জুলাই আন্দোলনের মামলার ভয় দেখিয়ে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ: নেপথ্যে ভাইরাল তাহরিমা ও ভুয়া সাংবাদিক চক্র

২০ নভেম্বর, ২০২৫ | ১২:৫১ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

রাজধানীর গুলশানের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ব্লকমেইল করে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন সংঘটিত হত্যা মামলায় নাম জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এই বিপুল অংকের টাকা আদায় করা হয়। এই প্রতারক চক্রের মূল হোতা হিসেবে নাম এসেছে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিতর্কিত মুখ তাহরিমার। তার সঙ্গে এই অপকর্মে জড়িত ছিল কথিত কিছু মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গুলশানের ওই ব্যবসায়ীকে টার্গেট করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রটি প্রথমে ব্যবসায়ীর সঙ্গে সখ্যতা গড়ার চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে তাকে ব্লকমেইল করা শুরু করে। তারা হুমকি দেয় যে, গত বছর জুলাই আন্দোলনের সময় গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় যেসব হত্যা মামলা হয়েছে, সেসব মামলার এজাহারে ওই ব্যবসায়ীর নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। মামলার আসামি হয়ে হয়রানি ও সম্মানহানির ভয়ে ওই ব্যবসায়ী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চক্রটি বিষয়টি 'মীমাংসা' করে দেওয়ার নাম করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে ধাপে ধাপে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ওই চক্রের হাতে তুলে দেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। এই পুরো প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন তাহরিমা। তিনি গাজীপুর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও ভাইরাল ভিডিওর কারণে তিনি পরিচিত মুখ। অভিযোগ রয়েছে, নিজের 'ভাইরাল' পরিচিতি ও নারী হওয়ার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তিনি বিত্তবানদের ফাঁদে ফেলতেন। তাহরিমার সঙ্গে এই চাঁদাবাজিতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে কিছু নামসর্বস্ব ও কথিত মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক। তারা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে চাপ প্রয়োগ করত এবং মামলার ভুয়া নথিপত্র বা তথাকথিত 'সোর্স'-এর দোহাই দিয়ে ভীতি প্রদর্শন করত। ক্যামেরা ও বুম ব্যবহার করে তারা পরিস্থিতির বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করত বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এবং পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আইনের আশ্রয় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পুলিশ জানিয়েছে, জুলাই বিপ্লবের আবেগকে পুঁজি করে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনায় অভিযুক্ত তাহরিমা ও তার সহযোগী কথিত সাংবাদিকদের আটকের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার ও সচেতন মহল।