১৪,০০০ বর্গকিমি জুড়ে ‘নো-ফ্লাই জোন’! ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে! ‘অপারেশন সিন্দূর ২.০’ শুরু করতে প্রস্তুত ভারত

১ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ৮:০৭ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বলয়ে এক অস্বাভাবিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সিলিগুড়ির 'চিকেন নেক' থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের গভীর জলরাশি পর্যন্ত—সর্বত্রই যেন এক বড়সড় প্রস্তুতির আবহ। আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাগুলিকে বিচ্ছিন্ন মনে হলেও, সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত সরকার বহুমুখী হুমকির মোকাবিলায় এক সুসংহত এবং আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা ব্যূহ রচনা করেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করা যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যে। তিনি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, "অপারেশন সিন্দূর ২.০" যেকোনো সময় বাস্তবায়িত হতে পারে। সিন্ধু সর্বদা ভারতের অংশ থাকবে—এই বার্তার পাশাপাশি দেশবাসীকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এটি নিছক রাজনৈতিক বুলি নয়, বরং সীমান্তে ঘনীভূত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এটি একটি স্ট্র্যাটেজিক সংকেত। উত্তর-পূর্ব ভারতের লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত সিলিগুড়ি করিডোর বা 'চিকেন নেক'-এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নজিরবিহীনভাবে জোরদার করা হয়েছে। মাল্টি-এজেন্সি বৈঠকের পর সেনা, বিএসএফ, আইটিবিপি এবং রাজ্য পুলিশ যৌথভাবে এলাকাটিকে কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে। গোয়েন্দাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই এই এলাকাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। সবচেয়ে বড় চমক দেখা গেছে বঙ্গোপসাগরে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে বিশাখাপত্তনম পর্যন্ত প্রায় ১৪,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে জারি করা হয়েছে বিশাল 'নো-ফ্লাই জোন' বা NOTAM। এত বড় এলাকা সাধারণত কৌশলগত বা স্ট্র্যাটেজিক মিসাইল পরীক্ষার জন্যই বন্ধ রাখা হয়। প্রতিরক্ষা সূত্র বলছে, ভারত সম্ভবত কে-৪ (K-4) বা কে-৫ (K-5) সাবমেরিন-লঞ্চড ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালাতে পারে। এটি সফল হলে পাকিস্তান তো বটেই, চীনের অধিকাংশ ভূখণ্ডও ভারতের আঘাত হানার ক্ষমতার আওতায় চলে আসবে। পশ্চিম ও পূর্ব—উভয় সীমান্তেই পরিস্থিতি জটিল। বিএসএফ সূত্রে খবর, পাকিস্তান তাদের ৬০-৭২টি জঙ্গি লঞ্চপ্যাড সীমান্ত থেকে সরিয়ে দেশের অভ্যন্তরে নিয়ে গেছে এবং ড্রোনের মাধ্যমে হামলার নতুন ছক কষছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং লালমনিরহাট এয়ারবেসে চীনা SY-400 মিসাইল মোতায়েনের খবর ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত মহাসাগরে চীনা গবেষণা জাহাজের সন্দেহজনক গতিবিধি, যা আদতে সামরিক গোয়েন্দাগিরির অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে। স্থল, জল এবং আকাশ—তিনটি ডোমেইন বা ক্ষেত্রেই ভারত তার সামরিক প্রস্তুতিকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতি এটাই প্রমাণ করে যে, ভারত এখন আর নিছক রক্ষণাত্মক অবস্থানে নেই। অতীতে সময়ক্ষেপণ করলেও, এবার যেকোনো প্ররোচনার তাৎক্ষণিক ও কড়া জবাব দিতে ভারত যে প্রস্তুত, এই সমন্বিত সামরিক পদক্ষেপ তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত।