‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেওয়ার চুক্তির অধিকার ইউনূস সরকারের নেই’
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল ইজারা বা কনসেশন চুক্তির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে দেশবিরোধী এই চুক্তি করার অধিকার ইউনূস সরকারের নেই। সংস্থাটির মতে, অন্তর্র্বতী সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সম্পাদনের সাংবিধানিক অধিকার নেই, এবং বন্দরের মতো কৌশলগত সম্পদ নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্তে জনমত, সংসদীয় আলোচনা ও উন্মুক্ত তথ্য-প্রকাশ বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। ১৫ই নভেম্বর, শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। বিবৃতিটি পাঠান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী শফি উদ্দিন কবির আবিদ, নারীনেত্রী সীমা দত্ত ও চিকিৎসক হারুন উর রশীদ। বিবৃতিতে বলা হয়, লালদিয়া কন্টেইনার টার্মিনাল ও পানগাঁও টার্মিনালের ইজারা প্রক্রিয়া ছুটির দিনে সম্পন্ন করা হয়েছে, যা সন্দেহজনক তাড়াহুড়া নির্দেশ করে। কমিটির অভিযোগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবহারকারী, বিশেষজ্ঞ বা স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। একই ধরনের অস্বচ্ছতা নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়েও দেখা যাচ্ছে বলে দাবি সংগঠনটির। বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)-এর পরামর্শমূলক ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। কমিটির মতে, পূর্ববর্তী সরকার এবং বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার—উভয়ই আইএফসির পরামর্শে বন্দর টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সংগঠনটি জানিয়েছে বন্দরে ৪১ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও আইএফসির সুপারিশেই নেওয়া হয়েছে। তাদের দাবি, বিশ্বব্যাংক ও আইএফসির পরামর্শ অনেক দেশে জনস্বার্থবিরোধী ফল বয়ে এনেছে। উদাহরণ হিসেবে বলিভিয়া, ঘানা ও ফিলিপাইনে পানি–বেসরকারিকরণ ইস্যুর অভিজ্ঞতা উল্লেখ করা হয়। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি অভিযোগ করে যে, চট্টগ্রাম বন্দর সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে কমিশনভোগী গোষ্ঠীর প্রভাব রয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় স্বার্থবান্ধব নীতি প্রণয়নের বদলে চুক্তিকে ঘিরে একটি অস্বচ্ছ পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যা গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে অসঙ্গত। সংগঠনটি দাবি জানায়, বন্দরসহ কৌশলগত সম্পদ নিয়ে যেকোনো চুক্তির শর্ত প্রকাশ করতে হবে, ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সংসদে ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আইনশৃঙ্খলা, বিচারপ্রক্রিয়া ও নির্বাচনের স্বচ্ছতার দিকে অন্তর্র্বতী সরকারের মনোযোগ বাড়াতে হবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় বিষয়ে তড়িঘড়ি ও গোপনীয়তা জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
