লিবিয়ার উপকূলে ২৬ বাংলাদেশিসহ নৌকাডুবি, মৃত্যু ৪

১৭ নভেম্বর, ২০২৫ | ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

উত্তর আফ্রিকার একটি দেশ উত্তর-পশ্চিম লিবিয়ার উপকূলে ২৬ বাংলাদেশিকে বহনকারী একটি নৌকা ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একই উপকূলে পৃথক আরেকটি নৌকাডুবিতে অর্ধশতাধিক সুদানি যাত্রী বিপদের মুখে পড়লেও সেখান থেকে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। আল-খোমস উপকূলে দুটি নৌকা দুর্ঘটনা উত্তর-পশ্চিম লিবিয়ার আল-খোমস উপকূলে নৌকাডুবির এই দুটি ঘটনা ঘটে। প্রায় ১০০ জন যাত্রী বহনকারী দুটি অভিবাসী নৌকা উল্টে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট। তাদের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে আল-খোমস উপকূলের কাছে নৌকাগুলো ডুবে যায়। প্রথম নৌকাটিতে থাকা ২৬ বাংলাদেশির মধ্যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৬৯ অভিবাসী থাকা দ্বিতীয় নৌকা দ্বিতীয় নৌকাটিতে ছিলেন মোট ৬৯ জন যাত্রী। এর মধ্যে দুজন মিসরীয় এবং ৬৭ জন সুদানি নাগরিক, যার মধ্যে আটজন শিশু। এ নৌকাডুবিতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি, তবে যাত্রীরা তীব্র ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন। উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে জীবিতদের উদ্ধার করে এবং মৃতদেহগুলো তীরে এনে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে। লিবিয়া হলো অভিবাসীদের ঝুঁকিপূর্ণ রুট দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপে পৌঁছাতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে অবৈধ অভিবাসীদের অন্যতম প্রচলিত রুট হলো লিবিয়া। ২০১১ সালে নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি ইউরোপমুখী অভিবাসীদের প্রধান ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়। বর্তমানে লিবিয়ায় সাড়ে ৮ লাখেরও বেশি অভিবাসী অবস্থান করছে। গাদ্দাফির সময় আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মানুষ লিবিয়ায় কাজের সুযোগ পেলেও তার পতনের পর থেকে দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়াদের দখলদারিত্ব ও সংঘাতে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। নির্যাতন ও চাঁদাবাজিতে জর্জরিত অভিবাসীরা বিভিন্ন অধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘের সংস্থারা জানায়, লিবিয়ায় অভিবাসী ও শরণার্থীরা প্রায়ই নির্যাতন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির শিকার হয়। মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও নাজুক হয়ে উঠছে। ইইউ–সহায়তা ও বিতর্ক অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। তবে এই কোস্টগার্ডের সঙ্গে মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সম্পর্ক এবং অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠে আসছে। অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইউরোপীয় দেশগুলো সরকারি উদ্ধার অভিযান কমিয়ে দেওয়ায় সমুদ্রপথ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত দাতব্য সংস্থাগুলোও বিভিন্ন দেশের বাধা ও দমনমূলক পদক্ষেপের মুখে পড়ছে।