ধর্ষক আলী রিয়াজের পাশে প্রধান উপদেষ্টা: এক নজরে,

২৭ নভেম্বর, ২০২৫ | ২:১২ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

গুরুতর অভিযোগ: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রিয়াজের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের অভিযোগ। উল্টো পথে আইন: অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে উল্টো ভুক্তভোগী নারী অতন্দ্রা নূরীকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ। সরকারের প্রকাশ্য অবস্থান: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দপ্তরের ভেরিফায়েড পেজ থেকে আলী রিয়াজের পক্ষে সাফাই এবং বাদীর বক্তব্যকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে আইনি ব্যবস্থার হুমকি। জনমনে প্রশ্ন: একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রধান উপদেষ্টার এমন নজিরবিহীন পক্ষাবলম্বন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আলী রিয়াজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভপাতের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠার পর, তার পাশে দাঁড়িয়েছে খোদ সরকার। অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের পরিবর্তে ভুক্তভোগী নারীকে গ্রেফতার এবং প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাল্টা হুমকির ঘটনায় জনমনে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড়। অভিযোগ ও ভুক্তভোগীর আর্তি অভিযোগকারী নারী অতন্দ্রা নূরী (রিপা) সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় জানান, ২০২৩ সালে অধ্যাপক আলী রিয়াজের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এবং নিজের ভ্যাসেকটমি করা আছে—এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আলী রিয়াজ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরবর্তীতে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে রাজনৈতিক ভয়ভীতি দেখিয়ে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে তাকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হয়। কান্নাজড়িত কণ্ঠে গ্রেফতারের আগে ওই নারী বলেছিলেন, "পুলিশ আমাকে গুম করার হুমকি দিচ্ছে। ধর্ষক ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকায় আমি বিচার তো পেলামই না, উল্টো আমাকেই অপরাধী বানানো হচ্ছে।" বর্তমানে সেই আশঙ্কাই সত্য হয়েছে; ভুক্তভোগী কারাগারে, আর অভিযুক্ত বহাল তবিয়তে। সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটে যখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তরের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ (Chief Adviser GOB) থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে আলী রিয়াজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকে ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করা হয়। সেখানে বলা হয়, অধ্যাপক আলী রিয়াজ ওই নারীকে চেনেন না। শুধু অভিযোগ অস্বীকারই নয়, সরকারের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, এ ধরনের ‘মানহানিকর’ বক্তব্য প্রচার বন্ধ না করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটি স্পর্শকাতর ফৌজদারি অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের আগেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অভিযুক্তের পক্ষ নিয়ে এমন বিবৃতি প্রদানকে নজিরবিহীন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলছেন, "আইন কি তবে কেবল দুর্বলের জন্য? ধর্ষক যখন সরকারের বিশেষ সহকারী হন, তখন কি প্রধান উপদেষ্টাও তার অপকর্মের দায় নেন?" সচেতন মহল মনে করছে, আলী রিয়াজের মতো একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই তড়িঘড়ি করে বাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এই প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সরাসরি হস্তক্ষেপ ও অভিযুক্তের পক্ষে অবস্থান নেওয়াকে ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতির’ নতুন নজির হিসেবে দেখা হচ্ছে।