বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমারের মর্টার শেল, কেঁপে উঠল পুরো এলাকা

১৮ নভেম্বর, ২০২৫ | ১০:৩১ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বান্দরবানের ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একাধিক মর্টার শেল এসে পড়ায় এলাকাজুড়ে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে এই ঘটনায় বিকট বিস্ফোরণে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। সীমান্তসংলগ্ন গ্রামগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ ও ধোঁয়ায় মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটলে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রাণভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল গফুর বলেন, “দুপুরে হঠাৎ বিকট শব্দে মনে হলো ভূমিকম্প হচ্ছে। ঘরবাড়ি সব কেঁপে উঠেছিল। বাইরে বেরিয়ে দেখি ধোঁয়া। পরে বুঝতে পারি, সীমান্তের ওপার থেকে মর্টার শেল পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করি।” ঘটনার পরপরই স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে গ্রামবাসীকে নিরাপদ ও সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছেন। বান্দরবানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, “এলাকায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা গ্রামবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।” তবে এই মর্টার শেলগুলো মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে ভুলবশত এসে পড়েছে, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে ছোড়া হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বিস্ফোরণের প্রচণ্ড চাপে তিনটি ঘরের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে কয়েকটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রায়ই ওপার থেকে ছোড়া গুলি ও গোলা এপারের এলাকায় এসে পড়ছে। এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সীমান্তে সার্বক্ষণিক টহল ও নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।