সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ডসহ পাঁচটি সেবা বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ে
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রি, ছেঁড়া নোট বদল, এ-চালান গ্রহণসহ সব ধরনের সরাসরি কাউন্টার সেবা আগামী ২০শে নভেম্বর থেকে আর পাওয়া যাবে না। কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্ধারিত তারিখের পর গ্রাহকদের কোনো ধরনের সেবা আর মতিঝিল অফিস থেকে দেওয়া হবে না। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যাতে নির্বিঘ্নে এসব সেবা দিতে পারে, তার জন্য তদারকি আরও কঠোর করা হবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সাধারণত জনগণের জন্য সরাসরি কাউন্টার সেবা পরিচালনা করে না। তাই সঞ্চয়পত্র বিক্রি, প্রাইজবন্ড সরবরাহ, নোট পরিবর্তন বা চালান-সংক্রান্ত কাজগুলো তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। গত ২২শে জুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর মতিঝিল অফিসের ক্যাশ বিভাগ পরিদর্শনে গিয়ে পুরো ব্যবস্থার আধুনিকায়নের নির্দেশ দেন। পরে গঠিত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গ্রাহকসেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এর আগে দুইজন সাবেক গভর্নর একই ধরনের উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রতি মতিঝিল অফিসে সার্ভার জালিয়াতির মাধ্যমে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাৎ এবং আরও ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা ধরা পড়ার ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনার পর থেকেই সেখানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক ছাড়াও সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র পাওয়া যায়। সব ব্যাংকেই প্রাইজবন্ড বিক্রি হয়, ছেঁড়া নোট বদল ও অটোমেটেড চালান সেবা দেওয়া হয়। তবুও আস্থা ও নিরাপত্তার কারণে বিপুলসংখ্যক গ্রাহক বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসেই ভিড় করতেন— যেখানে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির প্রায় ৩০ শতাংশ প্রক্রিয়াকরণ হতো। এগুলোর পাশাপাশি ধাতব মুদ্রা বিনিময়, স্মারক মুদ্রা বিক্রি ও অপ্রচলিত নোট-সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির মতো সেবাও আগে থেকেই বন্ধ করে দিয়েছে মতিঝিল অফিস। ধীরে ধীরে এসব সেবা অন্যান্য বিভাগীয় কার্যালয় থেকেও বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
