আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর শিবিরের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বহিরাগত ক্যাডার হলে আনার অভিযোগ
রাজধানীর বকশিবাজারে আলিয়া মাদ্রাসায় বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধার পরে বহিরাগত ক্যাডার এনে গুপ্ত সংগঠন শিবিরের বিরুদ্ধে অস্ত্রশস্ত্র মজুদের অভিযোগ উঠেছে। এর আগে গত ২২শে নভেম্বর, শনিবার রাত ১০টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপরে শিবির হামলা করার পরে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর রোববার আবারও বহিরাগত শিবিরের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মীদের এনে অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলছাড়ার জন্যে বলপ্রয়োগ শুরু করেছে। জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী এহসান অভিযোগ করেছেন শিবিরের সশস্ত্র কর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করে। ‘জুলাই বিপ্লবী ওমর ফারুক ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতা তাশফিকুল ইসলাম, আলীয়া শাখার সদস্য সচিব জিনাত হোসাইনসহ অন্যান্য আহতদের উদ্ধার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ হাসপাতালে নেয়,’ বলে জানিয়েছেন খোমেনী এহসান। খোমেনী এহসান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, শিক্ষার্থীদের উপরে হামলায় ছাত্রশিবিরের চকবাজার থানার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা আলিয়ার সভাপতি আব্দুল আলিম, সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম জয়নাল, অর্থ সম্পাদক হাসিবুর রহমান, মির্জা ইসমাঈল, নূর মোহাম্মদ, আব্দুল্লাহ, আরাফাত বিন ইলিয়াস, মোসাদ্দেক ভূইয়া, সাজিদ আব্দুল্লাহ, আব্দুল্লাহ আল মাহির, তানিম, তুহিন ও আফফান, ঢাকা আলিয়া ছাত্রদলের মাখদুম, সাকিব, মোহাম্মদ সিরাজসহ বিপুলসংখ্যক বহিরাগত সন্ত্রাসী জড়িত ছিল। এদিকে এক বিবৃতিতে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ দাবি করেছে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন, ঢাকা আলিয়া সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, কালের কণ্ঠের সাংবাদিক জাবের ও বিটিভির সাংবাদিক মিরাজ। ছাত্রদের মধ্যে আহত হন- ওমর ফারুক, তানভীর আহমেদ, রাকিব হোসেন, মোহাম্মদ জোবায়ের ও ফাহিম কামরুল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রবিউল ইসলাম রিমন, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাশফিকুল ইসলাম, মাদ্রাসা-ই-আলিয়া শাখার আহ্বায়ক মো. রাকিব মন্ডল, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নূর আহমদ, সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন, সহকারী সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহমান, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল সোহাগ, সদস্য রেদওয়ার মাহি প্রমুখ। জানা গেছে, মাদ্রাসার ভেতরে একটি মিলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠান ছিল। সেই মাহফিলে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে থাকা কালের কণ্ঠের সাংবাদিক রাইয়ানকে লাঞ্চিত করেছেমন একদল শিক্ষার্থী। তার মুঠোফোন ও লাইভ ডিভাইস কেড়ে নেন শিক্ষার্থীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকেও মাদ্রাসার হলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন। তাদের উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ। চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল খায়ের বলেন, ‘মিলাদ মাহফিল চলাকালে কোনও এক বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।’ তিনি বলেন, মাদ্রাসায় সম্মিলিত জোটের ব্যানারে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি গ্রুপকে বলেনি তারা। ব্যানারে সম্মিলিত জোট উল্লেখ থাকলেও তাদের কেন জানানো হয়নি এ নিয়ে মাহফিল চলা অবস্থায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। ওসি (তদন্ত) আরও বলেন, শুরুতে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলেও পরে এটি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় রূপ নেয়। এ ঘটনায় সাত জন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোটা ছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।
