দিল্লিতে ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের ৫ দিন পরই দোহা সফরে বাংলাদেশের এনএসএ: মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা

২৬ নভেম্বর, ২০২৫ | ৫:০১ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে নয়াদিল্লিতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ঠিক পাঁচ দিন পর, কাতারের রাজধানী দোহা সফরে গেলেন বাংলাদেশের এনএসএ খলিলুর রহমান। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) তিনি দোহার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। 'নর্থইস্ট নিউজ'-এর হাতে আসা সরকারি নথিপত্র অনুযায়ী, এটি একটি তিন দিনের (২৫ থেকে ২৮ নভেম্বর) ‘সরকারি’ সফর। দোহায় তিনি কার সঙ্গে বৈঠক করবেন তা নথিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও, বাংলাদেশি নিরাপত্তা সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে, সেখানে তিনি মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। গত আগস্টে বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে দোহা মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, যারা বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। দিল্লি বৈঠকের প্রেক্ষাপট ও জঙ্গি দমন গত ১৯ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে অজিত ডোভালের সঙ্গে খলিলুর রহমানের বৈঠকটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রমতে, ওই বৈঠকে উত্তর বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে বসা ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হুমকির বিষয়ে আলোচনা হয়। ভারতীয় পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে অন্তত ১২টি জঙ্গি শিবিরের উপস্থিতির প্রমাণও হস্তান্তর করা হয়। ভারতের এই সতর্কবার্তার দৃশ্যমান প্রভাবও লক্ষ্য করা গেছে। গত ২৪ নভেম্বর ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী কুমিল্লা জেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি জঙ্গি আস্তানা লক্ষ্য করে অভিযান চালায়। তবে চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চল এবং রংপুর বিভাগে অবস্থিত অন্যান্য শিবিরগুলো ধ্বংস করার বিষয়ে এখনো বড় কোনো পদক্ষেপের খবর পাওয়া যায়নি। বারবার দোহা সফর ও মার্কিন সংযোগ ২০২৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের এনএসএ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর খলিলুর রহমানের এটি চতুর্থ দোহা সফর। এর আগে মে, জুলাই এবং আগস্ট মাসে তিনি দোহা সফর করেছিলেন। মে ২৬: ‘অফিসিয়াল ভিজিট’ হিসেবে কাতার যান এবং সেখানে মার্কিন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই সফরের কিছুদিন আগেই ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন দোহা সফর করেছিলেন। জুলাই ২৬: পুনরায় দোহা যান এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। ৩ আগস্ট পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন। আগস্ট ২৮: রোহিঙ্গা ও রাখাইন সংকট নিরসনের কৌশল নির্ধারণে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের অজুহাতে তিনি দোহা যান। সেখান থেকে ফেরার পরপরই তিনি বেইজিং সফরে গিয়েছিলেন। দিল্লিতে ভারতের এনএসএ-এর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই খলিলুর রহমানের এই আকস্মিক দোহা সফর এবং সেখানে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে নতুন করে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।