জমিতে এখন ফসল নয়, ফলছে গ্রেনেড : ইউনুসের অবৈধ শাসনে বাংলাদেশ যেভাবে জঙ্গিদের স্বর্গভূমি হয়ে উঠছে . . .
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে কৃষক আব্দুল আজিজ তার জমিতে সেচের ড্রেন কাটতে গিয়ে কোদালে হ্যান্ড গ্রেনেড তুলে এনেছেন। এই খবরটা পড়ে আপনার কি মনে হচ্ছে এটা স্বাভাবিক? একজন কৃষক তার নিজের জমিতে কাজ করতে গিয়ে বিস্ফোরক পাবে, এটা কি কোনো সভ্য দেশের লক্ষণ? না, এটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের লক্ষণ। আর এই ব্যর্থতার জন্য দায়ী কে? সেই মুহাম্মদ ইউনুস এবং তার অবৈধ সরকার, যারা জুলাই মাসে রক্তাক্ত দাঙ্গার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে বিদেশি টাকা, জঙ্গি সংগঠনের সাহায্য আর সামরিক বাহিনীর একাংশের মদদে। দেখুন, শেখ হাসিনার সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ দমনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছিল। হলি আর্টিজান হামলার পর যেভাবে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছিল, তাতে দেশের প্রতিটি কোণ থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করা হয়েছিল। জেএমবি, হুজি, আনসারুল্লাহ - এই সংগঠনগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইউনুস ক্ষমতায় আসার পর কী দেখছি আমরা? মাত্র চার মাসে দেশে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা বেড়েছে তিনগুণ। এটা কাকতালীয় নয়, এটা সুপরিকল্পিত। জুলাই মাসের সেই তথাকথিত "গণঅভ্যুত্থান" আসলে কী ছিল? একটা সুপরিকল্পিত ক্যু। কারা এর পেছনে ছিল? প্রথমত, বিদেশি শক্তি যারা বাংলাদেশে তাদের পছন্দের সরকার বসাতে চেয়েছিল। দ্বিতীয়ত, ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলো যারা শেখ হাসিনার আমলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল এবং প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। তৃতীয়ত, সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে চেয়েছিল। আর এই তিন শক্তির মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষমতায় বসানো হয়েছে ইউনুসকে, যার কোনো নির্বাচনী বৈধতা নেই, কোনো গণসমর্থন নেই। এখন প্রশ্ন হলো, ইউনুস সরকারের আমলে কেন এত অস্ত্র, গ্রেনেড, বিস্ফোরক পাওয়া যাচ্ছে? উত্তরটা খুবই সরল - কারণ যারা এগুলো মজুদ করছে, তারা এই সরকারের মিত্র। জুলাই মাসে যে জঙ্গিরা রাস্তায় নেমে তাণ্ডব চালিয়েছিল, পুলিশ হত্যা করেছিল, সরকারি ভবনে আগুন দিয়েছিল, তাদের অনেককেই এখন বীর হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে খুন, অগ্নিসংযোগের মামলা ছিল, তাদের মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এটা কী বার্তা দিচ্ছে? এটা বার্তা দিচ্ছে যে জঙ্গিবাদ এখন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। লালমনিরহাটের এই গ্রেনেড উদ্ধারের ঘটনাটা একা নয়। গত তিন মাসে সারাদেশে কতগুলো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে জানেন? শুধু ঢাকায়ই পঁচিশটার বেশি ঘটনা ঘটেছে যেখানে গ্রেনেড, পিস্তল, রাইফেল পাওয়া গেছে। চট্টগ্রামে একসাথে পঞ্চাশটা গ্রেনেড উদ্ধার হয়েছে। সিলেটে মিলেছে এলএমজি। রাজশাহীতে পাওয়া গেছে দেশি তৈরি বোমার কারখানা। এগুলো কি বিচ্ছিন্ন ঘটনা? না, এগুলো একটা বড় পরিকল্পনার অংশ। জঙ্গিরা নিজেদের শক্তিশালী করছে পরবর্তী ধাপের জন্য। ইউনুস সরকার এই অস্ত্র মজুদকরণ ঠেকাতে কী করছে? কিছুই না। কারণ তারা জানে এই অস্ত্রগুলো কাদের হাতে আছে এবং কেন আছে। এই অস্ত্রগুলো তাদের রাজনৈতিক মিত্রদের হাতে, যারা জুলাইয়ে তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। ইউনুস জানে যদি সে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে তার নিজের ক্ষমতাই বিপন্ন হবে। তাই সে চোখ বন্ধ করে বসে আছে, আর দেশ পরিণত হচ্ছে একটা বিশাল অস্ত্রভাণ্ডারে। এখন আরও মজার বিষয় হলো, ইউনুস নিজে কে? একজন মহাজন, যিনি গরিব মানুষদের সুদে টাকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন। যার গ্রামীণ ব্যাংক নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। যাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলোর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। এই মানুষটা কখনও নির্বাচন করেনি, কখনও জনগণের কাছে জবাবদিহি করেনি। তাকে বসানো হয়েছে একটা সামরিক ক্যু-র মাধ্যমে, আর সে এখন চালাচ্ছে একটা অবৈধ সরকার। আর সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, এই সরকারের পেছনে আছে বিদেশি শক্তির প্রত্যক্ষ মদদ। পশ্চিমা আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো প্রকাশ্যেই ইউনুস সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে। কেন? কারণ তারা চায় বাংলাদেশে একটা দুর্বল, নির্ভরশীল সরকার থাকুক যাকে তারা ইচ্ছেমতো ব্যবহার করতে পারবে। শেখ হাসিনার সরকার তাদের সব কথা শুনতো না, নিজস্ব বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করতো। কিন্তু ইউনুস? সে তো তাদেরই লোক। তাই তারা এই অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার সব করছে। এখন আসি জঙ্গিবাদের প্রশ্নে। যারা জুলাই মাসে রাস্তায় নেমেছিল, তাদের অনেকেই ছিল হেফাজতে ইসলাম, জামায়াত-শিবির, জেএমবি-র সদস্য এবং সমর্থক। এদের অনেকেই প্রকাশ্যে বলেছিল তারা ইসলামী শাসন চায়। কিন্তু ইউনুস সরকার কী করছে? এদের পুরস্কৃত করছে। মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিচ্ছে, বিভিন্ন পদে বসাচ্ছে। আর এদের হাতেই এখন পুরো প্রশাসন চলে গেছে। ফলাফল? দেশে জঙ্গিবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে, আর কেউ কিছু বলছে না। লালমনিরহাটের আব্দুল আজিজ যখন তার জমিতে কোদাল চালাচ্ছিলেন, তখন কি তিনি ভেবেছিলেন গ্রেনেড পাবেন? না। কিন্তু এটাই এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। একজন কৃষক তার নিজের জমিতে নিরাপদ নয়। কারণ ইউনুস সরকার জঙ্গিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদের শক্তিশালী হতে সাহায্য করছে। আর এর খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এই সরকার বৈধ নয়, এই সরকারের কোনো নৈতিক অধিকার নেই বাংলাদেশ শাসন করার। তারা ক্ষমতায় এসেছে রক্তপাতের মধ্য দিয়ে, আর তারা টিকে আছে জঙ্গিদের সাহায্যে এবং বিদেশি প্রভুদের মদদে। বাংলাদেশের মানুষ এই সরকারকে ভোট দেয়নি, এই সরকার জনগণের প্রতিনিধি নয়। তারা হলো দখলদার, যারা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আর সবচেয়ে লজ্জার বিষয় হলো, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই অবৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। তারা দেখছে বাংলাদেশে কী হচ্ছে, কিন্তু তারা নীরব। কারণ এটা তাদের পরিকল্পনা। তারা চায় বাংলাদেশ দুর্বল হোক, অস্থিতিশীল হোক, যাতে তারা এই অঞ্চলে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। ইউনুস হলো তাদের পুতুল, আর বাংলাদেশ হলো তাদের খেলার মাঠ। বাংলাদেশ আজ এক ভয়ংকর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ইউনুস সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে, জঙ্গিবাদ তত শক্তিশালী হবে। আজ লালমনিরহাটের একটা জমিতে গ্রেনেড পাওয়া গেছে, কাল হয়তো প্রতিটা গ্রামে, প্রতিটা মাঠে এমন বিস্ফোরক পাওয়া যাবে। এটাই ইউনুস সরকারের উপহার বাংলাদেশের মানুষের জন্য।
