ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ৩.৬ মাত্রার ভূমিকম্প
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে এই কম্পন অনুভূত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আন্তর্জাতিক ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে প্রায় ৩১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ শাখার তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬। এটি স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প হওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল না। উৎপত্তিস্থল হিসেবে নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৩ ঘণ্টায় দেশে তিনবার ভূমিকম্প সংস্থার তথ্যে জানা যায়, গতকাল মধ্যরাত থেকে আজ বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে মোট তিনবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সবগুলোই ছিল হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার। প্রথম ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় গতকাল মধ্যরাতে রাত ৩টা ২৯ মিনিটে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল টেকনাফ থেকে প্রায় ১১৮ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে। ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪। এতে কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। এর পরপরই রাত ৩টা ৩০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে সিলেট অঞ্চলে আরেকটি মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৪। কম্পন দুর্বল হওয়ায় অনেক মানুষ তা টের পাননি। সর্বশেষ ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে। এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬, যা ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস নিয়ে আতঙ্ক ও বাস্তবতা সাম্প্রতিক সময়ের একাধিক ভূমিকম্পের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভূমিকম্প নিয়ে নানা ধরনের গুজবও সক্রিয় রয়েছে। এর আগেও ২০২৩ সালে ঠিক একই ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে। বিশেষজ্ঞরা বারবার জানিয়েছেন, বর্তমান বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে ভূমিকম্প কখন, কোথায় এবং কত মাত্রায় সংঘটিত হবে—এ বিষয়ে নির্ভুল পূর্বাভাস দেওয়া এখনো সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর ইতিহাসে এখন পর্যন্ত কেউই নির্দিষ্ট সময় ধরে ভূমিকম্পের সঠিক পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হননি। বিভিন্ন দেশের ভূকম্পন গবেষকরা বলেছেন, ভূমিকম্প সংঘটনের সম্ভাব্য অঞ্চল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেলেও নির্দিষ্ট সময় ও মাত্রা সম্পর্কে নিশ্চিত পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনো কার্যকর পদ্ধতি এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। এ কারণে গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি সরকারি ও বৈজ্ঞানিক তথ্যের ওপর নির্ভর করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
