খাসজমির দ্বন্দ্ব গড়াল সংঘর্ষে, আহত ৩৫

১৪ নভেম্বর, ২০২৫ | ১১:৩১ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইজারা নেওয়া খাসজমি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ৭ জন নারী। আহতদের মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরবাংলা গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো পক্ষ এ ঘটনায় মামলা করেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরবাংলার স্থানীয় কৃষকেরা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ২৩০ একর খাসজমি ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য ডিসিআর নেয়। আবার একই চরে চরবাংলা ভূমিহীন কৃষক সমবায় সমিতির নামে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে ১৮৪ একর ডিসিআর নেওয়া হয়। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল দুটি পক্ষের। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলাও চলছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় কৃষকদের দখলে থাকা জমি সমিতির লোকজন দখল করতে গেলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে ৩৫ জন আহত হন। আহত কৃষক জালাল তালুকদারের (৫৪) ভাষ্য, ইজারা নেওয়া জমিতে তারা চাষ করতে গেলে চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার বাধা দেন। গত ৮ নভেম্বর শনিবার গলাচিপার ইউএনও ও থানার ওসি উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে জমি ভাগাভাগি করে বিরোধ সমাধান করেন। ইউএনওর সিদ্ধান্তে তারা জমি কম পেলেও সংঘাত এড়াতে রাজি হন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই জমিতে চাষ ও ঘর তুলতে গেলে হামলা হয়। তারা বাধা দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বেধে যায়। আহত অপর কৃষক সাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘আমরা চরবাংলায় প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছি। ওই এলাকার খাসজমি একসা ডিসিআর নিয়ে ভাগ করে খাই। তিন মাস আগে উপজেলা ভূমি প্রশাসন তাদের ১৫৫ জন কৃষককে এই জমি একসনা ইজারা দেয়। কিন্তু চরবিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মতিন, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হাওলাদার তাদের জমিতে চাষ করতে দেননি।’ চরবাংলা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আনোয়ার হাওলাদারের দাবি, চরবাংলার খাসজমিতে তাদের ঘর ছিল। বৃহস্পতিবার ওই ঘর ভেঙে অন্যরা ঘর নির্মাণ করছিল। এ কারণে তারা নিষেধ করেন। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাসের ভাষ্য, ‘আমি দশমিনায় ছিলাম। হামলার পর ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পর্ক নাই।’ গলাচিপা থানার ওসি মো. আশাদুর রহমান বলেন, চরবাংলার একটি গ্রুপ খাসজমি চাষ করতে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে অনুমতি পেয়েছে। আরেকটি কৃষক গ্রুপ ভূমি অফিস থেকে ইজারা নিয়েছে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলছে। বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা হয়নি। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহামুদুল হাসান বলেন, বিরোধপূর্ণ বিষয়টি মীমাংসায় গত ৮ নভেম্বর/// শনিবার উভয়পক্ষকে নিয়ে বসেন। সেখানে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। এরপরও যারা সংঘর্ষে জড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।