ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করলেন বিচারক বাবা
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আব্দুর রহমানের ছেলে কিশোর তাওসিফ রহমান সুমন ধারালো অস্ত্রের (ছুরি) আঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছে। তার গলায় শ্বাসরোধের চিহ্নও পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার চিকিৎসক এসব তথ্য জানান। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গাজিউর রহমান জানান, খুনের ঘটনায় লিমনকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন তাওসিফের বাবা আব্দুর রহমান। দুপুরে তিনি মামলার এজাহারে সই করে ছেলের লাশ নিয়ে জামালপুরের গ্রামের বাড়িতে রওনা হন। পরে রাজপাড়া থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রক্তাক্ত ছুরিটি জানালা দিয়ে বাসার নিচে ফেলা হয়। পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে আসামি লিমনের চিকিৎসা চলছে। তার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ির মদনেরপাড়া ভবানীগঞ্জ গ্রামে। বিচারক আব্দুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসীর (৪৪) সঙ্গে তার পূর্বপরিচয় ছিল। লিমন টাকা দাবি করতেন অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়ে গত ৬ নভেম্বর সিলেটের জালালাবাদ থানায় জিডি করেন লুসী। গত ৩ নভেম্বর টাকা না পেয়ে লিমন হত্যার হুমকি দেন লুসীকে। বিচারক আব্দুর রহমান স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে নগরীর ডাবতলা এলাকায় থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাসায় ঢুকে লুসী ও তাওসিফকে ছুরিকাঘাত করেন লিমন। পরে হাসপাতালে নিলে তাওসিফকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। লুসী চিকিৎসাধীন আছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিন ও প্রভাষক শারমিন সোবহান কাবেরী। পরে ছেলের মরদেহ একনজর দেখেন আব্দুর রহমান। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। লুসীকেও ট্রলিতে করে দেখানো হয় ছেলের মুখ। ডা. কফিল জানান, তাওসিফের ডান উরু, ডান পা ও বাঁ বাহুতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পাওয়া গেছে। এ তিনটি জায়গায় রক্তনালি আছে। সেগুলো কেটে গিয়েছিল। তাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণও ছিল। শ্বাসরোধের কারণে গলায় কালশিরা দাগ। ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও শ্বাসরোধ করা হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে।
