সরকার উৎখাতের ‘এলজিবিটি ষড়যন্ত্র

১৪ নভেম্বর, ২০২৫ | ৫:০৫ অপরাহ্ণ
ডেস্ক নিউজ , ডোনেট বাংলাদেশ

বাংলাদেশের এলজিবিটি (LGBT) কমিউনিটিকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ সরকার উৎখাতের এক দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন মানবাধিকার কর্মী ও ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’ এর পরিচালক সঞ্জীবনী সুধা। সম্প্রতি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক পোস্টে তিনি এই ষড়যন্ত্রে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস, দেশের কিছু বেসরকারি সংস্থা (এনজিও), গণমাধ্যম এবং অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠানের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। তার পোস্টে তিনি দাবি করেন, এই ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়েছিল তার সংগঠন ‘ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’-এর তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক তাসনুভা আনানকে গণমাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টার মাধ্যমে। সুধার অভিযোগ, তৎকালীন একজন মার্কিন পলিটিক্যাল অফিসারের প্রভাবে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তাসনুভা আনানকে সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেয় এবং তাকে ব্যবহার করে মার্কিন দূতাবাসের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাসনুভা আনান নিজের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ায় সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। পোস্টটিতে আরও অভিযোগ করা হয়, তাসনুভার প্রস্থানের পর ষড়যন্ত্রকারীরা হোচিমিন নামের এক ব্যক্তিকে কমিউনিটির নতুন মুখপাত্র হিসেবে বেছে নেয়। সুধার দাবি, হোচিমিন গণমাধ্যমে পরিচিতি পেতে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন এবং এতে তাকে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা বিশেষভাবে সহায়তা করে। তার কার্যক্রমের ফলে ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে সহানুভূতি কমে আসে এবং সমাজে বিভেদ তৈরি হয়। সঞ্জীবনী সুধা তার পোস্টে লেখেন, এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হোচিমিনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়া হয় এবং সরকারের কাছে একটি ‘ট্রান্স সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। সুধার মতে, তার সংগঠন যেখানে সব লিঙ্গের অন্তর্ভুক্তির জন্য সহজ একটি নীতির সুপারিশ করেছিল, সেখানে এই আইনটি ছিল ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি আরও দাবি করেন, এই কাজের পুরস্কার হিসেবে হোচিমিনকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের আইভিএলপি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। এই ষড়যন্ত্রে ‘বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানেরও ভূমিকা ছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি USAID-এর অর্থায়নে একই ধরনের আইনের জন্য কাজ করে, যা সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা ছিল। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠানটির একজন শিক্ষক এবং কিছু শিক্ষার্থী এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবই বিতর্ক এবং শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে বহিষ্কারের ঘটনাটিকে তিনি পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করেন। সুধার দাবি, এর বিনিময়ে ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। সঞ্জীবনী সুধা ব্যক্তিগতভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে মানসিক হয়রানি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য গোপনে ভিডিও ধারণ এবং পরবর্তীকালে চাকরিচ্যুত হওয়ার কথা জানান। পোস্টের শেষে তিনি মুনতাসির রহমান নামে আরেক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যাকে ফেসবুকের (মেটা) সঙ্গে এলজিবিটি কমিউনিটির লিয়াজোঁ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন, যা তার মতে ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। সঞ্জীবনী সুধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রশংসা করে বলেন, এই ষড়যন্ত্রের কারণে এলজিবিটি কমিউনিটির অর্জিত সমস্ত উন্নয়ন এখন ধ্বংসের মুখে। এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত সমস্ত তথ্য সঞ্জীবনী সুধার ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া হয়েছে। পোস্টে উল্লেখিত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।