারের লক্ষ্য এই সফরের পেছনে থাকতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের একজন কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিকদের বলেন, “সফরটি হঠাৎ নেওয়া হয়েছে বিষয়টি ঠিক নয়, তবে কেন আগেভাগে জানানো হয়নি, সেটি দলীয়ভাবেই বোঝানো হবে।” তবে তিনি সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি। এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সরকারের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক সমীকরণ, আন্তর্জাতিক চাপ, এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচনী কৌশলের সঙ্গে এই সফরের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তাঁদের মতে, এ ধরনের নীরব বিদেশযাত্রা অনেক সময় পর্দার আড়ালের গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা বা যোগাযোগের ইঙ্গিতও দিতে পারে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিয়া গোলাম পরওয়ারের লন্ডনে পৌঁছানোর পরবর্তী কর্মসূচি, কার সঙ্গে বৈঠক হবে কিংবা তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। দলীয় দপ্তরের নীরবতাও রহস্য আরও ঘনীভূত করেছে। সব মিলিয়ে, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলের এই হঠাৎ ও গোপন লন্ডন সফর শুধু একটি ব্যক্তিগত ভ্রমণ নাকি বড় কোনো রাজনৈতিক বার্তা বহন করছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন জোর আলোচনা চলছে।
