কক্সবাজারে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ আতঙ্ক: পাকিস্তানি দুই যুবকের অভিনব প্রতারণায় সর্বস্ব লুট

২৩ নভেম্বর, ২০২৫ | ৫:০০ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

পর্যটন নগরী কক্সবাজারে অপরাধের এক নতুন ও ভয়ংকর ধরন দেখে আতঙ্কিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এবার ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামক অদৃশ্য বিষ ব্যবহার করে অভিনব কায়দাজয় প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে দুই পাকিস্তানি যুবকের বিরুদ্ধে। কক্সবাজারের লিংকরোড এলাকার একটি দোকানে টাকার সাথে অজ্ঞান করার ওষুধ মিশিয়ে দোকানিকে অচেতন করে ক্যাশের পুরো টাকা লুটে নিয়েছে এই চক্রটি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি লিংকরোডের একটি ব‍্যস্ত দোকানে ক্রেতা সেজে প্রবেশ করে দুই যুবক। তাদের কথাবার্তা ও বেশভূষায় তারা পাকিস্তানি নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কেনাকাটা বা টাকা খুচরা করার অজুহাতে তারা দোকানির সাথে কথা বলতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই দুই যুবক কৌশলে তাদের কাছে থাকা টাকার নোটে বা রুমালে ‘স্কোপোলামিন’ (যা সাধারণ মানুষের কাছে ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নামে পরিচিত) জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে দোকানির মুখের সামনে ধরে বা তাকে স্পর্শ করতে দেয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দোকানি তার স্বাভাবিক হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং অনেকটা সম্মোহিত হয়ে পড়েন। এই সুযোগে প্রতারক চক্রটি ক্যাশ বাক্সে থাকা বড় অংকের টাকা নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রতারক চক্র যে রাসায়নিকটি ব্যবহার করছে তার নাম স্কোপোলামিন। এটি বাতাসের সংস্পর্শে এসে বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলে মানুষের মস্তিষ্ক সাময়িকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ভুক্তভোগী জেগে থাকলেও তার নিজস্ব বিচার-বিবেচনা থাকে না এবং অপরাধীর যেকোনো নির্দেশ পালন করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে জ্ঞান ফিরলে ভুক্তভোগীর আর কিছুই মনে থাকে না। এ ঘটনায় লিংকরোড ও এর আশেপাশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেছেন। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই দুই পাকিস্তানি যুবককে শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পর্যটন এলাকায় বিদেশি নাগরিকদের এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের অপরিচিত বা বিদেশি নাগরিকদের সাথে আর্থিক লেনদেনে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে টাকা বা কোনো কাগজ মুখের কাছে ধরলে বা সন্দেহজনক আচরণ করলে দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।