শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস, নিহত ৪৪
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে চলতি সপ্তাহে শ্রীলঙ্কায় অন্তত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১০ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২১ জন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) এই তথ্য জানিয়েছে। ডিএমসির তথ্যমতে, নিহতদের অধিকাংশই মধ্যাঞ্চলের চা-বাগান অধ্যুষিত জেলা বদুল্লার বাসিন্দা। এই এলাকায় গভীর রাতে পাহাড়ি ঢাল ধসে ঘরবাড়ির ওপর পড়ে। এতে একঘরে অন্তত ২১ জন মাটি চাপা পড়ে প্রাণ হারান। একই ধরনের ভূমিধসে নুয়ারা এলিয়া জেলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন। বাকি মৃত্যুগুলো দেশের অন্যান্য বন্যাকবলিত এলাকায় ঘটেছে। শতাধিক বাড়িঘর ধ্বংস, আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৮০০ পরিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, বন্যা ও কাদাধসে ৪২৫টির বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবারকে বিভিন্ন অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ উঁচু স্থানে সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় বর্তমানে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর মৌসুম চলছে। এর পাশাপাশি দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত একটি নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাত আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আরও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আবহাওয়া বিভাগ জানায়, শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন এলাকায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় বৃহস্পতিবার ২৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। চলতি সপ্তাহে আবহাওয়া-সংক্রান্ত প্রাণহানির সংখ্যা গত বছরের জুনের পর সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে ডিএমসি। গত বছর জুনে ভারী বৃষ্টিতে দেশটিতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ডিসেম্বরে বন্যা ও ভূমিধসে ১৭ জন প্রাণ হারান। অতীতের ভয়াবহ বন্যার স্মৃতি চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা শ্রীলঙ্কায় হয়েছিল ২০০৩ সালের জুন মাসে। সেই দুর্যোগে দেশজুড়ে ২৫৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। শ্রীলঙ্কায় সেচকাজ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় একটি অংশ মৌসুমি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভবিষ্যতে দেশটিতে আরও ঘন ঘন বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।
