পুঁজিবাজারে ফের বড় দরপতন, লেনদেন নেমেছে ৩০০ কোটির নিচে
টানা দরপতনের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। টানা সাত কার্যদিবস ধরে অধিকাংশ সিকিউরিটিজে দরপতনের পর মঙ্গলবার সামান্য উত্থান দেখা গেলেও, একদিন পরই আজ বুধবার বাজার আবার বড় পতনের মুখে পড়ে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এদিন যেসব শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে, তার চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি সিকিউরিটিজের দর কমেছে। এতে এক্সচেঞ্জটির সবগুলো মূল্যসূচক নিম্নমুখী হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮২৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে—যা গত ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। সেদিন সূচকটির অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৭৬৮ পয়েন্টে। একইসঙ্গে লেনদেনও সাড়ে চার মাস পর ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বুধবার ডিএসইতে মোট ৩৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ৩০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির। অর্থাৎ দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতন হওয়া সিকিউরিটিজের সংখ্যা ৫ দশমিক ৬৮ গুণ বেশি। দরপতন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৭২টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭১টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৫৮টি রয়েছে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ১১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬ পয়েন্টে নেমেছে। মঙ্গলবার সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ১৭ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে, যা মঙ্গলবার ছিল ১ হাজার ৯১৭ পয়েন্টে। লেনদেনেও বড় পতন দেখা গেছে। বুধবার ডিএসইতে মোট ২৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা কম। এটি গত ২৩ জুনের পর সর্বনিম্ন লেনদেন, সেদিন লেনদেন হয়েছিল ২৭৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে। এদিন মোট ১৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ১২০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির দর। অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতনের কারণে সিএসইর সার্বিক সূচক (সিএসপিআই) ১২০ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৬১৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সিএসসিএক্স সূচক ৬৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে। এছাড়া, সিএসই-৫০ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৮ পয়েন্টে, সিএসই-৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৩৩০ পয়েন্টে এবং সিএসআই সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ৮৬০ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। এদিন সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে মাত্র ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা আগের দিনের ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। সর্বোপরি, টানা দরপতন ও লেনদেনের ধারাবাহিক পতনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বলে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
